somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তিনি যা বলে ছিলেন

২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী প্রসিকিউশনের বাধার মুখে আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, ২০১১ সালের অক্টোবরের ৩ তারিখ এই আদালতের তদানীন্তন চেয়ারম্যান নিজামুল হক আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পড়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমি দোষী না নির্দোষ? আপনি তখন এই আদালতের ৩ সদস্য বিশিষ্ট বিচারকদের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ন্যায় বিচারে ভ্রষ্ট পথ অনুস্মরণ করেছিলেন বিধায় একরাশ গ্লানি নিয়ে স্বেচ্ছায় সরে পড়তে হয়েছে। আজ সেই চেয়ারে আপনি সম্মানিত চেয়ারম্যান। এটাই আল্লাহর বিচার।

সেদিন তখনকার চেয়ারম্যান নিজামুল হকের প্রশ্নের জবাবে আমি যা বলেছিলাম, সেখান থেকেই আমার সামান্য কিছু বক্তব্য শুরু করছি। ন্যয়বিচারের স্বার্থে আপনাদের যা শোনা জরুরি বলে আমি মনে করি। নিশ্চয়ই আপনার মনে আছে আমি বলেছিলাম, আমার বিরুদ্ধে আনীত ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং শতাব্দীর জঘন্য ও নিকৃষ্টতম মিথ্যাচার। আল্লাহর কসম! আমার বিরুদ্ধে রচনা করা চার সহস্রাধিক পৃষ্ঠার প্রতিটি পাতার প্রতিটি লাইন, প্রতিটি শব্দ, প্রত্যেকটি বর্ণ মিথ্যা, মিথ্যা এবং মিথ্যা। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে কোনো এক দেলোয়ার শিকদারের করা অপরাধসমূহ আমার ওপর চাপিয়ে দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউশন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যার পাহাড় রচনা করেছেন।

আজ আমি আল্লাহর নামে শপথ নিয়ে আপনাদের সামনে বলতে চাই, সরকার ও তার রাষ্ট্রযন্ত্র কর্তৃক চিত্রিত ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপরাধের হত্যাকারী, লুণ্ঠন, গণহত্যাকারী, ধর্ষক, অগ্নিসংযোগকারী, দেলোয়ার শিকদার বা ‘দেলু' বা দেইল্যা রাজাকার আমি নই। আমি ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রিয় জন্মভূমি এই বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের নিকট চিরচেনা পবিত্র কুরআনের একজন তাফসীরকরক, কুরআনের পথে মানুষকে আহবানকারী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।

যে আমি সেই যৌবনকাল থেকেই শান্তি ও মানবতার উৎকর্ষ সাধনে পবিত্র কুরআনের শাশ্বত বাণী প্রচার করার লক্ষ্যে নিজ জন্ম ভূমি থেকে শুরু করে বিশ্বের অর্ধশত দেশ গ্রেফতারের পূর্ব পর্যন্ত ভ্রমণ করেছি, সেই আমি আজ ৭৩ বছর বয়সে জীবন সায়াহ্নে এসে সরকার ও সরকারি দলের দায়ের করা ‘ধর্মীয় মূল্যবোধের উপর আঘাত হানার' হাস্যকর ও মিথ্যা মামলায় গত ২৯ জুন ২০১০ থেকে আজ পর্যন্ত কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে মানবেতর অবস্থায় দিনাতিপাত করছি। অদৃষ্টের কি নির্মম পরিহাস!

আমার বিরুদ্ধে ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত হানার অভিযোগ উত্থাপন এবং তজ্জন্য আমাকে ত্বরিত গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করার কাজটি করলো এমন এক সরকার, যারা আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস কথাটি দেশের সংবিধানে বহাল রাখাকে সহ্য করতে না পেরে অবলীলায় তা মুছে দিতে কুণ্ঠাবোধ করেনি। যাহোক, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এই ৪২ বছরের মধ্যে আমার বিরুদ্ধে কোনো বিষয়েই কোনো মামলা ছিলো না। সামান্য একটি জিডিও ছিলো না। গণতন্ত্রের লেবাসধারী বর্তমান এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের বদান্যতায়, মহানুভবতায় মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে আজ আমি ১৭টি মামলার আসামী। সেই জুন ২০১০ থেকে অদ্যাবধি কথিত মানবতাবিরোধী ২০টি অপরাধের অভিযোগসহ ১৭টি মামলা আমার বিরুদ্ধে দায়ের করে এবং বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে সরকার আমাকে তাদের এক রাজনৈতিক তামাশার পাত্রে পরিণত করেছে, যা আজ দেশবাসীর কাছে মেঘমুক্ত আকাশে দ্বিপ্রহরের সূর্যের মতই স্পষ্ট।

মাননীয় আদালত, যে ২০টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আজ আপনাদের সম্মুখে আমি দন্ডায়মান, সেগুলো সরকারের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যেই সাজানো। ১৯৭১ সনে পিরোজপুর বা পাড়েরহাটে পাকবাহিনী যা ঘটিয়েছে, সেসব কাহিনী সৃজন করে চরম মিথ্যাবাদী ও প্রতারক এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও তার সহযোগীরা নীতি নৈতিকতার মূলে পদাঘাত করে আমার নামটি জুড়ে দিয়েছেন। মহান আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী, আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতায় বিশ্বাসী, মৃত্যুর পরের আযাবে বিশ্বাসী, পরকাল ও জাহান্নামের কঠিন শাস্তিতে বিশ্বাসী কোন মুসলমানের পক্ষে এতো জঘন্য মিথ্যাচার আদৌ সম্ভব নয়।

