গত ২০ শে ডিসেম্বরে আমরা যশোরের কিছু ব্লগার, নব্য ব্লগার এবং হবু ব্লগার আনন্দ নিকেতন উদযাপন করলাম ৫ম বাংলা ব্লগ ডে! কারিগরি ত্রুটির কারনে পোস্ট দিতে দেরী হল! পোস্টটা ছবি ব্লগ হিসেবেই দাঁড়ালো দেখা যাচ্ছে, আমরা কী করেছি সেইটা ছবিতেই দেখা যাচ্ছে! বেশী কথা বলে কাজ কী?!
প্রস্তুতি নিচ্ছে আনন্দ নিকেতন!
রিমু আর অভি ব্যস্ত কাজে!
আমাদের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে গাছ লাগানো দিয়ে, আমরা দুইখানা হাস্না হেনা(আমার বাবা মায়ের বিশেষ ফেভারিট ফুল! ), চারটা ডালিয়া, একটা সূর্যমুখী, একটা ক্যাপ্সিকাম ও একটা কৃসমাস ট্রি!
আস্তে আস্তে উপস্থিত হচ্ছে বন্ধুরা, ড্যানি আর শফিকের আগমন!
বা থেকে- রিয়াজ, অভি, ড্যানি, রাসেল,শফিক,রিমু, অমিত
সবথেকে পিচ্চি দুই বন্ধু, আমি একমাত্র যে ব্লগার পেয়েছি, নীল নটবর অরফে অমিত
এবং আনন্দ নিকেতনের শিল্প নির্দেশক রিয়াজ!
রিয়াজ, ক্রিয়েটিভ লাইটিং থেকে শুরু করে শিল্প নির্দেশনা ওর, ও একটা আই ডি খোলার চেষ্টা করছে!
বাঁশী নিয়ে বসেছি!
রিয়াজ, ক্রিয়েটিভ লাইটিং থেকে শুরু করে শিল্প নির্দেশনা ওর, ও একটা আই ডি খোলার চেষ্টা করছে!
ক্ষুদে ব্লগার নীল নটবর! ওর কাজ হচ্ছে অন্য সব জায়গার ব্লগ ডে'র আয়োজনের তথ্য আমাদের কে দেওয়া, যশোরের আয়োজন যাতে এগিয়ে থাকতে পারে!
রিমু, ওকে কাজ ছাড়া কেউ কি ছবিতে দেখছেন? কেউ কেউ আছে শুধু কাজ করে যায়, কেউ কেউ আছে যারা না থাকলে অনেক কিছুই থেমে থাকবে, রিমু ওই গোত্রের মানুষ!
মাগরিবের নামাজের বিরতি, কয়েকজন কাছে মসজিদে গেছে নামাজ পড়তে, প্রথম পর্বে বৃক্ষ রোপণ অভিযামন শেষ, এর পরে বাঁশী বাজিয়ে পরবর্তী পর্ব শুরুর অপেক্ষায়!
এইটা হয়ে যাক একটা ছড়া বিরতি, আবোলতাবোল ছড়া-
আমরা ব্লগার, আমরা ব্লগার,
সামু খামারে পাড়ছি ডিম,
রাম গড়ুরের ছানা নই মোরা,
আমাদের নেই খাড়া দুটো শিং!
কেউ কাব্যে, কেউ গল্পে,
কেউ ফিচারে অবাক তাক,
কেউ মেলে ছবি, আহা সব ছবি
বুনোফুল যেন ঝাঁক ঝাঁক ঝাঁক!
এখন আর সেই সামু নেই নাক
উড়ে গেছে সব রঙ বেরঙ্গের পাখি,
এই সব শুনে আন মনে ভাবি,
বর্তমান-ই সত্য জানি, বর্তমানে বাঁচি!
অবশেষে আমি বাঁশী বাজানোর ভিডু আপলোড করতে পারলাম, সারাদিনের তপস্যা, সাথে কাভা আর অভির যৌথ টেকি হেল্প!
