এ যেন চলচ্চিত্রের কোন দৃশ্য! চেয়ার থেকে উঠে মন্ত্রী মহোদয় তেড়ে গেলেন প্রতিপক্ষ দলের নেতার দিকে। বললেন, তোমার চোখ তুলে ফেলবো! তুমি আমাকে চেনো না? হারামজাদা কোথাকার! তোমাকে আজ জুতাপেটা করবো। অকস্মাৎ এই ঘটনায় অনুষ্ঠানের অন্য সব অতিথি-আলোচকরা কিংকর্তব্যবিমূঢ়। হতভম্ব হয়ে তারা তাকিয়ে তাকিয়ে কেবল দেখছিলেন শ্বাসরুদ্ধকর সেই দৃশ্য।
অবিশ্বাস্য এই ঘটনা ঘটেছে গত সোমবার মধ্যরাতে বেসরকারি টেলিভিশন আরটিভি আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায়।
এতে অতিথি হিসেবে অংশ নেন নৌপরিবহনমন্ত্রী মো. শাহজাহান খান, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মো. ইসরাফিল আলম, আওয়ামী লীগের আরেক এমপি গোলাম মওলা রনি, বিএনপি দলীয় এমপি রাশেদা বেগম হিরা, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সভাপতি চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, জাতীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, র্যাবের পরিচালক কমান্ডার এম সোহায়েল, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা স্থপতি ইকবাল হাবিব, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনির হায়দার, সাংবাদিক জাকারিয়া কাজল এবং প্রবাসী সাংবাদিক নিশাদ দস্তগীর। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন ঢাবি শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস।
রাত সোয়া ১১টা থেকে আরটিভিতে সরাসরি সমপ্রচার শুরু হওয়ার পর যত দূর দেখা গেছে- আলোচনার এক পর্যায়ে বক্তব্য শুরু করেন নৌপরিবহনমন্ত্রী মো. শাহজাহান খান। তিনি নৌপথের উন্নয়নে তার সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বয়ান দেন। বিশেষত, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায় নতুন নতুন জাহাজ ক্রয়, ড্রেজার ক্রয় ইত্যাদির বিবরণ তুলে ধরেন তিনি। একপর্যায়ে তিনি বলেন, বিগত জোট সরকারের আমলে নৌপরিবহন খাতের কোন উন্নয়ন হয়নি। তখন কেবল চাঁদাবাজি আর দুর্নীতি হয়েছে এই খাতে। মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় টার্মিনালে চাঁদাবাজি করেছে। তার এই বক্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানিয়ে এ সময় বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, আমাদের সময় দুর্নীতি আর চাঁদাবাজি হয়েছে, এখন কি এসব বন্ধ হয়ে গেছে? সে সময় বেশি চাঁদাবাজি হয়েছে, নাকি এখন বেশি হচ্ছে- সেই হিসাব দেন। এখন তো লোকজন আপনাদের চোর বলছে। এ সময় শাহজাহান খান কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বলেন, আপনি চুপ করুন। আমার বলা শেষ হলে আপনি বলবেন। জবাবে রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, এই অনুষ্ঠানে আমাকে দাওয়াত দেয়ার সময় বলা হয়েছিল যে, কোন রকম আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেয়া হবে না। কিন্তু এখন দেখছি শুধু আমাদের আমলের বদনাম করা হচ্ছে। এ পর্যায়ে উপস্থাপক বলেন, জনাব রফিকুল ইসলাম মিয়া আপনাকে বলার সুযোগ দেয়া হবে, আপনি তখন বলবেন। কিন্তু তাতে কর্ণপাত না করে তিনি শাহজাহান খানের কথার পিঠে কথা বলে যাচ্ছিলেন। আর এতেই প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন নৌপরিবহনমন্ত্রী। আপনি থেকে হঠাৎ তুমি সম্বোধন শুরু করেন তিনি