গত কয়েকদিনের কয়েকটি ঘটনা,
১. প্রকাশ্যে ধূমপান করার পর মন্ত্রীর ক্ষমা প্রার্থণা।
২. 'গুন্ডে' ছবির প্রদর্শণ বন্ধের জন্য আন্দোলন।
৩. ক্রিকেটে দ্বিস্তর বিশিষ্ট পদ্ধতিতে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সমর্থণের পর এর বিরুদ্ধে আন্দোলন।
৪. ইসলামী ব্যাংকের কাছ থেকে লাখো কন্ঠে জাতীয় সংগীতের জন্য টাকা নেওয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন।
৫. ক্রিকেট মাঠে বাংলাদেশী দ্বারা অন্য দেশের পতাকা উড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য আন্দোলন।
উপরে যেগুলো বললাম, এছাড়াও আরো অনেক কিছু হয়েছে, শুধুমাত্র অনলাইনে তীব্র প্রতিবাদের কারণে। প্রতিটা ক্ষেত্রেই অন্যায়কারীরা হার মেনেছে অনলাইনের প্রতিবাদকারীরদের কাছে। এখন আর রাস্তায় দাড়িয়ে মানববন্ধন, অনশন ধর্মঘট আর ভাংচুরের দিন নেই। প্রতিবাদের ভাষা এখন পাল্টে গেছে। এখন রাজপথের পরিবর্তে প্রতিবাদের ঝড় উঠে ফেইসবুক আর ব্লগে। আর সে ঝড়ে বড় বড় রথী মহারথীদেরও মাথা নত করতে হয়।
প্রচলিত ধারায় মানে রাজপথে গলা কাঁপানো প্রতিবাদকারীরা অবশ্য অনলাইনের এই প্রতিবাদকে বাকা চোখেই দেখেন। অনেকে বলেই ফেলেন, 'অনলাইনে চীৎকার করেই শেষ, রাজপথে নামুন, দেখুন আন্দোলন কি জিনিস।' তাদের চোখে অনলাইনে প্রতিবাদকারীরা ঢাল তলোয়ারবিহীন নিধিরাম সর্দার। কিন্তু এই নিধিরাম সর্দারেরাই কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করছে অনেক আন্দোলনকে।
অনলাইন আন্দোলনের একটি সুবিধা হল, এখান কোন নেতার প্রয়োজণ নেই। ফলে নেতৃত্ব নিয়ে টানাহেচড়াও নেই। আমরা সবাই রাজা পদ্ধতিতে এখানে সবাই তাঁর প্রতিবাদের ভাষাটাকে খুঁজে নিতে পারছে। তারপরও কিছু ত্রুটি থেকে যায়। ফেইসবুক, ব্লগেও কিছু লোক নেতা হওয়ার হাস্যকর চেষ্টা করছে। এরা এটা করতে গিয়ে নিজেকেই হাস্যকর বানাচ্ছে।
ফেইসবুকে প্রতিবাদ স্বাধীনভাবে করা গেলেও, ব্লগে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়ে গেছে। কোন এক বিচিত্র কারণে ব্লগগুলো ঝামেলাপূর্ণ পোস্টের চেয়ে ভ্রমণ আর রান্নাবান্না বিষয়ক পোস্টগুলোকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছে। স্টিকি পোস্ট কিংবা নির্বাচিত ব্লগের ক্ষেত্রে তাঁরা ঝামেলাহীন পোস্টকেই প্রাধাণ্য দিচ্ছে। এতবড় শাহবাগ আন্দোলনে যে ব্লগগুলো গড়ে তুলছিল, এখন তাঁদের নিরাপদ রাস্তায় হাটার নীতি সত্যি দুঃখজনক।