পুবলিয়াস ওভিডাস নাসো(ওভিড)
জন্মস্থানঃসুমিলো,রোম
সময়কালঃখ্রীষ্টপূর্ব ৪৩-১৭/১৮ খৃষ্টাব্দ
লেখাঃমেটামরফেসিস,আমোরেস আরও অন্যান্য
(৩)
ডাইনোসু সাধারণতঃ হৈহুল্লোড়,আনন্দের দেবতা হিসাবে পরিচিত (রোমানরা যাকে ডাকে বাকুস বলে)আরিয়াডানের রুপে মুগ্ধ হয়ে তার স্বামী থিসিয়াসকে বললো,সে যেন আরিয়াডানেকে নাক্সোসের সমুদ্রধারে যেন রেখে যায়।দেবতার আদেশ,সেটা মেনে নেওয়া ছাড়া মানুষের করার কিইবা আছে,থিসিয়াস আরিয়াডানেকে রেখে গেল সমুদ্রের ধারে,দেবতার উৎসর্গ হিসাবে।আরিয়াডানে রাগে দুঃখে সমুদ্র ধারে ছড়ানো দেবতাদের মূর্তির পাশে বুক চাপড়ে কেঁদে কেঁদে থিসিয়াসকে অভিশাপ দিছিল, ‘অমানুষ,দানব,দেবতারা তোমাকে শাস্তি দিবে।এ আরিয়াডানে।
একসময় আরিয়াডানের কানে ভেসে আসলো ঢাকঢোল,হৈচৈ,করতালের ঘন্টার শব্দ,একটা শোভাযাত্রা ছুটে আসছে,দেবতা ডাইনোসুসের আসার গুণগানের সাথে নাচ গান করতে করতে সবাই ছুটে যাচ্ছিল বালুর চর দিয়ে।মোটাসোটা,মাতাল সাইলেনাসও নাটকের একটা চরিত্রের অভিনয় করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছিল,
(ডাইনোসাসের পালক পিতা,হেরমিসের অনুরোধে যাকে সে লালন পালন করে),যাচ্ছিল মেয়েদের দলের পেছনে পেছনে,মেয়েরা ছলনার হাসিমুখে ঘুরে বেড়াচ্ছিল তার চারপাশে,বাতাস ভঁরা ছিল নাটক,হাসি আনন্দের ফোয়ারায়।
একেবারে শেষে ছিল চিতাবাঘের টানা সুন্দর,দামী একটা রথ,রথ চালাচ্ছিল আর কেউ না স্বয়ং দেবতা বাকুস(ডাইনোসুস)।আরিয়াডানে ভঁয়ে পালানোর চেষ্টা করলো,তবে কোন শক্তি ছিল না তার পায়ে,পড়ে যাচ্ছিল বারে বারে।‘ভয় পেও না,ক্রীটের রাজা মিনোসের মেয়ে আরিয়াডানে’,বাকুস বললো, ‘আমি ভালবাসি তোমাকে,প্রচন্ড ভালবাসি,আর আমার ভালবাসা থিসিয়াসের মত ঠুনকো না,তুমি আমার বৌ হবে,তুমি স্বর্গে থাকবে আমার পাশে।তুমি হবে আকাশের নতুন একটা নক্ষত্র যা আগামীতে সমুদ্রের নাবিকদের সাহায্য করবে দিকদর্শনে,তোমার নাম অক্ষয় হয়ে থাকবে মানুষের কাছে’।
আরিয়াডানে ভঁয়ে জ্ঞান হারালো,আর বাকুস বাঘটানা রথ থেকে লাফ দিয়ে জ্ঞান হারানো আরিয়াডানেকে কোলে তুলে চলে গেল,হয়তো বা স্বর্গের দিকে,নাকি অন্য কোথায় কে জানে।এটা দেবতাদের পক্ষেই সম্ভব,
নিজেদের ইচ্ছেমত তারা সবকিছুই করতে পারে,আর আমরা তো নগণ্য মানুষ শুধু দেখে যাই আর গুন গেয়ে যাই তাদের।পরীরা অবশ্য চীৎকার করছিল,যদিও কোন লাভ হয়নি তবুও বলে যাচ্ছিল তারা, ‘অত্যাচার’,
অন্যায়,কেন এ ভাবে জোর করা হবে’,তবে কি যায় আসে,বাকুস তো তখন বিছানায় আরিডিয়ানাকে নিয়ে শরীর খেলায় মত্ত।