তদন্ত কর্মকর্তা এবং সহযোগীরা তাদের সৃজিত অভিযোগগুলো প্রমাণের জন্য কয়েকজন বিতর্কিত চরিত্র ভ্রষ্ট ও সরকারি সুবিধাভোগী দলীয় লোক ব্যতীত সাক্ষী প্রদানের জন্য কাউকেই হাজির করতে পারেননি।

এতদসত্ত্বেও প্রচন্ড ক্ষিপ্রতার সাথে এই ট্রাইব্যুনালের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিচার প্রক্রিয়ার সমাপ্তি টেনেছেন। তিনি আইন-কানুন, ন্যায়বিচারের শপথ, অভিযুক্ত হিসেবে আমার বক্তব্য প্রদানের প্রাপ্য অধিকার প্রদান কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করেননি বরং তিনি রায় ঘোষণার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। এরই মধ্যে ঘটে যায় মহান রাববুল আলামিনের হস্তক্ষেপের ঘটনা। আজ সেই একদা সমাপ্তকৃত বিতর্কিত মামলার পুনঃসমাপ্তির দ্বিতীয় আয়োজন। কিন্তু আমি পূর্বের ন্যায় একই উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি মামলা যেনো-তেনো প্রকারে শেষ করার সেই একই ত্রস্ততা।

মাননীয় আদালত, এই ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৃত বিবেচনায় আমার বিরুদ্ধে পরিচালিত মামলার রায় প্রকাশ করে গেছেন। সাবেক চেয়ারম্যান মিডিয়ায় প্রকাশিত স্কাইপি সংলাপকে মেনে নিয়ে অন্যায় ও বে-আইনীভাবে পরিচালিত বিচার কার্যের সকল দায়ভার বহন করে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে বিদায় হয়েছেন। ষড়যন্ত্র ও অন্যায়ভাবে বিচার কার্য পরিচালনার বিষয়টি তার স্কাইপি কথোপকথনে প্রকাশ পেয়েছে। সাবেক চেয়ারম্যানের বক্তব্যে প্রচ্ছন্নভাবে উঠে এসেছে কিভাবে সরকারের চাপে পড়ে, সুপ্রিম কোর্টের জনৈক বিচারপতির প্রলোভনে পড়ে, তথাকথিত ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের ডিকটেশন অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনা করে এবং তৃতীয় ব্যক্তির মাধ্যমে প্রসিকিউশনের সাথে অবৈধ যোগসাজসে বিচার কার্য পরিচালনায় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, আদালতের ক্ষমতাকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে আমার পক্ষের সাক্ষীর অগ্রিম তালিকা জমা দিতে বাধ্য করে সেই তালিকা প্রসিকিউশন এবং তাদের মাধ্যমে সরকার, সরকারি দল ও স্থানীয় প্রশাসনকে সরবরাহ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে সাক্ষীদের ওপর চাপ সৃষ্টি ও ভয় ভীতি দেখিয়ে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য আদালতে হাজির না হওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টিসহ নানাবিধ অনিয়ম ও বেআইনী কর্মপন্থার মাধ্যমে সমগ্র বিচার কার্যটি কলুষিত করেছেন।

এছাড়া সাবেক চেয়ারম্যানের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে সেইফ হাউজ স্ক্যান্ডাল, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে আমার সাক্ষীকে ডিবি পুলিশকর্তৃক অপহরণ ও গুম করার স্ক্যান্ডাল, ১৫ জন সাক্ষীর অনুপস্থিতিতে তদন্ত কর্মকর্তার জবানে তাদের বক্তব্য গ্রহণ করার স্ক্যান্ডালের মতো বিষয়গুলোও আমার মামলায় প্রভাব বিস্তার করে আছে।

এতো সব ষড়যন্ত্র ও স্ক্যান্ডাল জর্জরিত প্রসিডিংসকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের মাধ্যমে মূলত সাবেক চেয়ারম্যান নিজেই পরিত্যক্ত ও পরিত্যাজ্য ঘোষণা করে দিয়ে গেছেন। সুতরাং সেই পরিত্যাজ্য বিষয়ের ওপর ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার কাজ নির্ভর করা যেতে পারে কিভাবে!!!

মাননীয় আদালত, দেশবাসীর কাছে, বিশেষ করে আপনাদের কাছে আমার বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্র এবং ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচিত হওয়ার পরেও এই মামলা চলে কিভাবে? গত ২৩/০১/১৩ তারিখে ট্রাইবুনাল-২-এর চেয়ারম্যান ওবায়দুল হাসান শাহীন সাহেব বলেছেন, এই ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে। প্রধানমন্ত্রী চাইলে ট্রাইাব্যুনাল থাকবে, না চাইলে আমরা চলে যাবো। তাহলে মাননীয় আদালত, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে প্রতিষ্ঠিত ট্রাইব্যুনাল রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বাধীনভাবে বিচার পরিচালনা করবে কিভাবে? স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলছেন, বিচারকে দ্রুততর করা হবে। বিচার তাহলে কে করছে? এই ট্রাইব্যুনালের তাহলে প্রয়োজন কি? স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার অস্তিত্ব তাহলে রইলো কোথায়?

