দরজার খোলা অংশ দিয়ে নোভার ঝুলন্ত পা দুটো দেখা যাচ্ছে। সিলিং ফ্যানে তার ঝুলন্ত শরীরটা দেখতে ভয়ংকর লাগছিলো। নোভা আমার স্ত্রী । তার মৃত্যুতে আমার কান্না পাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু কান্না পাচ্ছে না। আমি ভাবছি নোভা কিভাবে খুন হল। ঘরে আমি ছাড়া কেউ নেই। মনে হচ্ছে খুনটা আমিই করেছি। কিন্তু কিভাবে খুনটা করেছি তা মনে করতে পারছিনা। গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দিয়েছি, এমনও হতে পারে। নাহ, ঠাণ্ডা মাথায় ভাবতে হবে কিভাবে খুনটা করেছি।
অবশ্য তাকে হত্যা করার পেছনে যৌক্তিক কারণ আছে। তার কয়েকটা বিষয় লক্ষ্য করছি। ইদানীং প্রায়ই রাত জেগে ফোনে কথা বলে। জিজ্ঞেস করলে বলে বান্ধবীর সাথে কথা বলছে। ঐ দিন আমি ঘুমের ভান করে শুয়েছিলাম। ও ভাবতেও পারেনি আমি তার কথোপকথন শুনতে পাবো। নাহ নোভাকে হত্যা করার পেছনে যৌক্তিক কারণ আছে, এটা ভেবে একটু শান্তি লাগছে।
অবশ্য এটা আত্মহত্যাও হতে পারে। নোভা একটু আবেগী ধরণের মেয়ে। কলেজে পড়ার সময় , সে তার মায়ের উপর রাগ করে একগাদা ঘুমের ঔষধ খেয়েছিল। আচ্ছা আমি কি এমন কিছু করেছি, যাতে সে আত্মহত্যা করবে। ঐ ঘটনাটা অবশ্য অনেকদিন আগের। এটা নিয়ে এখন সে আত্মহত্যা করার কথা না। ঠাণ্ডা মাথায় ভাবতে হবে।
মোবাইল বাজছে। মায়ের ফোন। মা কি এই ঘটনা জেনে গেছেন?
-কিরে খোকা, এখনো ঘুমাস নি?
-না মা, একটু পড়েই ঘুমোব।
-রাতের ট্যাবলেট টা খেয়েছিস?
-না , দাড়াও এক্ষুনি খেয়ে নিচ্ছি।
ট্যাবলেট খাওয়ার পর একটু ঘুম ঘুম লাগছে। হঠাৎ মনে হল , আরে আমি তো বিয়েই করিনি, নোভা আসবে কোত্থেকে। আমি দরজার খোলা অংশ দিয়ে পাশের রুমে তাকালাম। কিছুই নেই। দেয়াশ ঘেষে একটি মাকড়শা জাল বোনার চেষ্টা করছে।