somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাল্পনিক স্বপ্ন!

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০১০-১১ সালের দিককার কথা। তখন সবেমাত্র নতুন নতুন ফেসবুকে একাউন্ট খুলেছি। মাধ্যমিকের বাচ্চা ছিলাম তাই নতুন কিছুতে খুব দ্রুতই নেশা লেগে যেত। ফেসবুকেও ব্যতিক্রম হলো না। দিনের বেশিরভাগ সময়টা ফেসবুকেই কেটে যেত। বেশ ভালোই কেটে যাচ্ছিলো দিনকাল। ফেসবুকে ঘুরতে ঘুরতে হঠাত্ একদিন একটা মেয়ের প্রোফাইলে চোখ আটকে গেল। কেমন একটা অদ্ভুত টাইপের প্রোফাইল পিকচার দেওয়া ছিল। পরে সেখান থেকে মেয়ের আইডিতে ঢুকে এবাউট সেকশনে গিয়ে ঘুরে দেখতে থাকলাম। এত সুন্দর করে গুছিয়ে কেউ নিজের সম্পর্কে লিখতে পারে ধারণা ছিলনা তখন। আমার নিজেরও বেশ আগে থেকেই লেখালিখির ওপরে ঝোঁক ছিল কিন্তু আমি কোনো কালেই ভালো লিখতে পারতাম না। এমনকি আজো পারিনা। দেখা যায় লেখা শুরু করছি চাঁদ নিয়ে, লেখা গিয়ে শেষ হইছে নেপচুনে :| তো যাইহোক মেয়েটাকে কিছুটা টুকটাক আমার মত মনে হয়েছিল দেখে কোনো দিক চিন্তা না করেই দিলাম রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে। সম্ভবত তিন কি চার দিন পরে মেয়ে আমার রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করে। ভাবলাম "হাই" লিখে একটা ম্যাসেজ দেই। তার আগেই দেখি মেয়ের ম্যাসেজ #:-S
মেয়েঃ আপনি আমাকে চেনেন?
আমিঃ জ্বি না চিনিনা।
মেয়েঃ তাহলে রিকুয়েস্ট দিলেন কেন?
আমিঃ আপনার নিজের সম্পর্কে লেখা পড়ে ভালো লাগলো অনেক সেইজন্য!
মেয়েঃ হাহ!! আজকালকার সব ছেলেদেরই কমন ডায়লগ এটা!
আমিঃ আনকমন ডায়লগ কি হতে পারে? দুই একটা বলেন তো। তাহলে সেরকম কিছু লিখে আবার আপনার প্রশ্নের উত্তর দেই :D
মেয়েঃ আপনার দেখি খুব ভাব! X( এত ভাব নেওয়া পাব্লিকের সাথে আমি কথা বলিনা!

এরপর প্রায় ১২-১৩ দিন কোনো কথা হয়নি...

প্রায় দেড় বছর পর...

আমি আর মেয়ে পাশাপাশি এক রিক্সায় বসে সায়েন্সল্যাবের সামনের রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি। গন্তব্য নিউ মার্কেট! সামনে ফাল্গুন তাই তাকে পছন্দ করে শাড়ি কিনে দিতে হবে। এরকমই ছোট ছোট কতশত আবদার থাকে দুইজনের!! প্রতিদিন ম্যাসেঞ্জারে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে দুইজনে নিজেদের স্বপ্ন গুলোকে বুনতাম! আহা জীবন কত সুন্দর - এরকম একটা ফিল হতো তখন!

জীবন কতটা সুন্দর সেটা বুঝলাম আরো ৪ বছর পরে। তখন সবেমাত্র ভার্সিটির সেকেন্ড ইয়ার শেষ করে থার্ড ইয়ারে উঠেছি। হঠাত একদিন মেয়েটা বললো তার বাসা থেকে বিয়ের তোড়জোড় চলতেছে। কিছু একটা করো! শুনে তো আমার মাথা খারাপ হলো। কি করা যায় এটা ভাবতে ভাবতেই দিন পার হতে লাগলো আর শেষমেশ আমি বেশ ভালভাবেই বুঝতে পারলাম এখন আমার দ্বারা কিছু করা সম্ভব না। এতকিছু ভাবতে ভাবতেই একদিন বেশ বুঝতে পারলাম আমার আর মেয়ের মাঝে বেশ কিছুটা দূরত্ব এসে গেছে। মেয়ে ঠিকমতো ক্লাসে আসে না আর আমার পড়াশোনা তখন চাঁদের দেশে পালিয়েছে।

বেশ কিছুদিন পর মেয়ে ক্লাসে এসে আমাকে বললো ক্লসের পর চা-এর গলিতে দেখা করতে। ক্লাসের পর বেশ ভয়ে ভয়ে চা-এর গলিতে গিয়ে দেখি অলরেডি দাঁড়িয়ে আছে। চা-এর কাপ হাতে নিয়ে দুইজনে মুখোমুখি দাড়ালাম। কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না। মেয়ে হঠাত বলে উঠলো, "আমাদের এখানেই থেমে যাওয়া উচিত ইমু। একসাথে দুইজনের আর এগোনো মনে হয় ঠিক হবেনা। দুইজনকে আলাদা পথে গিয়ে যার যার স্বপের দিকে এগোনো উচিত।" মেয়ে এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো শেষ করলো। আমি তখনো চুপচাপ ঠাই দাঁড়িয়ে। এছাড়া আর কিই বা করতে পারতাম? কি বলা উচিত আমার সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। শুধু লক্ষ করছিলাম কথা গুলো বলার সময় ওর চোখের পাতা কাঁপছিল। মেয়েটা হঠাত "আমাকে যেতে হবে এখন" বলে ঘুরে দাঁড়িয়ে হাটা শুরু করে। তখন নিচু গলায় শুধু একটা কথাই বলেছিলাম, "কিন্তু আমার স্বপ্ন তো তুমি ছিলে" হয়তো মেয়েটা শুনেছিল সে কথা! হয়তো শোনেইনি কখনো! কে জানে!

দুই মাস পর হঠাত একদিন ফেসবুকে মেয়ের ছবি দেখলাম। বিয়ের ছবি ছিল। কি সুন্দর-ই না দেখাচ্ছিল "আমার স্বপটাকে"! কিন্তু তখন হয়তো সেটা ভাবার মতও মানসিক অবস্থা আমার ছিলনা। আচ্ছা, আমাদের স্বপ্নগুলো হঠার করেই অন্যের হয়ে যায় কেন? নাকি স্বপ্নেরও ভাগ্য লেখা থাকে আগে থেকেই?
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:১৬
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×