মাননীয় আদালত, আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগসমূহের ব্যাপারে সাবেক চেয়ারম্যানের মতামত বা রায় তার কথোপকথনেই প্রকাশিত হয়েছে। স্কাইপি সংলাপে তিনি স্বীকার করেছেন যে আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের সাথে আইনের খুব একটা সম্পর্ক নেই।

আমার বিরুদ্ধে পরিচালিত এই মামলাটি দেশী দরবারের মতোই। তার ভাষায়, সাঈদীর কেইসটা ডিফারেন্ট। এই সাঈদীর কেইসটার লগে আইনের সম্পর্ক খুব বেশি না। এডা আমাদের দেশী দরবারের মতই। ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যানের প্রকাশিত এই মতামত বা মন্তব্যের পর এই মামলা চলার নৈতিক অবস্থান কোথায় থাকে?

বিদায়ী চেয়ারম্যান আমার মামলাটি আদ্যোপ্রান্ত পরিচালিত করে একে যে দেশী দরবারের সাথে তুলনা করেছেন তার সাথে আমরা সকলেই পরিচিত। দেশী এই দরবার তথা গ্রাম্য শালিসী অনুষ্ঠিত হয় গ্রামের ছোট-খাটো ঝগড়া-বিবাদ নিয়ে। খুন, ধর্ষণ, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগের মত গুরুতর অপরাধ নিয়ে শালিস বা দরবার হয় না।

বিদায়ী চেয়ারম্যানের ভাষায়, ‘সরকার গেছে পাগল হইয়্যা, তারা একটা রায় চায়'। চেয়ারম্যান সাহেব ঠিকই বুঝেছিলেন যে, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সরকার আমাকে ঘায়েল করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কতগুলো ঘটনা সাজিয়ে, জঘন্য ও ন্যক্কারজনক কিছু অপবাদ দিয়ে আমার বিচারের নামে প্রহসনের আশ্রয় নিয়েছে। আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের ব্যাপারে বিশ্বাসযোগ্য কোনো সাক্ষী নেই, আমার কোন সংশ্লিষ্টতাও নেই। সুতরাং ট্রাইাব্যুনাল গঠন করে বিচার বিচার খেলা কেনো, দরবার করে মিটমাট করলেই তো চলে। এটিই ছিলো প্রাক্তন চেয়ারম্যান এর রায়।

মাননীয় আদালত, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার এর পূর্বে দু'বার ক্ষমতাসীন ছিলো। তখন আমি যুদ্ধাপরাধী ছিলাম না, আমার বিরুদ্ধে কোনো মামলাও হয়নি। একটি জিডিও হয়নি বাংলাদেশের কোথাও। আর তদন্ত কর্মকর্তা এই আদালতে বলেছেন, '৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের পর আমি নাকি '৮৫ সাল পর্যন্ত পলাতক ছিলাম। তিনি আমাকে ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম বলে মিথ্যাচার করেছেন। ১৯৭৯ সালে আমি সাধারণ সমর্থক হিসেবে জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করি। এর পূর্বে আমি কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থক ছিলাম না। ১৯৯০ সনের শুরু অবধি আমার রাজনৈতিক কোনো পরিচয়ও ছিল না। ১৯৮৯ সালে আমি জামায়াতের মজলিসে শূরায় সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হই। এরপর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য, নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও পরবর্তীতে তথাকথিত মানবতাবিরোধী এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে আপনার কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর পূর্ব পর্যন্ত আমি জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীরের দায়িত্ব পালন করছিলাম। রাজনীতিতে আমার তালিকাভুক্তি ১৯৭৯ সালে জামায়াতে ইসলামীর একজন সাধারণ সদস্য হিসেবে। উদ্দেশ্য পবিত্র কুরআনের মর্মবাণী ও আদর্শের প্রচারকে বৃহত্তর পরিসরে নিয়ে যাওয়া। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বাইরে আমার রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক তৎপরতায় সময় ব্যয় একেবারেই অনুল্লেখযোগ্য। সংকোচণহীনভাবে বলতে গেলে, রাজনীতির জটিল সমীকরণের বিষয়ে আমার অজ্ঞতা এবং সময়ের অভাবহেতু প্রচলিত রাজনীতিবিদ হিসেবে আমার অবস্থান একজন এ্যামেচার রাজনীতিবিদের পর্যায়ে।

দেশবাসী সাক্ষী, রাজনীতিবিদ হিসেবে আমার কখনো কোনকালেই তেমন কোন ভূমিকা ছিল না। বরাবরই আমার বিচরণ ছিলো কুরআনের ময়দানে। জনগণকে কুরআনের দাওয়াত পৌঁছানোই ছিল আমার কাজ। আমার তাফসীর মাহফিলগুলোতে হাজারো লাখো মানুষ অংশগ্রহণ করে। এইসব মাহফিল থেকে অসংখ্য অগণিত মানুষ সঠিক পথের দিশা পেয়েছে, নামাযি হয়েছে। এটাই কি আমার অপরাধ? দেশ বিদেশের লাখ-কোটি মানুষ আমার ওপর আস্থা রাখেন, আমাকে বিশ্বাস করেন, আমাকে ভালবাসেন। আমি সাঈদী লাখ-কোটি মানুষের চোখের পানি মিশ্রিত দোয়া ও ভালবাসায় সিক্ত। এই ভালবাসাই কি অপরাধ? বিগত অর্ধ শতাব্দী ধরে আমি কুরআনের দাওয়াত বাংলাদেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছি, এটাই কি আমার অপরাধ? আমি কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছি, এটাই কি আমার অপরাধ? মাননীয় আদালত এটা যদি আমার অপরাধ হয়ে থাকে তাহলে এ অপরাধে অপরাধী হয়ে হাজার বার ফাঁসির মঞ্চে যেতে আমি রাজি আছি।

