পূর্বের পর্ব এখানে আরেক নরাধম নাইন ইলেভেনের পরে নিজ ধর্ম ইসলাম ত্যাগ করেছেন বলে আত্মপ্রচার করে এর বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর কাজে সর্বশক্তি নিয়োজিত করেছেন প্রিয় রসুল ও স্বামীকে সম্বোধণ করে খাদিজা (রাঃ) এর প্রিয় ডাক ‘আবুল কাসেম’ নাম ধারণ করে৭ । কেনই বা মুসলিম হয়েছিলেন আবার কেনই বা তা ছেড়েছেন সেদিকে না যেয়ে পবিত্র কুর’আনের বিভিন্ন শব্দের বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে ইহুদী ও খ্রীষ্টানদেরকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে উত্তেজনা সৃষ্টির কাজ নির্লজ্জের মত চালিয়ে যাচ্ছেন। যেমন, ‘মুশরিক’ শব্দের অনুবাদ ‘মুর্তিপূজারী’ না করে এই নরাধম জেনে বা না জেনে সব আহ্লে কিতাবধারী ও অবিশ্বাসীদেরকে এক কাতারে নিয়ে এসে নিজের মত করে ব্যাখ্যা দাঁড় করায়ে ইসলামের শ্ত্রুদের পোষা ক্রীড়নক হিসেবে ব্যবহ্নত হচ্ছেন। পবিত্র কুর’আন যে ঐশী গ্রন্থ না তা প্রমাণ করার অপচেষ্টায় এই তথাকথিত আবুল কাসেম কবি ইমরুল কায়েস, যায়েদ বিন আ’মর বিন নওফেল, কবি লাবিদ, ওরাকা, হাসান বিন সাবিতসহ ১৫ জনের তালিকা তৈরি করে এই বলে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে যে তাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাবেই মুহম্মদ এই গ্রন্থটি রচনা করেছেন (নাউযুবিল্লাহ)।
ইন্টারনেটের আরেকজন মুখোশধারী লেখক ওয়াশিংটন থেকে নিয়মিত লেখেন তিনি হলেন সাইদ কামরান মির্জা। আসল নাম ডঃ খোরশেদ আলম চৌধুরী। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে রাশিয়া থেকে পিএইচডি ডিগ্রী নিয়ে আমেরিকার ফেডারেল কৃষি বিভাগে চাকরি করেন। পবিত্র কোর’আন পড়াশোনা করে তিনি যা পেয়েছেন তা হলো “..............চাকরানীর সাথে (লেখার অযোগ্য শব্দ) সম্পর্ক দিব্বি করা যাবে, অন্য ধর্মের মানুষ হত্যা করলে ছওয়াব হবে, অমুসলিম মরলে তার জন্য বদদোয়া করতে হবে, ইসলাম ছাড়া অন্যসব ধর্মকে মেরে তাবা করতে হবে, স্ত্রীদেরকে দিব্বি পেটানো যাবে, মেয়ে মানুষকে (চেহারা ঢেকে) বোরখা পড়াতে হবে এবং গৃহে বন্দী রাখতে হবে (আরও কত উদ্ভট অবান্তর কথা৮....... (মায়াযাল্লাহ) পৃঃ২ । পৃষ্ঠা সাত এ লিখেছেন, ‘ইসলাম বর্তমান বিশ্বের সভ্যতার প্রতি একটা বিরাট হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। তাই ইসলামের বিষদাঁত ভেংগে শান্তির ধর্ম বানানো সবার আজ দায়িত্ব।.........এটা হবে তখন শান্তির ইসলাম, যেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি শান্তির খ্রীস্টান, শান্তির জুইশ, শান্তির হিন্দু এবং শান্তির বৌদ্ধ বহাল তবিয়তে আছে.............’। সহযোগী হিসেবে সাথে রেখেছেন একই পথের পথিক বন্ধু জামাল হাসানকে। এদের যোগসুত্র বের করতে গিয়ে জামাল হাসানের ই-মেইলের বরাত দিয়ে অনলাইন জার্নাল সদালাপের তৎকালীন সম্পাদক জিয়াউদ্দীন লিখেছেন, ‘After we moved to this region and as I started to work with Dept. of Justice,……..I contacted my friend Dr. Khurshed Chowdhury……..(Date: Fri13,2001,5:30PM)।‘