যদি কোন বিরাট অনুষ্ঠানে আমন্ত্রন পাও,আর পাশে বসা সুন্দরী মেয়েটা যদি তোমার সাথে গল্প গুজবে মত্ত হয়ে যায়,চুপিচাপি রাতের দেবতাদের কাছে প্রার্থনা করবে তাদের আর্শীবাদের জন্যে,তবে খেয়াল রাখবে মদের নেশায় হারিয়ে না যাও যেন।যদিও নেশায় অনেক কথাই সহজে বলা যায়,তুলে ধরা যায় মনের গভীরের ছবিটা।মদের কটা ফোঁটায় অজান্তেই আঁকা যায় এলোমেলো ছবিটা,ঐ গল্পে উপলদ্ধি করতে পারে মেয়েরা না বলা ভালবাসার কথা।আর হ্যা,চেষ্টা করবে চোখেও তুলে ধরতে মনের কথাটা তোমার,এটা তো জানাই চোখের ভাষা তো মনকে দোলায় আরও বেশী।
পচ্ছন্দের সুন্দরীকে মদের গ্লাশে চুমুক দিতে দেখলে,গ্লাশটা টেনে একই জায়গায় চু্মুক দিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবে ঐ গ্লাস থেকে,বুঝতে পারে যেন সে তার ঠোঁটের স্বাদ যে কত কাম্য তোমার কাছে।টেবিলের খাবারের বাসন থেকে যখন মেয়েটা খাবার তুলবে,একই খাবার তোলার ভান করে ইচ্ছা অনিচ্ছায় ছুঁয়ে যাবে তাকে।
আর হ্যা,তার যদি স্বামী থাকে আশেপাশে,ভদ্র,নম্র হয়ে কথা বলো,তোমারই তো লাভ যদি বন্ধুত্বের সর্ম্পকটা হয় কোনভাবে।
মদটা বেশী গিলে ফেল না,তা হলে নেশায় হারাবে নিজেকে আর ফস্কে যাবে কামনার শিকার।তা ছাড়া বেশী মদ সহজেই ঝগড়াটে করে মানুষকে আর তোমার অজান্তেই অযথাই তর্কে জড়াবে তখন।নামকরা তীরন্দাজ,যোদ্ধা,সেন্টোর ইউরোটিয়নের সৎ ভাই পৃথিয়সের বিয়ের অনুষ্টানে এতই মাতাল হলো,সে ভুলে গেল তার অবস্থান আর কনেকে যখন জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল,থিভসের যুদ্ধের তার সহযোদ্ধা আটালান্টার ছেলে পার্থেনোপায়েসের হাতে ঐ বিয়েতে নিহত হয়,ইউরোটিয়ন।ভুলে যাবে না,মাতলামির ঐ দুঃখের কাহিনী,আরও অনেক ঘটনা টেনে আনা যায়,তবে থাক।
যদি ভাল গান গাইতে জান,সেটা জাহির করতে দোষ কোথায়,পায়ে ছন্দ থাকলে নাচতে অসুবিধা কোথায়,যা বলতে চাচ্ছি,স্বর্গ মর্ত,আকাশ পাতাল কোনকিছুই ছাড়বে না,প্রেমিকার মন জয় করার জন্যে।মাতালামি যেমন একটা বির্কষনের পরিবেশ আনে,ঠিক একই ভাবে অনেকসময় একটা খোলামেলা পরিবেশও তৈরী করে।
মাতালের ভান করে জড়ানো সুরে মনের কথা বলার সুন্দর একটা সূযোগও করে নিতে পার।তবে এমনভাবে কথা বলবে,কথায় আপত্তিকর দু একটা কথা যেন থাকে,মাতাল ভেবে কেউ কিছু মনে করবে না।তোমার মানসী,তার স্বামীরও সুস্থ স্বাস্থ্য কামনা করে মদের গ্লাশটা তুলে নিতে ভুলবে না,কিন্ত।খাবার টেবিল থেকে সবাই উঠে গেলে,এক ফাঁকে কোন এক অজুহাতে চলে যাবে মনের মানুষটার কাছে।