মাননীয় আদালত, ১৯৬০ সালে ছাত্র জীবন শেষ করার পর থেকেই এদেশের সর্বত্র আমি পবিত্র কুরআনের তাফসীর, সীরাত মাহফিল, ওয়াজ-মাহফিল ও বিভিন্ন সেমিনার সিম্পোজিয়ামে বক্তব্য রেখে আসছি। মানুষকে সত্য ও সুন্দরের পথে, কল্যাণের পথে, হেদায়াতের দিকে উদাত্ত আহবান জানিয়ে বিরামহীন সফর করে যুগের পর যুগ অতিবাহিত করেছি। আমার মাহফিলগুলোতে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার জনতার উপচে পড়া উপস্থিতি এবং তাদের প্রাণঢালা আবেগ উচ্ছবাসে অনুপ্রাণিত হয়ে '৬০-এর দশক থেকেই পবিত্র কুরআন প্রচারকে আমার জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছি। সেই থেকে এটিই আমার প্রধান পরিচয় যে, আমি মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের প্রচারক, সত্য দ্বীনের প্রচারক, মানুষকে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশিত পথে, চির শান্তির মহাসড়কে যোগদানের জন্য একজন আহবানকারী।

আমার পবিত্র কুরআনের খেদমতের সাক্ষী ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের সবুজ শ্যামল, স্বাধীন-স্বার্বভৌম এই বাংলাদেশ। মূলত ১৯৭৪ থেকে আমার তাফসীর মাহফিল বাংলাদেশজুড়ে শুরু হয়। প্রতি বছর ধারাবাহিকভাবে আমি তাফসীর মাহফিল করেছি দেশের বিভিন্ন শহরে। এর মধ্যে কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় গ্রেফতারের পূর্ব পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কয়েকটি তাফসীর মাহফিলের কথা আমি উল্লেখ করছি।

চট্টগ্রাম প্যারেড গ্রাউন্ড ময়দানে প্রতি বছর ৫ দিন করে টানা ২৯ বছর। পবিত্র কাবা শরীফের সম্মানিত ইমাম এ মাহফিলে দু'বার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

খুলনা সার্কিট হাউজ ময়দানসহ শহরের বিভিন্ন মাঠে প্রতি বছর ২ দিন করে ৩৮ বছর।

সিলেট সরকারি আলীয়া মাদরাসা মাঠে প্রতি বছর ৩ দিন করে টানা ৩৩ বছর।

রাজশাহী সরকারি মাদরাসা মাঠে প্রতি বছর ৩ দিন করে এক টানা ৩৫ বছর।

বগুড়া শহরে প্রতি বছর ২ দিন করে একটানা ২৫ বছর।

ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে ময়দান, মতিঝিল হাই স্কুল মাঠ ও পল্টন ময়দানে প্রতি বছর ৩ দিন করে একটানা ৩৪ বছর।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত বায়তুল মোকররম মসজিদ প্রাঙ্গণে সীরাতুন্নবী (সাঃ) মাহফিলে প্রধান বক্তা হিসেবে টানা ২০ বছর। এসব মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতেন তদানীন্তন মহামান্য রাষ্ট্রপতি।

এই হাইকোর্ট মাজার প্রাঙ্গণে '৭০ দশকের মাঝামাঝি থেকে ধারাবাহিক ৪/৫ বছর মাহফিল করেছি, যেখানে সভাপতিত্ব করেছেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী, অংশগ্রহণ করেছেন অন্যান্য বিচারকমন্ডলী।

পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ, পাবনা স্টেডিয়াম, পাবনা পলিটেকনিক ইনঃ ময়দানসহ বিভিন্ন মাঠে প্রতি বছর ৩ দিন করে টানা ৩৭ বছর।

কুমিল্লা পাবলিক লাইব্রেরী ময়দান ও ঈদগাহ ময়দানে প্রতি বছর ৩ দিন করে টানা ২৮ বছর।

বরিশাল স্টেডিয়াম ও পরেশ সাগর ময়দান, ঝালকাঠী স্টেডিয়াম ময়দান ও পিরোজপুর সরকারি হাইস্কুল ও স্টেডিয়াম ময়দানে প্রতি বছর ২ দিন করে ২৬ বছর।

এতদ্ব্যতীত বাংলাদেশের এমন কোনো জেলা বা উপজেলা নেই সেখানে আমার মাহফিল হয়নি। উল্লেখযোগ্য শহরগুলোর মাহফিলের কোনো কোনোটিতে উপস্থিত থাকতেন দেশের রাষ্ট্রপতি, সেনা প্রধান, বিচারপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, সংসদের স্পিকার, মন্ত্রী, এমপি ও মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ।