দিগন্ত, নন্দিনী হোসেন, ঢাকাইয়া, নিত্যানন্দ, পরশপাথর, আবীসিনা, আমিল ইমানী, আয়েশা আহমেদ, দারিউস সিরাজী, ইমরান হোসেন, মোহাঃ সগীর, শেরখান, সাব্বির আহমেদ, সাইয়্যেদ এম. ইসলাম, সাইয়্যেদ ইব্রাহীসহ অন্য যে কোন নামেই ছাপা হোক না কেন, এটা যে রসুনের এক একটি কোয়া আর রসুনটি যে টলারেন্সের ঠিকাদার সেটি যে ফেইথফ্রিডম ডট অর্গ৯ তা আর কাউকে বলে কয়ে বুঝাতে হবে না। সেই সাথে ঢাকার দেখভাল করার জন্য শাহরিয়ার কবীরের উপর যে কি দায়িত্ব দেয়া রয়েছে তা উক্ত ওয়েব সাইট ব্রাউজ করলেই বোধ করি পরিষ্কার হবে। ফেইথফ্রিডমের মিশন সম্মন্ধে তারা নিজেরাই লিখেছে, প্রাক্তণ মুসলিম হিসেবে একনিষ্ঠতার সাথে পুর্ব ধর্ম ইসলামের কদর্যরুপ মানুষের নিকট উন্মোচন করা ইত্যাদি। এর সাথে ইন্ধন যোগাচ্ছে প্রতিবেশী দেশ থেকে পরিচালিত বাংলাদেশকে উগ্র ধর্মীয় ও অকার্যকর রাষ্ট্র প্রমাণ করার নিরন্তর প্রয়াসে লিপ্ত সাউথ এশিয়ান এনালাইসিস গ্রুপ বা সায়াগ (saag) ডট অর্গ১০।
ছদ্মনাম ছাড়াও ইসলামের বিরুদ্ধে লেখার আরেকটি নতুন সংযোজন হলো ই-মেইল জালিয়াতি বা ভূয়া ই-মেইল সৃষ্টি করে অত্যন্ত সুচতুরতার সাথে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার বা কমপক্ষে বিভ্রান্তি করার অপচেষ্টা। অন্যদিকে ইসলামপন্থীদের বোকা ভেবে একাজটি করলেও খোদার অমোঘ বিধানে দুনিয়াতেও পাপীর পাপ ধরার পড়ার কোন না কোন নিয়মও সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে। নিজের কম্পিউটারের অরিজিনাল আইপি এড্রেস ঠেকাতে রাউটার ব্যবহারের মাধ্যমে অসংখ্য ভূয়া আইপি এড্রেসের জন্ম দিয়ে অসৎ ঊদ্দেশ্য চরিতার্থ করার প্রয়াস ব্যর্থ করে দিচ্ছে এটিকেও ‘ডিটেক্ট’ করার নতুন কৌশল আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে। সম্প্রতি ইসলামী একটি দলকে বিভ্রান্ত করতে ওই দলের নিজস্ব নামে একাউন্ট ওপেন করে ইমেইল করতে গিয়ে ধরা পড়ে যান প্রধাণ একটি দলের আমেরিকা শাখার সাবেক এক নেতা। তার পার্সোনাল কম্পিউটারের আইপি এড্রেস ও বাসার ফোন নাম্বার ট্র্যাক করে দেখা যায় মেইলটি মূলত আসছে মেরীল্যান্ডের ওয়াশিংটন থেকে।
অন্য আরেকটি ঘটনার ঊদাহরণ হিসেবে আমরা ‘দৈনিক আমার দেশ’-র এ বছরের জুন মাসের ১, ৬ ও ৮ তারিখের অনলাইন সংস্করণের লীড নিউজের নীচে ‘আপনার মন্তব্য দিন’ এর ঘরে গেলে দেখতে পাব কিভাবে অন্য আরেকটি ইয়াহু গ্রুপ ডাহুক (Dahuk) থেকে অন্যজনদের লেখা চুরি করে প্রতিপক্ষ অন্য একটি দলের প্রধাণ নেতার নামে চালিয়ে দেয়া হয়েছে১১ । নিয়মিত ইন্টারনেটসেবীরা নিশ্চয়ই অবগত আছেন কোন্ চৌধুরী ও ভূঁইয়া নানা রং বেরঙের আঁকা বাকা লেখায় ইসলামী ব্যাক্তিত্বদের চরিত্র হননে সদা তৎপর।