যদি কোনভাবে পৌঁছাতে পার মানসীর মনের কাছাকাছি,নম্রতা,ভদ্রতার আবরণ,ছুঁড়ে ফেলবে-ভাগ্য আর প্রেমের দেবী ভেনাস সহায় হবে তোমার।এর পরে কি করবে সেটা তোমার নিজের কাছে,এ ব্যাপারে আর উপদেশ দেয়ার মত কিছু নাই।যা মনে আসে সেটাই বলো,দেখবে কথা মুখে আসবে আপনাতেই।তুমি দূরন্ত এক প্রেমিক যার কামনার স্রোতে ভেসে যাবে সব কিছু,পাহাড় পর্বতেও আটকাবে না তোমার আকাঙ্খার স্রোত।বলো প্রেমিকাকে,অপেক্ষা করে ছিলে শুধু তার জন্যেই,অপেক্ষা ছিল ভালবাসার বিশেষ মানুষটার খোঁজে।চিন্তা করো না,অবাক হওয়ার কিছু নেই,কথাগুলো বিশ্বাস করবে সে।সব মেয়েই নিজেকে সুন্দরী মনে করে।তা ছাড়া সবচেয়ে সাধারণ মেয়েটাও ব্যাক্তিত্ব,বিচক্ষনতায় নিঃসন্দেহে অনেকের কামণার পাত্র হয়ে দাঁড়ায়।এমনটা তো অনেক সময় হ্য়ই,প্রেমের ভান করতে করতে অনেকে সত্যি সত্যি প্রেমের ফাঁদে ধরা পড়ে যায়।শিষ্যরা সংযত হও,প্রেমিকার অনেক ভড়ং ঢং মিথ্যা জানলেও সত্যি বলে মেনে নিতে দ্বিধা করো না,একসময় সে হয়তো ঠিকই ভালবাসার গভীরতা খুঁজে পাবে।
ছলনা,চাটুকারিতায় যে কোন মনই জয় করা সম্ভব,নদীর স্রোত যেমন ছুঁয়ে যায় ঢালু পাহাড়ে।প্রেমিকার সৌন্দর্যের প্রশংসা করো,প্রশংসা করো তার চুলের,প্রশংসা করো তার নিতম্বের,বলবে তার মত সুন্দরী মেয়ে কোনদিন চোখে পড়েনি তোমার।অত কঠোর হতে পারে না কোন মেয়ে,অত বোকা বা অবুঝ হতে পারে না, যে নিজের সৌন্দর্যের প্রশংসায় বিগলিত হবে না।আইডা পাহাড়ে প্যারিসের বিচারে বিশ্বব্রক্ষান্ডের সুন্দরীর বিচারে,মির্নাভা আর জুনোর হেরে লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়ার কথা কে না জানে।রথের দৌড়ে ঘোড়াগুলো গর্বে তাদের কেশর দেখাতে চায়।এমন ভাবে মানসীর প্রশংসা করবে যেন সংশয় না থেকে তোমার ভাষায়,আর সাজাবে আগামী দিনের স্বপ্ন,কে না ভালবাসে স্বপ্নের আকাশ।এমন কি সব দেবতাদের নামে শপথ করে বলতেও দ্বিধা করো না,ভয় নেই,দেবতাদের রাজা জুস প্রেমিকের ছলনাকে হাসিমুখে ক্ষমা করা দেয়।জুস হয়তো বায়ুদেবতা এয়োলেসকেও কিছুক্ষন খেলার জন্যে ছেড়ে দিতে পারে তোমার হাতে,তবে তার চেয়ে বেশী কিছু আশা করো না।জুপিটার তার স্ত্রী শনির মেয়ে জুনোকে,সব সময় প্রতিজ্ঞা করতো বিশ্বশ্বতার,কিন্ত ওগুলো ছিল শুধুই কথার কথা,ঐ প্রতিশ্রুতি রাখা সম্ভব হয়নি তার পক্ষে।জুপিটারের উদহারণ নিঃসন্দেহে তোমার মনে শক্তি জোগাবে।
এটা আমাদের জন্যেই ভাল দেবতারা আছে আর আমরা তাদের দৃষ্টান্ত অনুকরণ করতে পারি।দেবতাদের মন্দির পুজোর অর্ঘে ভঁরা থাকা উচিত,কেন না দেবতারা আছে সব জায়গায়।ধর্মের নিয়ম কানুন ঠিকমত পালন করবে,চুরি চামারি ছলনা থেকে দূরে থাকবে।ছলনা করতে পার মেয়েদের সাথে,তবে অন্য যে কোন ব্যাপারে তোমার কথাই,তোমার প্রতিশ্রুতি।ছলনাময়ীদের সাথে ছলনা করতে কোন দোষ নেই,মেয়েদেরকে তাদের নিজেদের জাল,ফাঁদে ফেলতে দোষ কোথায়?
