আধুনিককালে বিজ্ঞান ধর্মযাজকদের কাছ থেকে চিকিৎসা পেশাকে আলাদা করলেও নৈতিকতার সঙ্গে এ পেশার সম্পর্কটা থেকেই যায়। হিপোক্রেটিসের ‘ট্রিটিজ অব মেডিসিন’ এবং চরকের প্রতিজ্ঞা (‘ওথ’) পড়লে আমরা দেখব, তাঁরা দুজনই কতগুলো নৈতিক বিষয়ে চিকিৎসকদের পূর্বপ্রতিজ্ঞা বা ‘ওথ’ নেওয়ার কথা বলেছেন। এতে বোঝা যায়, তাঁরা চিকিৎসকের নৈতিকতার ওপর যথেষ্ট জোর দিয়েছেন। বিশেষ করে, তাঁরা চিকিৎসার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ, ধনী-দরিদ্র, দাস-দাসী, শত্রু-মিত্র সব রোগীকে সমান চোখে দেখা, রোগীর গোপনীয়তা রক্ষা করা, গর্ভপাতে সহায়তা না করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
আধুনিককালে চিকিৎসা ক্রমশ বিজ্ঞানভিত্তিক হয়ে উঠলেও চিকিৎসকের নৈতিকতা কখনো উপেক্ষিত হয়নি; বরং চিকিৎসকের এই নৈতিক অবস্থানই চিকিৎসককে রোগীর কাছে আস্থাভাজন করে তুলেছে, তাঁকে মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। অনেক সময় এমনও দেখা গেছে, একজন চিকিৎসকই একসময় হয়ে উঠেছেন রোগীর সবচেয়ে বিশ্বাসভাজন ব্যক্তি, রোগী এমনকি তাঁর পরিবারের অভিভাবক, ফিলোসফার ও গাইড।
চিকিৎসা পেশা মানুষের কাছে অনন্য এক পেশা হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছে আরও এক কারণে। যেমন, আইন ও চিকিৎসা—এ দুটি স্বাধীন পেশা হলেও একজন আইনজীবী তাঁর মক্কেলের কেসের ধরন অনুযায়ী ফি কমবেশি করতে পারেন। কিন্তু একজন চিকিৎসক তা করেন না। রোগের ধরন অনুযায়ী বা চিকিৎসার জন্য রোগীকে প্রদত্ত সময় অনুযায়ী তাঁর ফি কমবেশি হয় না; বরং একজন চিকিৎসক যোগ্যতা অনুযায়ী যদি তাঁর ফি ২০০ টাকা নির্ধারণ করে থাকেন, তবে তা অনধিক ২০০ টাকা হিসেবেই গণ্য হয়। অর্থাৎ চিকিৎসক কোনো রোগীর কাছ থেকে তাঁর নির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি রাখবেন না, বরং এর চেয়ে কম রাখতে পারেন। রোগীর আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করে তিনি কারোর কাছ থেকে কোনো ফি নাও নিতে পারেন!!
লিংক