ঘটনাটা ঘটেছিলো লাহোর স্টেডিয়ামে। ১৯৮৭ সালের ১৬ অক্টোবরে বিশ্বকাপে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ মুখোমুখি, যে জিতবে সেই দলেরই সেমিফাইনালের পথ পরিস্কার। প্রথমে ব্যাটিং এ নেমে ইমরান খান, সেলিম জাফর ও ওয়াসিম আকরামের বোলিং এর তোপের মুখে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস ২১৬ রানে থেমে যায়।
পাকিস্তান তাদের শুরুটা ভালোই করছিলো। তখন ৫ উইকেটে ১৮৩ রান পাকিস্তানের আর বোলিং এ ওয়ালস। পাকিস্তানের অধিনায়ক ইমরানের উইকেট নিলেন স্কোর দাড়ালো ১৮৩/৬, এরপর আবারো আঘাত হানলেন হাফ সেঞ্চুরী করা সেট ব্যাটসম্যান সেলিম ইউসুফের উইকেট নিয়ে এবং প্যাট্রিক পিটারসন এর ওভারে ২ রানে উইকেট চলে গেলে পাকিস্তানের স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ৪৯ ওভারে ৯ উইকেটে ২০৩ রান। তাদের শেষ ৪ উইকেটের পতন ঘটে ২০ রানের মধ্যে। শেষ ওভারে তখন পাকিস্তানের দরকার ১৪ রানের আর হাতে ১ উইকেট। ওভার করার জন্য স্যার ভিভ রিচার্ডস বল তুলে দেন ম্যাচের সবচেয়ে সফল বোলার ওয়ালসের হাতে যিনি ৯ ওভারে মাত্র ২৬ রানে ইতিমধ্যে ৪টি উইকেট তুলে নেন পাকিস্তানের। ম্যাচটা তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষেই কথা বলছে কেননা ক্রিজে তখন ছিলেন ২ লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান মুলত যারা বোলার আব্দুল কাদির এবং সেলিম জাফর। প্রথম বলে আব্দুল কাদির ১ রান দিয়ে সেলিম জাফরকে স্ট্রাইক দিলেন, একইভাবে সেলিম জাফর পরবর্তী বলে ১ রান নিলো, পাকিস্তানের তখন প্রয়োজন ৪ বলে ১২ রান। ওভারের ৩য় বলে কাদির ২ রান নিলেন, পরবর্তী বলে ওভার বাউন্ডারী মেরে সারা স্টেডিয়ামে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিলেন এবং ম্যাচ নিজেদের জয়ের সম্ভবনা বাড়িয়ে দিলেন। পরের বলে অর্থাৎ ৫ম বলে ২ রান নিলে শেষ বলে জয়ের জন্য ২ রানের দরকার হয়। ঘটনাটি এর পরের বলেই ঘটে যায়, যা ইতিহাসের পাতায় লিখা হয়ে যায় সবসময়ের জন্য।
ওয়ালস বল করার জন্য দৌড় শুরু করেন কিন্তু বল করার পুর্ব মুহূর্তে থেমে যান বল করা থেকে, সেলিম জাফর যিনি নন-স্ট্রাইকিং ছিলেন ক্রিজের লাইন ছেড়ে বের হয়ে গেছেন, ওয়ালস অনাসায়ে উইকেট ফেলে আউট করে দিতে পারতেন সেলিম জাফরকে কিন্তু তিনি তা করলেন না, খেলোয়ারসুলভ আচরণ দেখিয়ে পুনরায় বল করার জন্য চলে যান। আব্দুল কাদির শেষ বলে প্রয়োজনীয় ২ রান করে পাকিস্তানকে জয় এনে এবং সেমি-ফাইনালে পৌছে দিলো। অন্যদিকে ২ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়াররা ছিটকে গেলো টুর্নামেন্ট থেকে।
হেরে গেলো ম্যাচ এমনকি টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকেও গেলো কিন্তু ম্যাচটা সেদিন শুধুই ছিলো ওয়ালসের। স্থানীয় সমর্থকরা তাকে সম্মান জানিয়ে হাতে বোনা কার্পেট প্রদান করেন।
পুর্বে প্রকাশিত