সকালবেলা মক্তবের যে হুজুর ছোট্ট মেয়েটার স্পর্শকাতর স্থানে হাত রেখেছিলেন , যে মধ্যবয়সী লোকটি পাশের বাড়ির স্কুল পড়ুয়া মেয়ের দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকান, কিংবা যে গৃহিনী পরকীয়া প্রেমে মগ্ন তারাও তসলিমা নাসরিনের দেশে ফেরার কথা উঠলে চমকে উঠেন। গেল গেল রব তুলে চারদিকে শোরগোল তৈরী করে ফেলেন। ধর্ম রক্ষার নামে , দেশ রক্ষার নামে তারা ঝাপিয়ে পড়েন।
কেউ যখন স্বামী স্ত্রীর যৌন সম্পর্ক নিয়ে লিখেন তাহলে আমাদের মহান অনুভূতি আঘাতপ্রাপ্ত হয়। আমরা আবার গেল গেল রব তুলি। কিন্তু যখন লিখেন ইসলামের দৃষ্টিতে স্বামী স্ত্রীর যৌন সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত। আমরা বলি বেশ লিখেছেন , খাসা লিখেছেন। এখন সবকিছু স্যুগার কোটেড কুইনাইন এর মত ধর্ম কোটেড হতে হবে। ধর্ম কোডেড যৌনতাই এখানে গ্রহণযোগ্য।
দেশে ফেরার আশায় কিছুদিন পরপরই তসলিমা নাসরিন ছুটে যান বাংলাদেশী দূতাবাসে। কিন্তু প্রতিবারই তাঁকে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়। সরকার বদলায় , তিনি আশাবাদী হন। কিন্তু এদেশের সবাই সেই অন্ধকারের কাছেই এখনো মাথা নত করে রেখেছে।
তসলিমা নাসরিনের রেসিডেন্ট পারমিট বাতিল করেছে ভারত সরকার। এর বদলে তাঁকে দুই মাসের মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা দিয়েছে দেশটি। ফলে তার ভারতে অবস্থান
করাটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তসলিমা নাসরিনের মতে এই দুই মাসের ভিসাটা দেয়ার মানে হলো যে তুমি এখন তল্পিতল্পা গোটাও।
তসলিমা নাসরিন এখনোও দেশে ফেরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আবার এই বাংলায় ফিরে আসবেন তিনি, এই বাংলার বায়ুতে নিঃশ্বাস নিবেন এই আশা বুকের ভেতর লালন করেন তিনি। একদিন হয়তো এদেশের সরকার আর অন্ধকারের কাছে মাথা নত করবে না , তসলিমা নাসরিনকে আবার ফিরিয়ে আনবে এই বাংলার বুকে।