অথচ মাননীয় আদালত, প্রসিকিউশনের দাবি আমি নাকি মহান স্বাধীনতা অর্জনের পর পালিয়ে ছিলাম। মিথ্যাচারেরও তো একটা সীমা থাকে!! তদন্ত কর্মকর্তা যাই রিপোর্ট করেছে প্রসিকিউশন সেটাকেই বেদবাক্য মনে করে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ঈমান বিসর্জন দিয়ে সমস্ত মেধা প্রজ্ঞা খাটিয়ে মিথ্যাকে সত্য বানাবার জন্য প্রাণান্ত হয়েছেন, আফসোস।

নিশ্চয়ই এ মিথ্যাচারের জন্য ইহকালে এবং কঠিন হাশরের ময়দানে প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থাকে চড়া মূল্য দিতে হবে ইনশাআল্লাহ, এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই।

মাননীয় আদালত, পরিশেষে বলতে চাই, আমি আমার সারা জীবন নাস্তিক্যবাদী ইসলাম বিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে কুরআন ও হাদীসের আলোকে বক্তব্য দিয়ে এসেছি। আমার মাহফিলে জনতার ঢল নামে। আমার মাহফিলে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ কিচ্ছা-কাহিনী শুনতে আসে না। কুরআনের দাওয়াত ও রাসুল (সাঃ)-এর জীবনাদর্শ জানতে আসেন। আল্লাহর স্বার্বভৌমত্ব ও একত্ববাদ এবং কুরআনের বিপ্লবী দাওয়াত প্রচারে আমি অকুণ্ঠচিত্ত। আমার এ দেহে প্রাণ থাকা পর্যন্ত এটিই আমার দৃঢ় অবস্থান। এর কোনো হেরফের হবার নয়। সরকার এটি অবগত বিধায় তাদের ইসলাম বিদ্বেষী মিশন বাস্তবায়নে আমাকে প্রধান অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করে আমাকে বিতর্কিত ও জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার এবং নিশ্চিহ্ন করার জন্যই আমার বিরুদ্ধে তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উত্থাপন করেছে। ১৯৯৬-২০০১ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে কিংবা '৭২ থেকে '৭৫ মেয়াদকালে ক্ষমতায় থাকাকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের ইসলাম বিদ্বেষী বর্তমান অবস্থান ছিল না বিধায় আমাকে তারা মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার কারণ খুঁজে পায়নি কিন্তু এবার ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদীদের সাথে আওয়ামী লীগ জোট বেঁধে সরকার আমাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মহানায়ক হিসেবে আবিষ্কার করেছে।

মাননীয় আদলত, ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৮ পর্যন্ত প্রতিবছর রমযান মাসে পবিত্র মক্কা মদীনায় থাকা আমার বার্ষিক রুটিনে পরিণত হয়েছিল। রুটিন মাফিক রমযান মাসে ২০০৯ সালে আমি ওমরাহ করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করলে বর্তমান সরকার আমাকে মক্কা শরীফ যেতে দিল না। হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের রায় পাওয়ার পরও আমাকে যেতে দেয়া হয়নি। আমাকে বিদেশ যেতে আটকে দেয়ার জন্য পবিত্র রমযান মাসে দেশ স্বাধীন হওয়ার ৪২ বছর পর পিরোজপুরে প্রথম বারের মত আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধসহ ২টা খুনের মামলা দায়ের করা হলো। রমযান মাসে পবিত্র মক্কা মদিনা যেতে না পেরে আমি মানসিক যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে পড়েছিলাম।

আল্লাহ তায়ালার অফুরন্ত মেহেরবাণীতে পবিত্র হজ্জের মাত্র দু'সপ্তাহ পূর্বে সৌদী বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজীজ আমাকে রাজকীয় মেহমান হিসেবে হজ্জ পালনের জন্য দাওয়াতপত্র ও যাতায়াতের টিকেট পাঠালেন। আমি দু'টা খুনের মিথ্যা মামলা মাথায় নিয়ে হজ্জ পালনে মক্কা শরীফ পৌঁছুলাম। হজের দু'দিন পরে মীনা কিংপ্যালেসে বাদশাহ লাঞ্চের দাওয়াত দিলেন। বাদশাহর সাথে করমর্দন হলো, কুশল বিনিময় হলো, পাশাপাশি টেবিলে খানা খেলাম। আমার মনে কোন দুর্বলতা থাকলে আমার জন্য এটা খুবই সহজ ছিলো যে, বাদশাহকে বলে সৌদি আরবে রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়া। কিন্তু মাননীয় আদালত, আমি তা করি নাই। হজের সকল কাজ সমাধা করে দেশে ফিরে এসেছি, আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো আমার দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন। মাননীয় বিচারপতিগণ কারো নির্দেশে বা চাপে পড়ে অথবা আদর্শিক শত্রু ভেবে কারো প্রতি অবিচার করবেন না। তারা আল্লাহ তায়ালা এবং নিজের সুস্থ বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকেই সিদ্ধান্ত নেবেন। মাননীয় আদালত, আমি আমার সে বিশ্বাস হারাতে চাই না।

মাননীয় আদালত, স্কাইপি ষড়যন্ত্র ধরা পড়ে যাওয়ার পরে এই বিচারের ওপর দেশবাসীর মতো আমার আস্থাও শূন্যের কোঠায়। তথাপি পুনর্গঠিত এই ট্রাইব্যুনালের মাননীয় বিচারপতিগণ শুধুমাত্র ও একমাত্র আল্লাহ তায়ালার নিকট দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহিতার অনুভূতি থেকে আপনারা আপনাদের সুবিবেচনা ও বিবেক দ্বারা পরিচালিত হয়ে এই মামলা নিত্তি করবেন, এই বিষয়ে আমি আশাবাদি হতে চাই, আস্থাশীল হতে চাই।

