ব্লাড ব্যাগ থেকে তাজা রক্ত রাস্তার উপর ছিটাচ্ছে আর চিৎকার করে বিলাপ করছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে এক লোক। ৪০উর্ধ্ব লোকটির ক্লান্ত- পরিশ্রান্ত, এবং বিমর্ষ চেহারাটা দেখলে যে কারো হৃদয় কুঁকড়ে যাবে। ময়লার আদ্রতা, কাছা রক্ত আর চোখের পানিতে একাকার গায়ের জামাটির দিকে তাকিয়ে দেখা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।
ঢাকা ময়মনসিংহ রোড়ে দ্রুত গতির একটি ট্রাক তাঁর মেয়েকে চাপা দিয়ে চলে যায় ঘন্টা তিনেক আগে। গুরতর জখম হওয়া মেয়েকে জিবিত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে আনতে পারলেও ডাঃ বলেছে, অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরনে কিছুক্ষন আগে মেয়ে তার পরপারে চলে গেছে। লোকটির বিশ্বাস আরেকটু আগে রক্তগুলো আনতে পারলে হয়তো মেয়েকে বাঁচানো যেতো। তাই রক্তের উপর ক্ষোভ ঝাড়ছেন আর বিলাপ করছেন।
সঠিক সময়ে রক্ত পাওয়ার অভাবে মেয়েটি যদি সত্যিই মারা যেয়ে থাকে, এরথেকে বেদনার্ত এবং মর্মদহ বিষয় আর কি হতে পারে। একটা সময় ছিলো যখন রক্ত দেয়াটাকে মানুষ অনেক ব্যপার স্যাপার মনে করতো। যা নিতান্তই অজ্ঞতা ছিলো বৈকি। শিক্ষার অগ্রগতির পাশাপাশি, নতুন প্রজন্ম এখন চিন্তা চেতনায় এবং মানবিকতার বিষয়ে অনেক উন্নত মননে এগিয়ে চলছে। স্বাভাবিক সুস্থ শরীরে যারা এখনো রক্ত দেয়ার বিষয়ে সেকেলে ধ্যান ধারনা পোষন করেন, হয়তো তাদের দরজায়ই মেয়েটির বাপের কড়া নাড়তে হয়েছিলো।
প্রতি তিন মাস অন্তর রক্ত দিতে পারেন যে কোন সুস্থ মানুষ। আর যেন এমন দৃশ্য অথবা গল্প আমাদের দেখতে বা শুনতে না হয়, এ জন্য দরকার যথাসাধ্য গনসচেতনা বৃদ্ধি করা সর্বত্র।