somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশঃ করোনা কালে বিশ্বায়নের প্রভাব

২৯ শে জুন, ২০২০ সকাল ৯:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একাডেমিক পড়াশুনা করার সময় বিশ্বায়ন নিয়ে অল্প পরিসরে ধারণা পেয়েছিলাম।সেখান থেকে জানতে পারি, বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া উন্নতবিশ্বের জন্যে আর্শীবাদ হলেও উন্নয়নশীল ও অনুন্নত বিশ্বের জন্য চরম হুমকি স্বরুপ।ব্যাপারটা তখন তুলনামূলক কম বুঝলেও এখন সম্পূর্ণভাবে বুঝতে পারি।

পৃথিবী এখন চরম হুমকিরমূখে পতিত।একেরপর এক মহামারী পৃথীবিতে আছড়ে পরছে।চলমান সময়ে সারা বিশ্বে "করোনা ভাইরাস" একটি অতঙ্কের নাম।সারা বিশ্বের বাঘাবাঘা দেশ আজ করোনা বিপর্যয়ে বিপর্যস্ত।এই করোনা বিপর্যয়ের হাতথেকে বাংলাদেশও রক্ষাপায়নি।তবে বিশ্বায়নের প্রভাবে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি আরো ভয়াবহরুপ ধারন করছে।বিশ্বয়ান প্রক্রিয়া বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য কতোটা মারাত্বক হুমকিস্বরুপ তা দেখানোর চেষ্টাই আজকে পোস্টটি।

করোনা ভাইরাস বা কোভিড ১৯ এর আতুরঘর বলাহয় চিনকে,চিনের উহান,হুবেই প্রদেশ থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তি।২০১৯ সালের শেষের দিকে চিনথেকে করোনা ভাইরাস ছড়ায়।তখন পর্যন্ত এই ভাইরাস চিনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলেও,পর্যায়ক্রমে এর ব্যাপকতা ছড়িয়ে পরে সারা বিশ্বে।


চিনে যখন করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়েছিল,তখন চিন সরকার সেটাকে ধামাচাপা দেয়ার জোরচেষ্টা করেছিল।কিন্তু যখন করোনা ভাইরাস চিনের নিয়ন্ত্রের বাইরে চলেযায় তখন বিষয়টা একেএকে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হতে থাকে।এভাবে তথ্যের অবাধ প্রবাহ আর্থাৎ তথ্য বিশ্বায়নের ফলে এরই মধ্যে সারা বিশ্ব করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জানতে পারে।এর পরেই মূলত করোনা ভাইরাস মহামারীরুপে পৃথীবিতে আত্বপ্রকাশপায়।এর পরেই ইতালী,স্পেন,যুক্তরাজ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এমনকি কোথাও কোথাও করোনা আক্রান্ত মৃত্যের সংখ্যাও চিনকে ছাড়িয়ে যায়।

চিনে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পরেই বিশ্বের বড় বড় গণমাধ্যমে প্রতিনিয়ত করোনা ভাইরাস নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা শুরুকরে।সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের গণমাধ্যমেও করোনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হতে থাকে।
এর ফলে বাংলাদেশের জনগন করোনা আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়েপরে।বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা আক্রান্ত ও করোনার মৃত্যের সংখ্যা যখন বাড়তে,সে সব খবর যখন বাংলাদেশের জনগন জানতেপারে স্বাভাবতই বাংলাদেশের জনগন আরো বেশী আতঙ্কিত হয়েপরে।এই আতঙ্কের ফলে ১২ মার্চ ২০১০ দেশের উত্তরাঞ্চলের নীলফামারীতে অবস্থিত উত্তরা ইপিজেডের অর্ধশতাধীক শ্রমিক অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তিহয়।পরে জানতেপারাযায় তারা সকলে করোনা আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়ে অসুস্থহয়ে পরে।

৮ মার্চ দেশে সর্বপ্রথম করোনা রোগি সনাক্ত হয়।এরপর বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা বাংলাদেশে ফিরে আসলে দেশে করোনা আক্রান্ত বাড়তে থাকে।এবং ১৮ মার্চ দেশে সর্বপ্রথম করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

করোনা ভয়ে বিভিন্নদেশ একেএকে নিজনিজ দেশে "লকডাউন" ঘোষণা করে।সংবাংবাধ্যম তথা তথ্য বিশ্বায়নের ফলে বাংলাদেশের জনগনও লকডাউন সম্পর্কে অবহিত হয়।এর ফলে বিভিন্নদেশ যেখানে লকডাউন দিচ্ছে,সেখানে বাংলাদেশেও লকডাউন দেয়ার জন্য কিছু চাপসৃষ্টিকারী গোষ্টি সরকারকে চাপদিতে থাকে,এতে যোগদেয় বাংলাদেশের সংবাধমাধ্যমগুলো।বাংলাদেশ সরকারও নীতিগতভাবে সিদ্ধান্তনেয় বাংলাদেশ লকডাউন করার।এরও আগে কিছু কিছু জেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়।কিছু আতিউৎসাহি গ্রামবাসী নিজ নিজ গ্রাম লকডাউন করেরাখে।এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সরকার ২৭ সে মার্চ থেকে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে,কার্যত সেদিন থেকেই বাংলাদেশে লকডাউন শুরুহয়।এই সাধারণ ছুটি কয়েকধাপ বাড়িয়ে,এবং সাধারণ ছুটির আয়তাভুক্ত বিষয়সমূহ সংশোধন করে ৩১ মে পর্যন্ত করা হয়।লকডাউন চলাকালে গার্মেন্টস মালিকদের মায়া কান্নার চাপেপরে সরকার ২৬ এপ্রিল ৪২ লক্ষ শ্রমিক যে সেক্টরে কাজ করে সেই গার্মেন্টস কারখানা খুলে দিতে বাধ্য হয়।