আন্তর্জাতিক হিউম্যান রাইট্স এ্যাক্টে কোন ধর্ম, বর্ণ, গোত্রের বিরুদ্ধে হিংসা, ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানো অত্যন্ত গর্হিত ও দন্ডনীয় অপরাধ। যেহেতু এসব ষড়যন্ত্রের মূল হোতারা বেশীরভাগই কানাডায় বসবাসরত, আমরা সেদেশের ক্রিমিনাল কোডের দিকে নজর দিলে সেকশন ৩১৯ (১) এ দেখতে পাব (আমেরিকার আইনও মোটামুটি এরুপই );
319(1) Public incitement of hatred
Everyone who, by communicating statements in any public place, incites hatred against any identifiable group where such incitement is likely to lead to breach of the peace is guilty of
(a) an indictable offence and is liable to imprisonment for a term not exceeding two years; or
(b) an offence punishable on summary conviction.
শাস্তির এরকম সুস্পষ্ট বিধান থাকা সত্বেও দিনের পর দিন নিজেদের আড়ালে রেখে সরকারী অফিস-আদালত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাব, পাবলিক লাইব্রেরী ইত্যাদি ব্যবহার করে শুধু এক দল মানুষের মর্মমূলে খুঁজে খুঁজে স্পর্শকাতর বিষয়সমূহ বের করে আঘাত চালানোর যে উদ্দেশ্য কি তা আমরা উপরোক্ত সাঈদ কামরান মির্জারুপী ডঃ খোরশেদ আলম চৌধুরীর মুখ থেকে শুনলেই পরিষ্কার বুঝতে পারি,’...........অলৌকিকতা বা বিষদাঁতকে ধ্বংস করাই আমাদের আসল উদ্দেশ্য। ইসলামকে চিরতরে দুনিয়া থেকে নিচ্ছিন্ন করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এটা সম্ভবও নয়। ‘মীত’ বিহীন (বিষদাঁত বিহীন) ইসলাম আমাদের কোন ক্ষতি করবে না১২ ।
সাওয়া-উস-সাবিল বা সহজ, সরল ও ভারসাম্যপুর্ণ মধ্যমপথকে কলুষিত করতে যুগে যুগে শয়তানেরা কম কসুর করেনি। বনি আদমকে জাহান্নামের পথে নেয়ার জন্য শয়তান আল্লাহ্র নিকট যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল সেটি সে করবেই, তবে সত্যিকারের মুসলিম হিসেবে নব্য ও পুরোনো সব ষড়যন্ত্রের নাড়ি নক্ষত্র সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিফহাল থেকে এক খাদে দু’বার পা না দেয়া অথবা নিজেকে নিরাপদ দুরুত্বে রেখে তা মোকাবেলার প্রস্ততি গ্রহণই হল প্রিয় নবীজির বিশুদ্ধ সুন্নত।
লেখাটা নয়াদিগন্ত ছেপেছে
*লেখক একজন সংবাদ কর্মী, ইমেইলঃ [email protected]
.. ...........................................................................
সুত্রসমূহঃ
১. http://reborn-by-design.com/if-project03.html
২.http://www.mukto-mona.com/project/muktanwesa/1st_issue/pakhi_hoyew_Taslima.htm
৩.http://www.shodalap.com/mukhosh_alamgir.pdf
৪. Click This Link
৫. Click This Link
৬.http://www.bangladesh-web.com/view.php?hidDate=2004-03-
31&hidType=OPT&hidRecord=0000000000000000004863
৭. Click This Link
৮. http://www.shodalap.com/_MUKHOS_1.htm
৯. http://www.faithfreedom.org/Authors.htm
১০.www.saag.org
১১. Click This Link এবং Click This Link)
১২. http://www.shodalap.com/SKM_IslamicRitual.pdf
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০০৭ রাত ৯:৩০