৭১এ অর্জন করি আমরা স্বাধীনতা। স্বাধীনতার ৪৮ তম বছরে এসে আমরা কি পাচ্ছি স্বাধীনতা.?
স্বাধীনতা হারিয়েছি সেদিনই, যেদিন বাংলাভূমি থেকে হারিয়েছে গণতন্ত্র। বিনা নির্বাচন এবং একপাক্ষিক ভোটে সরকার তার আসন ঠিকই আঁকড়ে রেখেছেন কিন্তু মুঁছে দিয়েছেন বাংলাভূমির প্রতিটি মানুষের ব্যাক্তি স্বাধীনতা।
স্বাধীনতা বলতে আমরা কি পেয়েছি.?
কাগজে কলমে স্বাধীন লিখা আছে বলে আমরা স্বাধীন। প্রশ্নজাগে সত্যই কি আমরা স্বাধীন..?
যে দেশে বাক স্বাধীনতা নেই, নেই ভোট দেওয়ার অধিকার । সেদেশের মানুষ কি সত্যিই স্বাধীন।
যদিও লিখতে চাচ্ছি আবরার হত্যা নিয়ে। কিন্তু, ভোট দেওয়ার অধিকার হারানোর কথায় বলতে হয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথা। প্রথমবার ভোট দিবো, অনেক উচ্ছাস করেছিল মনে। সকাল আটটায় ঘুম থেকে উঠে নাস্তা সেরে নয়টা কিংবা সাড়ে নয়টার দিকে ভোট কেন্দ্রে যাই। একজন স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও ভোট কেন্দ্রের একশো মিটার দূরেই পথরোধ করে দাড়ায় দেশমাতার সোনার ছেলেরা। বলেছিলাম, পথরোধ কেন.? উত্তর- ভোট হয়ে গেছে, কেন্দ্রে যেতে পারবা না। বলেছিলাম - আমার ভোট কেন আমি দিতে পারবো না.?
জবাব এসেছিল চাপাতি নিয়ে দৌড়ে এসে - আর একটা কথা বললেই কোপামু। চোখের সামনে নারীর গাঁয়ে হাত দিতে দেখেছি। কিছুই করার ছিল না সেদিন, আমি নই কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী বা সদস্য। হেরে গেছি, সেদিনই হেরে গেছি। দেশের গণতন্ত্র হারিয়েছি। ভোট না দিয়ে ফিরে যাই বাসায়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সোনার ছেলেরা সেদিন প্রতিবেশিকে ( বাসা থেকে বেরুলেই যাদের সাথে দেখা হয়) চাপাতি নিয়ে কোপাতে আসে, সেখানে আবরার তো বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী, সিনিয়র কিংবা জুনিয়র মাত্র। আবরারকে হত্যা করার সময় পশুতোষ আচরণ করা স্বাভাবিকই তাদের।
দেশকে বিলিয়ে দিচ্ছি দাদাদের চরণে, আর প্রতিবাদ করে আবরার হারালো প্রাণ।
আচ্ছা, এর বিচার কি আবরার পাবে.?? যেখানে খুনীদের হাতে রয়েছে ক্ষমতা, স্বয়ং দেশমাতা কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতা। বিশ্বজিৎ হত্যার ফুটেজ হাতে পাবারও সবার সামনে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায় খুনীরা । আবরার খুনীদেরও বেলায়ও কি এমন হবে.??
দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, সন্তান হত্যার বিচার পেতেও পিতা-মাতাকে দলের ট্যাগ লাগাতে হয়।
৭১ এ দেশ স্বাধীন এর সময় বঙ্গবন্ধু কি এই বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছিল.?? যেখানে থাকবে ক্ষমতার অপব্যবহার, শিক্ষাঙ্গনে থাকবে সন্ত্রাস। এরাই কি বঙ্গবন্ধুর স্বহস্তে গড়া ছাত্রলীগ.?
প্রতিটি মায়ের এখন বুকে কম্পন হয় তার সন্তানকে দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠগুলোতে পাঠাতে। কখন যে সংবাদ আসে সন্ত্রাসীদের হাতে তার সন্তান হারিয়েছে প্রাণ, কিংবা তার সন্তানের হাতেই খালি হয়েছে অন্য একজন মায়ের বুক।
শিক্ষাঙ্গনে এই সন্ত্রাসের নৈপথ্যে কারা.?
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে শিশুতোষ মনোভাবের কোমল ছাত্রদের উপরও হামলা করেছিল এরা। সহপাঠীর প্রাণ যাবে রাস্তায়, আর প্রতিবাদে আসবে ক্ষমতাধারীদের বাধা।
৭১এ পাকিস্তানের সাথে হাত মিলিয়ে তারা ছিল বিংশশতাব্দীর রাজাকার, আর দেশের সাথে বৈঈমানী করাদের একবিংশশতাব্দীর রাজাকার বললে কি আমার অপরাধ হবে.?
কথা বলতে বাধা, লিখতে গেলে বাধা। কখনো আসে প্রাণনাশের হুমকি, কখনো কেড়ে নেয় প্রাণ। জানতে ইচ্ছে হয়, এটাই কি বঙ্গবন্ধুর কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ...??
আবরার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার কাছে চাইবো আমি.?? যেখানে আইন চলে উপরমহলের নির্দেশে। ধিক্কার জানাতে ইচ্ছে হয়, সেইসব মেধাবি নরপিচাশদের।
ন্যায়বিচার পাবো কিনা তা সন্দেহাতীত, তবুও ন্যায়বিচার চাই এবং চাই বন্ধ হোক শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসবাদ।