হিমু , এই হিমু । একজন মহিলা আমাকে ডাকছেন।
তিনি আমাকে ঘুম থেকে তোলার চেষ্টা করছেন। আমি না উঠে মটকা মেরে পড়ে আছি। যিনি এতক্ষণ ডাকছিলেন, তিনি আমার গায়ে হাত রাখলেন। এবার উঠতেই হয়।
চোখ খুলেই একটা ধাক্কা খেলাম। তক্ষকের মত চোখ নিয়ে একজন মহিলা আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। এই তক্ষক চোখের মহিলাকে কোথায় দেখেছি ,মনে করতে পারছি না। সবচেয়ে ভালো হত চোখ বন্ধ করে চিন্তা করতে পারলে। তিনি বোধহয় সেই সুযোগ দিবেন না।
-আমি তোর সুষমা মাসী। এখনো চিনতে পারিস নি?
-তোমাকে তো চেনার উপায় নেই।
-আমি যে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছি , সেটা শুনেছিস?
-শুনেছি। শুনলাম ঢাকায় আসবে। কিন্তু তুমি যে সুষমা মাসী বুঝতে পারিনি।
-সফর কেমন হলো?
-ভালো। কিন্তু তোদের এই নেতাগুলো চায় কি?
-তারা আসলে কি চায়, তা নিজেই জানেনা। মাসী তোমার পাগুলো দেখি।
-কেন?
-না, দেখি চেটে কি অবস্থা করেছে। আমাদের নেত্রীরা তো পা চাটায় উস্তাদ।
-আর বলিস না, দেশ নিয়ে কেউ কথা বলে না , সবাই চায় আমরা যাতে তাদের ক্ষমতায় যেতে সাহায্য করি।
-এমন লোভী নেতাদের জন্য তো তোমাদেরও সুবিধা হয়।
-তা ঠিক। একজন আজ সকালে একেবারে জামদানী নিয়ে উপস্থিত। আর একজন নিজে তো তেল দিয়েছে, আবার বোন আর মেয়েকে পাঠিয়েছে তেল দেয়ার জন্য।
-পত্রিকায় পড়লাম কি সব চুক্তি ফুক্তি নাকি হবে।
-এগুলো বলতে হয় আর কি।
-আর তোর এই অবস্থা কেন? যাওয়ার আগে ভেবেছিলাম তোর সাথে একটু দেখা করে যাই। কিন্তু এসে তোর যা অবস্থা দেখলাম।
-মাসী, আমি মহাপুরুষ হওয়ার চেষ্টা করছি।
-হতে পেরেছিস?
-এখনো পুরোপুরি হইনি।
-শোন , আমাকে উঠতে হবে। একবার ইন্ডিয়া যাবি তো?
-যাব।
-যাওয়ার আগে মহাপুরুষ হিমু , আমাকে একটা উপদেশ দে তো ।
-জীবনের দুটি অর্থ আছে। তুমি কোনটি বুঝবে, সেটা তোমার বিষয়।
-আসি তাহলে, ইন্ডিয়া যাওয়ার আগে আমাকে জানাবি কিন্তু।
-জানাবো।