মিসরের খরা ছিল প্রায় নয়টা বছর,সে সময় মিশরের রাজা বুসাইরাসকে একজন জোতিষী থ্রাসাইস এসে বললো, ‘কোন সন্দেহ নাই,জুপিটারের পুজার বেদীতে যদি কোন বিদেশীকে বলি দেয়া হয়,সেই রক্তে সন্তষ্ট হয়ে বৃষ্টি হবে দেবতার আর্শীবাদে’।রাজা বুসাইরিস মন্তব্য করলো, ‘ঠিক আছে জোতিষী,তুমিই হবে জুপিটারের অর্ঘ,সারা মিশর চিরকাল তোমার কাছে ঋনী হয়ে থাকবে’।হেরাকেলেসকেও বন্দী করে বলি দিতে গিয়ে সক্ষম হয়নি রাজা বুসাইরাস,হেরাকেলেস মুক্ত হয়ে বুসাইরাস আর তার ছেলে এমফিডিমাসকে হত্যা করে।অত্যাচারী রাজা ফালারাইস পেরিলিয়াসকে,পেরিলিয়াসের নিজের তৈরী করা পেতলের অত্যাচারের যন্ত্রের ষাঁড়ে পুড়িয়ে মারে।এ দুটো শাস্তিই যথাযুক্ত,দুজনই মারা যায় তাদের নিজেদের অত্যাচারের পদ্ধতিতে।মেয়েরা যে ভাবে ছলনার জাল তৈরী করে,তাতে তাদের ছলনার শিকার করলে দোষ কথায়।
কান্না,চোখের জলের কথা বাদ দিলে ভুল হবে,ওটাতো একটা বিরাট অস্ত্র যে কোন সময়।যদি ঝগড়া হয়,কান্নায় তুলে ধরবে মনের দুঃখ।হয়তো কোন জল থাকবে না চোখে তোমার,চাইলেই তো আর চোখ ভেসে যায় না দুঃখের জলে।দরকার হলে চোখে আঙ্গুল দিয়েও কাঁদতে পার।চুমুর প্রাধান্যটা ভুলে গেলে চলবে না,হয়তো তোমার মানসী নরম হয়ে বাঁধা দিবে বারবার চুমু দিয়ে,তবে ক্ষান্ত দিও না তুমি।
সেও হয়তো কেঁদে উঠবে,ধস্তাধস্তিও করতে পারে,কিন্ত তোমার কামনা ক্ষান্ত হবে না অন্য কোন ভাবে।জোর করে তাকে আহত করো না,যতটুকু সম্ভব যুক্তিযুক্ত ভাবে।এটাতো জানই চুমু খেতে পারলে,পরের অধ্যায়গুলো সহজেই আসবে এক এক করে,তা যদি না হয় তাহলে বুঝতে হবে সেটা তোমারই অক্ষমতা।মনে রাখবে অনেক মেয়েই আছে যারা একটু জোর করা,ধস্তাধস্তি পচ্ছন্দ করে।অনেকে চায় একটু অত্যাচারিত হতে,চায় ডাকাতের মত ছিনিয়ে নিয়ে যাক কেউ তাদের সব কিছু।ধস্তাধস্তির পর যদি সবকিছু ঘটে,দেখতে পাবে প্রেমিকার চোখে তৃপ্তির আনন্দে ধবধব করে জ্বলে ওঠা আগুন।টাইনাড্রিডের দুই বক্সার ভাই,কাষ্টোর আর পোলোক্স-ফিবি আর হিলাইরা দুই বোনের রুপে মুগ্ধ হয়ে হরণ করে,তাদের ধর্ষন করে,তবে অবাক কাণ্ড এটাই যে দুই বোনই ঐ দুইজনের প্রেমে পড়ে বিয়ে করে।
হয়তো এটা একটা কাহিনী যদিও,তবু মনে হয় এটা বলা দরকার,আকিলিস আর স্কাইরোসের রাজার দাসীর কথা। আইডা পাহাড়ে ভেনাস প্যারিসের বিচারে ইহলোক দেবলোকের সবচেয়ে সুন্দরী হিসাবে নির্ধারিত হওয়ার পর প্যারিসকে কথামত পুরষ্কৃত করলো ভেনাস।ইলিয়ানের দেয়ালে তখন রাজা প্রিয়ামের নতুন কন্যা বৌ এর আগমন,সুন্দরী হেলেনের।আর হেলেন অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার জন্যে গ্রীকরা ট্রয়ের লোকজনকে শাস্তি দেয়ার জন্যে প্রস্ততি নিচ্ছে।