গত শতাব্দী থেকেই মানুষ মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর তোড়জোড় করছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এই ঘটনা কবে ঘটবে সেই সম্বন্ধে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। কালক্ষেপন হতে হতে নাসা এখন পরিকল্পনা করছে ২০৩৫ সাল নাগাদ মঙ্গলে মানুষ প্রেরণের। মঙ্গলে মানুষ প্রেরণের সবচেয়ে বড় বাধা আসলে কোথায়? উত্তর হচ্ছে জ্বালানী। রকেট যখন উৎক্ষেপন করা হয় তখন সাথে করে এর বিপুল ভরের জ্বালানীও বহন করতে হয়। যা আবার একই সাথে জ্বালানীর চাহিদাও বিপুল পরিমানে বাড়িয়ে দেয়। মঙ্গলে মানুষ পাঠাতে হলে তাকে ফিরিয়েও আনতে হবে এবং ফেরত আসার জ্বালানীটুকু বহন করে নিয়ে যেতে হবে, কিংবা মঙ্গলের বুকে উৎপাদন করতে হবে। এই আনা-নেওয়ার কিংবা উৎপাদনের সহজসাধ্য প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হচ্ছে না বলেই মূলতঃ মঙ্গলে মানুষ পাঠাতে দেরী হচ্ছে।
তবে সম্প্রতি এক বিষ্ময়কর প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে এবং তা নিয়ে বিজ্ঞানীমহল ধোঁয়াসায় রয়েছেন। এই প্রযুক্তির নাম EmDrive বা Electromagnetic propulsion drive। এই প্রযুক্তিতে কোনো ধরনের জ্বালানী ছাড়াই বিদ্যুতের মাধ্যমে ধাক্বা সৃষ্টি করা যায় যার সুবিধা বহুবিধ। প্রথমতঃ যেহেতু জ্বালানীবহন করতে হয় না তাই এটি যথেষ্ট পরিমানে হালকাভাবে তৈরি করা যায় এবং শক্তিখরচ কমে আসে। দ্বিতীয়তঃ এটির মাধ্যমে বিপুল পরিমান গতি তৈরি করা যায় যার ফলে মাত্র ৭০ দিনের মধ্যে মঙ্গলে পৌঁছানো যেতে পারে।
২০০৩ তিন সালে রজার শয়ার (Roger Shawyer) যখন প্রথমবারের মতো এর প্রদর্শন করেন তখন বিজ্ঞানীমহলে হাস্যরসের সৃষ্টি হয় এবং শয়ারকে বিদ্রুপ করা হয়। কারণ, আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় এটি ভরবেগের সংরক্ষণসূত্র ভঙ্গ করছে। ভরবেগের-সংরক্ষণসূত্রগুলো বিজ্ঞানের সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন সূত্রগুলোর একটি। যখন কোনো পরীক্ষায় ভরবেগের বা অন্যধরনের সুপ্রতিষ্ঠিত সংরক্ষণ সূত্রগুলো লঙ্ঘিত হতে দেখা যায় তখন স্বাভাবিকভাবেই ধরে নেওয়া হয় যে সেখানো কোনোধরনের ভুল হয়েছে। তাই শয়ারের পরীক্ষাটিকে সবাই ভুল হিসেবেই ধরে নিয়েছিলেন। এটি নিয়ে শয়্যারকে প্রচুর সমালোচনার মুখোমুখিও হতে হয়েছে।
প্রতিদিন বিজ্ঞান বিষয়ক হালনাগাদ খবর পেতে বিজ্ঞান পত্রিকা পড়ুন।
www.bigganpotrika.com
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৩:২৫