বাঁশী শুনে আমরা ব্লগ নিয়ে একটু আলোচনা করলাম, ব্লগ কী, ব্লগার কাদের বলে, ব্লগ লেখলে কী হয়, ব্লগার মানে শুধুই নাস্তিক কিনা- এক কথায় ব্লগ নিয়ে যার যা মনে আসে সে কথা সবাই মিলে শেয়ার করা!
অনেক ভারী কথা বলে শুনে সবাই ক্লান্ত, এবার খাওয়া দাওয়া! কেক!
পিঠা, খেজুর রসের পায়েস!
কেক কাটছে আমাদের টারজান কন্যা মৈত্রেয়ী মৈত্রী, কিছুদিন আগে নানির শাড়ি ধরে এক তলা থেকে যে নিরাপদ ঝাঁপ দিয়েছে!
আমাদের গানম্যান রফিক ভাই! যশোরে অনেক উনাকে মামা রফিক হিসেবে চেনে, উনার গানের মধ্য দিয়ে শেষ হল অনুষ্ঠান!
তুমি কেমন করে গান কর হে গুনী!
এই তো, এক রাশা ভালোলাগা আর সামনের অনেক স্বপ্ন নিয়ে শেষ ফিরে চললাম আমরা! আমার এখানে যারা ছিল, তাদের বেশীর ভাগই ব্লগ সম্পর্কে আজকে খুব ভালো করে জানল বলা যায়, কিন্তু ওদের অংশ গ্রহন দেখে কী বোঝা যায়? অদ্ভুত রকম চমৎকার ছিল ওদের আগ্রহ ও অংশগ্রহন! ওদেরকে সাথে নিয়ে, আনন্দ নিকেতন কে নিয়ে আমরা নতুন বছরে কিছু নতুন স্বপ্ন বুনতে চাই! সবার জন্য রইল ভালোবাসা!
মানুষের জয় হোক!
পোস্ট শেষ করছি ব্লগ ডে লেখা কাব্য নিয়ে, এইটা আগেই পোস্ট দিয়েছিলাম, নতুন যোগ হয়েছে ইমন জুবায়ের ভাইয়ের দুই লাইন নিয়ে একটা গান!
শোন শোন গুনমণি, শোন দিয়া মন,
রঙ্গশালা আজব এক করিব বর্ণন,
রঙ্গশালা আজবশালা অবাক ব্যাপার ভাই
বাস্তবেতে ইহার কোনো জায়গা জমি নাই!
আদর করে ডাকে ‘সামু’ ভক্ত ইহার সব
বাংলাভাষায় অন্তর্জালে প্রথম তুললে রব!
ভোরের আলো জ্বাললে যারা নমস্কার করি,
অধম আমি, কাব্য করি, নামে ইফতি কবি!
চল তবে দেখা যাক কাদের ভালবাসায়,
এতো দূরে আসলে সামু, তূর্য যাদু মায়ায়!
জানা আছে কিছু নাম, কিছু অ-জানা,
ত্রুটি যদি হয় তবে, ক্ষমা প্রার্থনা!
আমাদেরই মাথার পরে বটবৃক্ষ ছায়ায়,
ইমন জুবায়ের নামের স্বপ্ন ঘুমে রয়!
গুরু তোমায় সালাম করি আমরা ভাগ্যবান,
তোমার অতুল স্নেহ ধারায়- পূর্ণ তব প্রাণ!
জীবন মানে শুধুই যদি প্রাণ রসায়ন,
জোছনা রাতে মুগ্ধ কেন আমার নয়ন।
অঙ্ক কষে যায় কী জানা প্রানের মানে,
ছন্দ গুনে কাব্য কী কেউ লিখতে জানে,
পথ মেপে তো যায় না জানা দূরের মানে,
মানুষ যদি,- মনের বাঁশী বাজাও প্রানে!