বর্তমান সরকার ও সরকারিদল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমাকে তাদের বিশাল প্রতিপক্ষ বানিয়ে তাদের সকল ক্ষমতার অপব্যবহার করে, যুদ্ধাপরাধের কল্পকাহিনী তৈরি করে কোনো এক দেলোয়ার শিকদারের অপরাধের দায় আমার ওপর চাপিয়ে দিয়ে আমাকে আজ আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। আমি একজন ব্যক্তি মাত্র। আমার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা এবং মিথ্যাচার একাকার হয়ে গিয়ে আমার জন্য যে ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক পরিস্থিতির আবহ সৃষ্টি করেছে তা উপলব্ধি করা কিংবা মোকাবিলা করার কোনো ক্ষমতাই আমার নেই।

মাননীয় আদালত, আমি আজ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বেপরোয়া যথেচ্ছাচার এবং তা বাস্তবায়নের এক আগ্রাসী মিথ্যাচারের শিকার। আপনাদের এই মহান আদালত রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমি ব্যক্তি সাঈদীকে আশ্রয় দেয়ার জন্য তথা ন্যায়বিচার করার জন্য ওয়াদাবদ্ধ। আমি আপনাদের সেই শপথ ও দায়বদ্ধতার বিষয়ে আস্থাশীল থাকতে চাই।

সবশেষে আবারও রাজাধিরাজ, সম্রাটের সম্রাট, সকল বিচারপতির মহাবিচারপতি আকাশ ও জমীনের সার্বভৌমত্বের একচ্ছত্র অধিপতি, মহান আরশের মালিক, সৃষ্টিকূলের স্রষ্টা, সর্বশক্তিমান আল্লাহ রাববুল আলামীনের নামে শপথ করে বলছি, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন মানবতাবিরোধী অপরাধ আমি করি নাই। আমার বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চারিতার্থ করার জন্য এবং আমাকে তাদের আদর্শিক শত্রু মনে করে সরকার কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে আমার বিরুদ্ধে শতাব্দীর জঘন্য ও নিকৃষ্টতম মিথ্যা এ মামলা পরিচালনা করেছেন। তাদের বর্ণিত জঘন্য মিথ্যাচার সত্য হলে আমার মমতাময়ী মায়ের ইন্তিকালের পরে তার জানাযা এবং এর ঠিক ৮ মাস পরেই আমার জ্যেষ্ঠ সন্তান রাফীক বিন সাঈদীর নামাযে জানাযায় ঢাকা, খুলনা ও পিরোজপুরে লাখ মানুষের সমাগম হতো না, জানাযায় মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নিতেন না। আমার মা ও ছেলের লাশ গোপনে গভীর রাতে ৫/১০ জন লোক নিয়ে জানাযা করে দাফন করতে হতো। মাননীয় আদালত, আমার বড় ছেলের ইন্তিকালের খবর শুনে মহান মুক্তিযুদ্ধের নবম সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার, এই মামলার সরকার পক্ষের কথিত সাক্ষী মেজর জিয়া উদ্দীন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর শাহজাহান ওমর বীর প্রতীক আমার শহীদবাগের বাসায় গিয়ে আমার পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দিয়েছেন, ঘণ্টাকাল আমার বাসায় অবস্থান করেছেন। সরকারের নীল-নকশা অনুযায়ী মিথ্যাবাদী তদন্ত কর্মকর্তা চিত্রিত রাজাকার ও দুর্ধর্ষ যুদ্ধাপরাধী যদি আমি হতাম, তাহলে উনাদের মত সম্মানীত মুক্তিযোদ্ধাদের আমার বাসায় যাওয়ার প্রশ্নই উঠতো না।

আমি আমার এলাকায় ৩টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেছি। এতে স্বনামখ্যাত অন্তত ২০/২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা আমাকে নির্বাচনে জেতাবার জন্য দিনরাত নিঃস্বার্থ পরিশ্রম করেছেন, গোটা পিরোজপুরবাসী এর সাক্ষী। তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউশনের বক্তব্য সত্য হলে এসব বীর মুক্তিযোদ্ধা তাদের মান-মর্যাদা ধূলায় ধুসরিত করে আমার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নির্বাচনী পরিশ্রম করতেন? হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা আমাকে ভোট দিতেন?

মাননীয় আদালত, আমি মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, হে আল্লাহ! আমার বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা, তার সহযোগী প্রসিকিউশন এবং মিথ্যা সাক্ষ্যদাতাদের হেদায়েত করো আর হেদায়েত তাদের নসীবে না থাকলে তাদের সকলকে শারীরিক, মানসিক ও পারিবারিকভাবে সে রকম অশান্তির আগুনে দগ্ধিভূত করো যেমনটি আমাকে, আমার পরিবারকে এবং বিশ্বব্যাপী আমার অগণিত ভক্তবৃন্দকে মানসিক যন্ত্রণা দিয়েছে। আর জাহান্নাম করো তাদের চিরস্থায়ী ঠিকানা।

হে মহান রাববুল আলামীন! এই আদালতের বিচারক মন্ডলীকে তোমাকে ভয় করে, পরকালের কঠিন শান্তিকে ভয় করে, সকল প্রকার চাপ এবং কারো নির্দেশ পালন বা কাউকে খুশি করার ঊর্ধ্বে উঠে শুধু তোমাকে ভয় করে এবং বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে ন্যায়বিচার করার তওফিক দান করো।

