পর্দাকরতে বলার পরিনতি!
শাওন,অর্পিতা,অধরা তিন জনেই এবার এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে। তাদের বড় ভাইয়ের শ্বশুড় বাড়ী ছিল সিলেট। তাদের ভাবি বাবার বাড়ী যাবে, তারাও বায়না ধরল তারাও যাবে। এসএসসি পাস করেছে সেই অনন্দতো আছেই, তাছাড়া অনেক দূরের পথ। আর কোন দিন যেতে পারে কি না! তার উপর আবার মেয়ে মানুষ। তাই কোন কথা না বলে ভাইয়ের কাছে অনুমতি নিয়ে রাজি হয়েগেল। তিনজনেই ছিল চাচাতো ফুপাত বোন। ভাইয়ের অনুমতি নেয়ার পর এবার পরিবারের অনুমতি নেয়ার পালা। যেভাবে হোক সবাইকে রাজি করে তার সিলেট চলেগেল।
সেখানে গিয়ে তারা বেহায়াপনা চলাফিরা করতে লাগলো। সেটা তাদের ভাবির দৃষ্টিকুট মনেহলো, সাথেসাথেই তাদের কে ভালোভাবে চলার পরামর্শদিল। বিশেষ করে বুকের ওড়নাটা ঠিক রাখতে বল্লো। তারা সেখানে বুকের ওড়না যেভাবে দেয়, তাতে বুকের জি নিস দুইটা স্পষ্ট দেখা যায়, যাতে যে কোন মানুষের অকৃষ্ট হতে পারে। তবে বাড়ীতে তারা কখনই এরকম করতো না।
যদিও শাওন এরকমই মেয়ে ছিল তবে অর্পিতা ও অধরা এরকম ছিলনা। এখানে বলেরাখা ভাল, তাদের সাথে থেকেও অধরা সব সময় শালিন ভাবে চলাফিরা করছে। তবে এর জন্য তাকে শাওন ও অর্পিতার অনেক কুট কথা শুনতে হয়েছে। তারা তিন জনেই যখন বাইরে যার তখন শাওন ও অর্পিতার বুকের ওড়না আর বুকে থাকেনা তা হয়ে যায় মাফলার আর অধরা বোরকা না পরলেও হিজাব পরে যায়। সে জন্য শাওন ও অর্পিতা তাকে তাচ্ছিল্ল করে হাজীয়ানি বলে ডাকে, তবে তা নিয়ে অধরার কোন আক্ষেপ ছিল না।
তাদের ভাবি যখন তাদের ডেকে সে সব কথা বলছে, তখন শাওন ও অর্পিতার মন খুব খারাব হয়ে গেল, সারা দিন দুজনেই কান্না করতে থাকলো এমন কি সেদিন আর কিছু মুখেও দেয়নি। খাওয়ার জন্য জোড়া জুড়ি করার কারনে শাওন ও অর্পিতা বল্লো আমরা বাড়ী যাব এখানে আর থাকবো না। ভাবি তখন মহা বিপদে পরেগেল। কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না। অনেক বোঝাবুঝির পর না খাওয়ার শর্তে থাকতে রাজি হলো। ভাবিও সেটা মেনে নিল। সেদিন থেকে তাদের পোষাক নিয়ে ভাবি আর কোন কথা বল্লোনা।
এর দুই দিন পর অধরার ভাই ভাবিকে ফোন করলো। ফোনে অধরার ভাইকে সবেই বলে দিল। অধরার ভাই বল্লো শাওন এরকম করতে পারে তবে অর্পিতা ও অধরাতো এরকম করার কথা নয়। ভাবি তাকে বল্লো অধরা ঠিকই আছে তবে শাওন ও অর্পিতার চলাফিরা ভালোলাগছেনা। অধরার ভাইও তার ভাবিকে বোঝাল গেছেনই যখন তখন কষ্ট করে কয়েক দিন সহ্য করে ফিয়ে আসেন। এর কয়েক দিন পর তারা সকলে বাড়ী ফিরে আসলো।