তোমার চোখের অন্ধ কোলে প্রদীপ জ্বেলে,
স্বপ্ন, সে তো নিজেও স্বপ্ন দেখতে জানে,
মানুষের নেই উচু-নিচু-জাত-কাঁটাতার ভেদ,
মাটির ফানুস, মাটিরই ফুল, অচিন নিরুদ্দেশ!
দুই হাজার তের সনের উনিশ ডিসেম্বর,
ব্লগ ডে’র ভুত করছে সবার উপ্রে ভর!
বসবে মেলা মিলন মেলা, নয়া-পুরান পাখি,
চোখের আলো জ্বলবে প্রাণে, জারুল স্মৃতির ঝাঁপি!
সারা বছর, দিবা-রাত্রি, রোদ-বৃষ্টি ময়,
দেখে ভাবি সামু এক নদী বয়ে যায়!
গদ্য, পদ্য, এটা-সেটা, ভ্রমণ রঙ্গ ফিকশান,
চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ি, ছাদে মাইকেল জ্যাকসন!
আরও আছে অচল সচল নানা ছবির গল্প,
হেল্প চাই, টেকি ভাই, মাথা পুরা নষ্ট!
কপি-পেস্ট, ক্যাচালবাজী মাঝে মাঝেই চলে,
ফাউল ছাড়া ফুটবল খেলা, হতে পারে কবে?
যখন কারো দুঃখ ভারী, কোনো সহায় নাই,
আমরা ব্লগার জেগে বলি- আমরা আছি ভাই!
মুক্তিযুদ্ধ গর্ব মোদের, ভুলিনি আমরা কিছু,
শহীদ পিতা সূর্য মোদের, একাত্তরের যিশু!
বীরাঙ্গনা মাতৃ মোদের, আকাশ সমান ত্যাগ,
মাগো আমরা থাকবো জেগে, করছি শপথ দ্যাখ!
আমি বাংলাদেশ দেখেছি,
পৃথিবীর সুন্দরতম দুঃখিনী ফুল দেখেছি,
আমার পূর্বপুরুষ এই ফুলের জন্য!
আমার বর্তমান এই ফুলের জন্য!
আমার উত্তরপুরুষ এই ফুলের জন্য!
এই ফুলকে যে দুঃখ দেবে,
প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে, শপথ সূর্যের,
নরকের দ্বার পর্যন্ত তাড়া করে ফিরব ।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ প্রথমত ব্লগার আমিনুর ভাই, উনি আমাকে গাছে তুলে মই নিয়ে দৌড় দিয়েছিলেন, মানে খুব উৎসাহ দিয়ে বলেছিলেন ব্লগ ডে নিয়ে পোস্ট দাও, আয়োজনের চিন্তা কর, প্রচুর যশোরের ব্লগার পাইবা! কিন্তু আমি একজনও পাইনি, মানে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু পরিস্থিতির কারনে কারো পক্ষে আসা সম্ভব হয় নি! একা একা খুব এতিম অনুভূতি নিয়ে শুরু করেছিলাম, কিন্তু খুব চমৎকার কিছু পিচ্চি আমাকে বিশাল কিছু দিয়েছে! কাল্পনিক ভালোবাসার কথা বলতে হবে, নিয়মিত যোগাযোগ ছিল ওর দিক থেকে! ও জানা আপুর কথা ব্লি নাই এখনও, উনি অনুষ্ঠানের দিন থেকে শুরু করে কয়েক দিন বেশ ব্যস্ততার মধ্যেও ফোন দিয়ে আয়োজনে উৎসাহ দিয়েছেন!
আর যারা না থাকলে হয়ত না কিছুই- রিমু, রিয়াজ, অমিত, অভি, শফিক, ড্যানি, বুলবুল, বাদল, সাইফুল, তারেক, রফিক ভাই, জনি!