মাননীয় আদালত, আমি আমার সকল বিষয় সেই মহান আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিয়েছি, যিনি আমার কর্ম বিধায়ক এবং তাকেই আমি আমার একমাত্র অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করেছি। সাহায্যকারী হিসেবে মহান আরশের মালিক আল্লাহ রাববুল আলামীন-ই আমার জন্য যথেষ্ট।

মাননীয় আদালত, আমাকে কিছু কথা বলতে দেয়ায় আপনাদেরকে ধন্যবাদ।

মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী প্রসিকিউশনের বাধার মুখে আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, ২০১১ সালের অক্টোবরের ৩ তারিখ এই আদালতের তদানীন্তন চেয়ারম্যান নিজামুল হক আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পড়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমি দোষী না নির্দোষ? আপনি তখন এই আদালতের ৩ সদস্য বিশিষ্ট বিচারকদের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি ন্যায় বিচারে ভ্রষ্ট পথ অনুস্মরণ করেছিলেন বিধায় একরাশ গ্লানি নিয়ে স্বেচ্ছায় সরে পড়তে হয়েছে। আজ সেই চেয়ারে আপনি সম্মানিত চেয়ারম্যান। এটাই আল্লাহর বিচার।

সেদিন তখনকার চেয়ারম্যান নিজামুল হকের প্রশ্নের জবাবে আমি যা বলেছিলাম, সেখান থেকেই আমার সামান্য কিছু বক্তব্য শুরু করছি। ন্যয়বিচারের স্বার্থে আপনাদের যা শোনা জরুরি বলে আমি মনে করি। নিশ্চয়ই আপনার মনে আছে আমি বলেছিলাম, আমার বিরুদ্ধে আনীত ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং শতাব্দীর জঘন্য ও নিকৃষ্টতম মিথ্যাচার। আল্লাহর কসম! আমার বিরুদ্ধে রচনা করা চার সহস্রাধিক পৃষ্ঠার প্রতিটি পাতার প্রতিটি লাইন, প্রতিটি শব্দ, প্রত্যেকটি বর্ণ মিথ্যা, মিথ্যা এবং মিথ্যা। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে কোনো এক দেলোয়ার শিকদারের করা অপরাধসমূহ আমার ওপর চাপিয়ে দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউশন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যার পাহাড় রচনা করেছেন।

আজ আমি আল্লাহর নামে শপথ নিয়ে আপনাদের সামনে বলতে চাই, সরকার ও তার রাষ্ট্রযন্ত্র কর্তৃক চিত্রিত ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপরাধের হত্যাকারী, লুণ্ঠন, গণহত্যাকারী, ধর্ষক, অগ্নিসংযোগকারী, দেলোয়ার শিকদার বা ‘দেলু' বা দেইল্যা রাজাকার আমি নই। আমি ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রিয় জন্মভূমি এই বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের নিকট চিরচেনা পবিত্র কুরআনের একজন তাফসীরকরক, কুরআনের পথে মানুষকে আহবানকারী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।

যে আমি সেই যৌবনকাল থেকেই শান্তি ও মানবতার উৎকর্ষ সাধনে পবিত্র কুরআনের শাশ্বত বাণী প্রচার করার লক্ষ্যে নিজ জন্ম ভূমি থেকে শুরু করে বিশ্বের অর্ধশত দেশ গ্রেফতারের পূর্ব পর্যন্ত ভ্রমণ করেছি, সেই আমি আজ ৭৩ বছর বয়সে জীবন সায়াহ্নে এসে সরকার ও সরকারি দলের দায়ের করা ‘ধর্মীয় মূল্যবোধের উপর আঘাত হানার' হাস্যকর ও মিথ্যা মামলায় গত ২৯ জুন ২০১০ থেকে আজ পর্যন্ত কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে মানবেতর অবস্থায় দিনাতিপাত করছি। অদৃষ্টের কি নির্মম পরিহাস!

আমার বিরুদ্ধে ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত হানার অভিযোগ উত্থাপন এবং তজ্জন্য আমাকে ত্বরিত গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করার কাজটি করলো এমন এক সরকার, যারা আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস কথাটি দেশের সংবিধানে বহাল রাখাকে সহ্য করতে না পেরে অবলীলায় তা মুছে দিতে কুণ্ঠাবোধ করেনি। যাহোক, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এই ৪২ বছরের মধ্যে আমার বিরুদ্ধে কোনো বিষয়েই কোনো মামলা ছিলো না। সামান্য একটি জিডিও ছিলো না। গণতন্ত্রের লেবাসধারী বর্তমান এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের বদান্যতায়, মহানুভবতায় মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে আজ আমি ১৭টি মামলার আসামী। সেই জুন ২০১০ থেকে অদ্যাবধি কথিত মানবতাবিরোধী ২০টি অপরাধের অভিযোগসহ ১৭টি মামলা আমার বিরুদ্ধে দায়ের করে এবং বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে সরকার আমাকে তাদের এক রাজনৈতিক তামাশার পাত্রে পরিণত করেছে, যা আজ দেশবাসীর কাছে মেঘমুক্ত আকাশে দ্বিপ্রহরের সূর্যের মতই স্পষ্ট।