মূলত বাংলাদেশ যখন লকডাউন করা হয়েছিল,তখন বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি মোটামুটিভাবে স্বাভাবিকই ছিল।যখন বাংলাদেশ সরকার সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল তখন বাংলাদেশে ৮০-১০০ জন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছিল।এর পরেও বাংলাদেশ সরকার সাধারন ছুটি ঘোঘণা করতে বাধ্যহয়েছিল।কারন চিন,আমেরিকা,ইতালী সহ বিভিন্ন দেশে করোনা রোগির সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকে।দেশের সূরক্ষার জন্য,তথ্য বিশ্বায়নের ফলে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে।যদিও সে সময় দেশে করোনা পরিস্থিতি অতোটা খারাপ হয়নি যে বাংলাদেশ লকডাউন করতেহবে।তথ্য বিশ্বায়নের ফলে বিভিন্ন দেশের আক্রান্তের যোগফল যখন প্রচারিত হতেথাকে এর ফলেই বাংলাদেশ সরকার সারা দেশ লকডাউন করে রাখে।

এদিকে বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি যে তখনেই ভয়াবহ হয়নি সেটা বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানিয়ে দিয়েছিল।এরপরও তথ্য বিশ্বায়নের ফলে বাংলাদেশ লকডাউন করাহয়।

এবার লক্ষকরলে দেখতে পাবেন,কয়েক মাস চলার পর যখন স্বয়ং চিনে আক্রান্তের সংখ্যা কমতেথাকে,এমনকি যে ইতালীতে চিনের চেয়েও বেশী মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল সেই ইতালী পর্যন্ত তাদের দেশে লকডাউন শীতিল করছে।আর এ সব খবর তথ্য বিশ্বায়নের ফলে বাংলাদেশে আশার ফলে,প্রভাব পরেছে বাংলাদেশের লকডাউনে।বর্হিবিশ্বের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার খবরে,দেশের বিভিন্ন পক্ষের চাপের কারনে বাংলাদেশ থেকে লকডাইন তুলে নেয়া হচ্ছে।


অথচ করোনা পরিস্থিতি যে একই সময়ে সারা পৃথীবিতে মহামারী হিসবে দেখা দিবে এমন কোন কথা নাই।যা আমারা দেখতে পেয়েছি,চিনে করোনা ভাইরাস মহামারী আকার ধারন করার,বেশকিছু সময়পর ইতালীতে ছড়িয়ে পরেছে।মূলত চিনথেকে ভাইরাসটি ইতালীতে মহামারী রুপনিতে অনেক সময় নিয়েছে।এর কারন হলো আবহাওয়া,পরিবেশ ও করোনা বিস্তার ও এর জীন পরিবর্তনের কারন।একই কারনে বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাস দেড়ীতে বিস্তার ঘটায়।কিন্তু বাংলাদেশ এই বিশ্বায়নের কারনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি ও তাদের কর্মকান্ড আর্থৎ দেশ পরিচালনায় পরিবর্তন দেখে বাংলাদেশও সেই পথেই হেটেছে।সেটাছিল বাংলাদেশের জন্য ভূল পদক্ষেপ।

আজ ২৯ সে মে,আজ বাংলদশেরে সবচেয়ে বেশী ২৫২৩ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে।এ পরিসখ্যান দেখলেই বুঝাযায় বাংলাদেশে এখন করোনার ভরা মৌসুম চলছে।আর এসময়েই বাংলাদেশে লকডাউন তুলে দেয়া হচ্ছে।কিন্তু যখন আক্রান্তের সংখ্যা ৮০-১০০ ছিলো তখন দেশ লকডাউন ছিল।বর্তমানে বাংলাদেশে করোনার যে পরিস্থিতি,তা আর কিছুদিন চলতে থাকলে দেশের আর্ধেক মানুষের বেশী করোনা সনাক্ত হওয়া খুব একটা অস্বাভাবিক ঘটনা হবেনা।



বিঃদ্রঃ এই ব্লগ পোষ্টটি আমার নিজের ব্লগ রুপমের ব্লগ এ গত ২৯ সে মে প্রকাশ করেছি।সেটা দেড়িতে হলেও সামু ব্লগে পোষ্ট করলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০২০ সকাল ৯:১৮
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×