আয়েজিনার রাজা বিচার দেবতা আয়েকাসের উত্তরপুরুষ আকিলিস,তখন দাসীর ছদ্মবেশে ট্রয়ের প্রাসাদে স্কাইরোসের দাসী হিসেবে।এটা কি বীর আকিলিসের কাজ!বেতের ঝুড়ি নিয়ে দাসীর কাজের ব্যস্ততা কি তাকে মানায়।ঢাল তলোয়ার বল্লম নিয়ে যে হাত ব্যাস্ত থাকে,সেই হাত তখন হেক্টরের বল্লম ধরে রাখায় ব্যাস্ত।এক রাতে দাসীর ছদ্মবেশে আকিলিস আর রাজকুমারীকে একই বিছানায় শুতে হলো,নিজেকে সংবরণ না করতে পেরে যৌন উচ্ছাসে রাজকুমারীর উপরে আকিলিসের প্রচন্ড আক্রমন সেটা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে।তবে রাজকুমারী আকিলিসের পুরুষত্ব এর প্রতাপে এতই মুগ্ধ হয় যে, আকিলিসের রাতের বিছানার আক্রমনে না রেগে,বরং বিমুগ্ধ হয়ে যায়।আকিলিস যখন বিছানা ছেড়ে যাচ্ছিল,রাজকুমারী তাকে অনুরোধ করলো, ‘আরেকটু শুয়ে থাক না,আমার সাথে’।আর ডেইডিমিয়া পেট্রোসিয়াসকে বিছানায় আরেকটু থাকার জন্যে কত মিনতিই না করলো,যদিও কাজ হয়নি তাতে।
এটা অস্বীকার করা যায় না,মেয়েরা যখন প্রথম পদক্ষেপ নেয় সেটা একটু বেমানানই,প্রেমিকের কাছে শোভনীয়ভাবে আত্মসর্মপন করাটাই স্বাভাবিক।নিজের চেহারায় অবাক হয়ে বিরাট কিছু একটা আশা করো না কখনও,তুমি যদি এগিয়ে না যাও,এটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে-যে তোমার রুপে মুগ্ধ হয়ে তোমার পচ্ছন্দের মেয়েটা পাগলের মত গলা জড়িয়ে ধরবে,।তোমার মানসী হয়তো অপেক্ষা করে আছে শুধু একটা ডাকের আশায়,আর ও টুকু তোমার করা উচিত।জুপিটারের অনেক প্রেমিকা ছিল,কিন্ত কেউ ইচ্ছে করে এগিয়ে যায়নি তার কাছে।প্রথম পদক্ষেপটা বিশেষ কিছু একটা,অনেক মেয়ে আছে তারা পচ্ছন্দ করে যা তাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে,তার কাছ থেকে ছোট্ট একটা ইঙ্গিত।ভান করবে তুমি তার বন্ধু,ভালবাসা আর বন্ধুত্বের দূরত্ব খুব একটা বেশী না,এটা অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি।
দূর্বল আর অসুস্থ মানুষের,নাবিক হওয়ার যোগ্যতা কোথায়,লবনাক্ত জল,সূর্যের তাপের মানুষটার চেহারা হবে কঠোর যোদ্ধার মত।শরীর,চেহারা দেখলেই চেনা যায় ক্ষেত খামারের মানুষদের।তবে প্রেমিকের চেহারায় দূর্বল অসুস্থতার ছাপ বরং সাহায্যই করে।দূর্বল মুখ,চেহারা দেখে অস্থির হবে প্রেমিকা,আর তোমার সুস্থতার জন্যে অস্থির হয়ে কি না কি করবে,দেরী হবে না খুব একটা তোমার সুস্থ হতে।রাখাল,কবি ডাফনিস নাইয়াদ পরী নোমিয়ার প্রেমে এতই অভিভুত,অন্ধ ছিল যে প্রেমিকাকে কাছে না পেয়ে তার জন্যে বাঁশি বাজিয়ে নিজেকে সান্তনা দিত নিজেকে,এ ভাবেই অসুস্থ হয়ে শেষে পাহাড় থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয়,অনেকে আবার বলে শোকে সে পাথরে পরিবর্তিত হয়।পারলে শরীরটা একটু দুর্বল করে রাখবে,ওটা প্রেম দেখানোর বিরাট এক উপায়।আর ঘুম ছাড়া রাত্রি এমনিতেই তোমার ওজন কমাবে,মাথায় ঢাকা দিয়ে দুঃখ দেখানোও খুব একটা খারাপ বুদ্ধি না,কেননা সহানুভুতি বিরাট একটা আশ্রয়।