মাননীয় আদালত, যে ২০টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আজ আপনাদের সম্মুখে আমি দন্ডায়মান, সেগুলো সরকারের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যেই সাজানো। ১৯৭১ সনে পিরোজপুর বা পাড়েরহাটে পাকবাহিনী যা ঘটিয়েছে, সেসব কাহিনী সৃজন করে চরম মিথ্যাবাদী ও প্রতারক এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও তার সহযোগীরা নীতি নৈতিকতার মূলে পদাঘাত করে আমার নামটি জুড়ে দিয়েছেন। মহান আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাসী, আল্লাহর নিকট জবাবদিহিতায় বিশ্বাসী, মৃত্যুর পরের আযাবে বিশ্বাসী, পরকাল ও জাহান্নামের কঠিন শাস্তিতে বিশ্বাসী কোন মুসলমানের পক্ষে এতো জঘন্য মিথ্যাচার আদৌ সম্ভব নয়।

তদন্ত কর্মকর্তা এবং সহযোগীরা তাদের সৃজিত অভিযোগগুলো প্রমাণের জন্য কয়েকজন বিতর্কিত চরিত্র ভ্রষ্ট ও সরকারি সুবিধাভোগী দলীয় লোক ব্যতীত সাক্ষী প্রদানের জন্য কাউকেই হাজির করতে পারেননি।

এতদসত্ত্বেও প্রচন্ড ক্ষিপ্রতার সাথে এই ট্রাইব্যুনালের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিচার প্রক্রিয়ার সমাপ্তি টেনেছেন। তিনি আইন-কানুন, ন্যায়বিচারের শপথ, অভিযুক্ত হিসেবে আমার বক্তব্য প্রদানের প্রাপ্য অধিকার প্রদান কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করেননি বরং তিনি রায় ঘোষণার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। এরই মধ্যে ঘটে যায় মহান রাববুল আলামিনের হস্তক্ষেপের ঘটনা। আজ সেই একদা সমাপ্তকৃত বিতর্কিত মামলার পুনঃসমাপ্তির দ্বিতীয় আয়োজন। কিন্তু আমি পূর্বের ন্যায় একই উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি মামলা যেনো-তেনো প্রকারে শেষ করার সেই একই ত্রস্ততা।

মাননীয় আদালত, এই ট্রাইব্যুনালের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৃত বিবেচনায় আমার বিরুদ্ধে পরিচালিত মামলার রায় প্রকাশ করে গেছেন। সাবেক চেয়ারম্যান মিডিয়ায় প্রকাশিত স্কাইপি সংলাপকে মেনে নিয়ে অন্যায় ও বে-আইনীভাবে পরিচালিত বিচার কার্যের সকল দায়ভার বহন করে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে বিদায় হয়েছেন। ষড়যন্ত্র ও অন্যায়ভাবে বিচার কার্য পরিচালনার বিষয়টি তার স্কাইপি কথোপকথনে প্রকাশ পেয়েছে। সাবেক চেয়ারম্যানের বক্তব্যে প্রচ্ছন্নভাবে উঠে এসেছে কিভাবে সরকারের চাপে পড়ে, সুপ্রিম কোর্টের জনৈক বিচারপতির প্রলোভনে পড়ে, তথাকথিত ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের ডিকটেশন অনুযায়ী বিচারকার্য পরিচালনা করে এবং তৃতীয় ব্যক্তির মাধ্যমে প্রসিকিউশনের সাথে অবৈধ যোগসাজসে বিচার কার্য পরিচালনায় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, আদালতের ক্ষমতাকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে আমার পক্ষের সাক্ষীর অগ্রিম তালিকা জমা দিতে বাধ্য করে সেই তালিকা প্রসিকিউশন এবং তাদের মাধ্যমে সরকার, সরকারি দল ও স্থানীয় প্রশাসনকে সরবরাহ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করে সাক্ষীদের ওপর চাপ সৃষ্টি ও ভয় ভীতি দেখিয়ে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য আদালতে হাজির না হওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টিসহ নানাবিধ অনিয়ম ও বেআইনী কর্মপন্থার মাধ্যমে সমগ্র বিচার কার্যটি কলুষিত করেছেন।

এছাড়া সাবেক চেয়ারম্যানের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে সেইফ হাউজ স্ক্যান্ডাল, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে আমার সাক্ষীকে ডিবি পুলিশকর্তৃক অপহরণ ও গুম করার স্ক্যান্ডাল, ১৫ জন সাক্ষীর অনুপস্থিতিতে তদন্ত কর্মকর্তার জবানে তাদের বক্তব্য গ্রহণ করার স্ক্যান্ডালের মতো বিষয়গুলোও আমার মামলায় প্রভাব বিস্তার করে আছে।

এতো সব ষড়যন্ত্র ও স্ক্যান্ডাল জর্জরিত প্রসিডিংসকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের মাধ্যমে মূলত সাবেক চেয়ারম্যান নিজেই পরিত্যক্ত ও পরিত্যাজ্য ঘোষণা করে দিয়ে গেছেন। সুতরাং সেই পরিত্যাজ্য বিষয়ের ওপর ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার কাজ নির্ভর করা যেতে পারে কিভাবে!!!

মাননীয় আদালত, দেশবাসীর কাছে, বিশেষ করে আপনাদের কাছে আমার বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্র এবং ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্ম
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৪২
৭টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×