তোমাদের নগরীতে
বৃষ্টি মোড়া জ্বলজ্বলে সন্ধ্যায়
হলুদ হ্যালোজেন বাতি জ্বেলে
ফুটপাথে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে
বিপন্ন ভাবুক অন্ধকার।
ঘরে ফেরা ক্লান্ত মানুষের দল
বিষণ্ণ কংক্রিটে বাঁধে শ্যাওলার গান
দিগন্তেরা চাপা পড়ে গেছে দেওয়ালে ভিড়ে,
মানুষ বুকে রাস্তা ঘষে
প্রায়শই অলীক নদীতে
পরিনত হয়
তোমাদের নগরীতে
এখনও গভীর রাত্রিতে
ভরদুপুরের কোলাহলে মেতে ওঠে নির্জনতা
ঘুমজাগা, ডানাহীন সেই সব সর্বহারার দল
যাদের ঘর ছিল, আবার নেই!
কোথাও যাবার আছে, আবার নেই!
ভালোবেসে গৃহত্যাগী হবার অভিশাপে
পুড়ে যায় কিছু ঘোরগ্রস্ত মানুষ
গত জন্ম নাকি অন্য ভুবনের নেশায়
হেঁটে বেড়াতে দেখা যায় উদ্ভ্রান্ত ব্যস্ততায়!
মুদ্রার ঝনঝনে আবেগে কেঁপে ওঠে দুর্বৃত্ত প্রেতাত্মা
তোমাদের নগরে
যেখানে বাতাসে পাথর ওড়ে
ল্যাম্পপোস্ট আর কৃষ্ণচূড়ার অলৌকিক সহাবস্থানে
সিগন্যাল বাতিগুলো প্রায়শই বাঁধিয়ে দেয় অবাক জট,
সময়গুলো থেমে থাকে পথে পথে
তোমাদের নগরে
কোথাও কোথাও
সূর্যকে হার মানা আলোকসজ্জা সাজিয়ে
কোমর দুলিয়ে নাচে বীভৎস বিত্ত
এখানে অবিক্রীত কিছু নেই!
কোথাও কোথাও
শূন্য বিবর্ণ কৃষ্ণ বিবর চোখে
চেয়ে থাকে মার্জিনা, মনির আর ওরা যারা দুঃখশিশু
পথে পথে জোনাকীর মত জ্বলে নিভে যায়
জন্মই ছিল বুঝি আজন্ম পাপ-
এই জেনে
ফুলগুলো সব অবেলায় ঢেকে যায়।
আধপেটা দুঃখরাই নাকি শিল্প হয়ে ওঠে
তোমাদের নগরীতে
বহুরূপী মুখোশে মুখোশে
তারা ঝিলমিল কাচের প্রাসাদে
গোঁফে তা দেয় শিকারী হুলোর দল!
ফালি ফালি কাটা রুগ্ন বিকেলগুলোতে
আটকা পড়ে আছে সব প্লাস্টিক শৈশব
তবুও মানুষ স্বপ্ন দেখে, ওড়ায় ফানুস ভালোবেসে
তোমাদের নগরে
আজও
মৃত জলেরা ঘুরপাক খায়
তিলোত্তমা তিতির বিস্ময়ে!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৩১