এখন আর কি বলবো জানিনা,তবে এটা বোধ হয় বলা দরকার,কলঙ্ক আর খ্যাতি দুটোর অবস্থান একেবারে পাশাপাশি।বন্ধুত্বে অন্ধ আস্থা রাখাটাও কিন্ত ঠিক না,হয়তো দেখবে তোমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু,তোমার মানসীর পাশে বসে মনের তীর ছুঁড়ে যাচ্ছে।অনেকে অবশ্য বলতে পারে ওগুলো বানানো কথা,বন্ধু কি কখনও বন্ধুর ক্ষতি করতে পারে,তারা বলতে পারে পেট্রোকোলাস আকিলিসের বন্ধু,যাকে নিয়ে আকিলিসের গর্বের শেষ ছিল না,তার প্রেমিকা ব্রিস্রিয়াসের সাথে যৌনসঙ্গমে মত্ত হয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করেনি,বলতে পারে ফায়েডারা তার স্বামীর আগের পক্ষের সন্তান হিপোলাইটাসের সাথে অবৈধ যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হতে চায়নি,আর যখন হিপোলাইটাসের প্রত্যাখানে তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেনি।বলতে পারে অনেকে,পাইলাডেস আর হেরমিওনেকে নিয়ে,বলতে পারে ফোবিস আর পালাসের ভালবাসা সমন্ধে।বলতে পারে সৎ ভাই কাষ্টোর আর পোলাক্স,বোন হেলেনের প্রেমে পাগল হওয়া শুধুই একটা গল্প।
একটা কথা না বললে অনেক ফাঁক থেকে যাবে,জেনে রাখ মেয়েদের মন বদলায় ক্ষনে ক্ষনে।ভিন্ন মানসিকতার একই মানুষটার সাথে একেক সময় একেকরকম ব্যাবহার করতে হবে,সর্তক থাকা দরকার সব সময়,একই মেয়ে যেন আরেকটা মানুষ সময়ে সময়ে।কোন মাটি খুবই ভাল আঙ্গুর চাষের জন্যে,আবার কোনটা উপযোগী জলপাই চাষের,আবার হয়তো আরেকটা ভুট্টা চাষের জন্য।প্রকৃত প্রেমিক জানে কোন সময় কোনটা করা দরকার,কি বলা দরকার কোন সময়।সমুদ্র দেবতা পসাইডোনের অনুচারী প্রটিয়াস কোন সময় সে ছিল বিরাট ঢেউ,কোন সময় সিংহ,কোনসময় গাছ,বেশীর ভাগ সময় হেলে দুলে বেড়ানো হিংস্র ভাল্লুক।
সব মাছকে একই ছিপ,একই টোপ দিয়ে ধরা যায় না,কোন মাছকে বল্লম ছুঁড়ে শিকার করতে হয়,কোন মাছকে জাল ফেলে।মানসীর স্বভাব ধরণে,এগোনোর পদ্ধতিটা বেছে ঠিক সে ভাবে।প্রথমে তোমার জানা দরকার প্রেমিকার বয়স,কেননা বয়সের মেয়েরা জানে শিকারীর দৃষ্টি,আবার কিশোরী মেয়ে ভঁয় পায় দক্ষ প্রেমিককে দেখে।তাই অনেক সময় দেখা যায় বেশী সর্তক মেয়েটা উঁচুতলার মানুষটাকে এড়িয়ে,শিকার হয় দুঃশ্চরিত্র লম্পটের হাতে।
আর ও অনেক উপদেশ আছে,যা তোমাদের বলা দরকার,তবে থাক,এখন কিছুটা বিশ্রাম নেয়া যাক।
০০০০০০০০০
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:৫৬