আগেই অধরার ভাইয়ের সন্দেহ হয়েছিল অর্পিতার ব্যপারে ভাবি মিথ্যাচার করেছে। বাড়ী ফিয়ে আসার পর সবারই চলাফিরা স্বাভাবিক মনে হলো। সন্দেহ আবারও ঘনিভূত হলো। অধরার ভাই কাউকে কিছু বলছে না।
কিছুদিন পর ঈদ এলো।
ঈদের পরের দিন অর্পিতার ইন্জিনিয়ারিং পড়ুয়া খালাতো বোন নিশাত তাদের বাড়ীতে এলো। এসেই অর্পিতাকে নিয়ে তার বন্ধুরে একটি প্রগ্রামে নিয়ে যাচ্ছে। তখন বাইরে দাড়িয়ে আছে অধরার ভাই। সে দেখতে পেল অধরা ওড়না নিয়েছে ঠিকই কিন্তু তা পর্দা হিসেবে নয়! ফ্যাশন হিসেবে যাতে তার স্থন্য দুটি খুব ভালো ভাবে দেখাযাচ্ছে। এবার অধরার সন্দেহ দূর হলো। সাথে সাথেই তার মাথা গরম হয়ে উঠল। এবার সে নিশাদ কে ডাকলো আর বল্লো এদিকে এসো তোদের একটা গল্প বলি। নিশাদ বল্লো ভাইয়া, আমাদের সময় নেই পরে শুনবো। অধরার ভাই রাহুল তখন রেগে উঠে বল্লো ৫ মিনিটের গল্প তোদের শুনতেই হবে। বাধ্য হয়ে দুজনেই বল্লো শুনি তাহলে। রাহুল মাথা ঠান্ডা করে বল্লো, শোন আমরা যখন রাস্তার মেয়েদের বেপর্দায় দেখি তখন কি ভাবি জান? লজ্জায় দুজনে মাথা নিচু করে বলে কি ভাবেন? রাহুল বল্লো আমরা তখন, মেয়েদের দোষ দেই না, তখন আমরা যে সব মেয়ে পর্দাকরে চলে না তাদের অবিভাবকদের দোষ দেই, তদের বাবা-মা, স্বামী -ভাইদের দোষ দেই আর গালিদেই। শোন তোমরাও যদি পর্দা না করে চলাফিরা কর তাহলে অন্যরাও তোমাদের নয়, তোমাদের, বাবা-মা,ভাই -স্বামী দের গালাগাল দেয়। তোমরা কি আমাদের গালাগাল শুনতে চাও। তখন নিশাদ বল্লো ভাইয়া, ঠিক আছে আমরা তা চাই না কিন্তু আমি কি পর্দা করে চলি না? রাহুল তখন মাথা নিচু করে বল্লো তোর পাশে অর্পিতাকে দেখ, কেমন করে ওড়নাটা নিয়েছে! তখনও অর্পিতা তার ওড়নাটা ঘারের দুই পাশে রেখেদিয়েছে। সেটা দেখে নিশাদ লজ্জিত হলো আর অর্পিতা মূখ অন্ধকার করে পুতুলের মতো দাড়ীয়ে আছে। নিশাদ তখন তার ওড়নাটা ঠিক করে দিল। দু'জনেই মন খারাব করে আর প্রগ্রামে যেতে চাইলো না। রাহুল আবার রাগ করে যেতে বল্লো তারা চলেও গেল।
অর্পিতা যখন বাড়ী ফিরে আসলো তখন রাত প্রায় ১২ টা। নিশাদ আগেই তাদের বাড়ী চলেগিয়েছে আর অর্পিতা একাই বাড়ী এসেছে।
অর্পিতা বাড়ী আাসার ঘন্টাখানিক পরেই, রাহুলের দরজায় এসে সবাই ডাকাডাকি করছে। রাহুল তারাহুড়া
করে উঠছে আর ভাবছে বাড়ীতে মনেহয় ডাকাত পরছে। দরজা খুলে দিতে তার উপর শুরুহল এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি! রাহুল আর কোন কিছুই মনে করতে পারে না। রাহুলের মাথা ফেটে রক্তবের হয়, শরীরে এখনও অশংখ্য আঘাতের চিহ্ন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৩৯