হ্যালো কে?
-আমি
আমি কে
-আমাকে চিনতে পারছিস না?
না।
-ফোন করতে বলছিস ক্যানো?
কে?(এবার মিরার গলায় সংকা)
-আমি।
আরে তুমি, তোমার গলা এরকম পুরুষ পুরুষ হেয়ে গেছে কেনো।
-কেনো আমি কি এখোনো সেই কিশোর আছি। বড় হয়েছি না বয়স বারছে দিন-দিন। একটু একটু করে হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছে জীবন। তার পর তোর খবর কি, কেমন আছিস তুই?
আমি কেমন আছি বাদ দেও, তুমি কেমন আছো?
-আমি আছি আলহামদুলিল্লাহ। তোর খবর বল।
এইতো আছি।
-সুনলাম বিয়ে করেছিস। জামাই কেমন?
ভালোইতো। সারারাত আমাকে গান সোনায়। তোমার বৌ কেমন আছে?
-ভালো।
-তোর জামাইর বয়স কতো?
হঠাৎ বয়সে চলে গেলে?
-কেনো যেনো মনে হলো তোর বয়স্ক কারো সাথে বিয়ে হয়েছে।
সেই আগে থেকে বলে দেবার স্বভাব তোমার আজো গেলনা। বয়স একটু বেশি তবে আমাকে খুব ভালো বাসে জানো।
-হুম তাইলেতো ভালোই আছিস, জামাই গানটান সুনায়, সারা রাত জেগে থাকিস। খারাপ কি?
হুম।
-বাচ্চা কাচ্চা নিছিস?
না, হচ্ছে না।
-ডাক্তার দেখাইছিস? চেকাপ করা।
না আমার জামাইর ডায়েবেটিকস আছে সমস্যা মনেহয় ওরই।
-তাহলে রাত জাগিস কেনো। এতে তো ডায়বেটিকস আরো বারে। তোর জামাই অফিস করেনা? সারা রাত জাগলে অফিস করে কখন?
আর বইলো না অফিস করেনা মানে, সারা দিনতো অফিসেই থাকে। মানুষ বলতে আমরা দুইজনই। পুরো ফ্লাট খালি পরে থাকে সারাটা সময়। একা একা সময় কাটানোই কষ্ট হয়ে যায় আমার। পুরো ফ্লট খালি কেউ নেই বোঝো অবস্হা, বলে মিরা একটা চোরা হাসি দেয়। এ হাসির মানে আমি বুঝি, আমি পাস কাটিয়ে যাই বলি- বাদ দে, এতোদিন পর তোর সাথে কথা অন্য কিছু বল।
কি বলবো?
-কিছু বলার নেই?
না।
-তাহলে ফোন রাখি। ঠিক আছে, ভালো থাকিস।
আরে দাড়াও সত্যিই কি ফোন রেখে দেবে।
-হু, অনন্ত কালতো আর তোর সাথে কথা চালাচালি করা যাবে না।
আচ্ছা দোস্ত তোমাকে একটা প্রশ্ন করি, সত্যিই কি তুমি আমায় ভালোবেসে ছিলে।
-না।
মিথ্যে বলছো কেনো? সত্যি বলো।
-সবকথা বলতে নেই।
আমার খুব জানতে ইচ্ছে হয়, খুব। মায়া ময় সেই সময় গুলো আমাকে বার বার তোমার কাছে নিয়ে যায়। আমি মেলাতে পারিনা তোমার জায়গায় অন্যকেউ আমার হাত ধরে, আমার পাসে সোয়, ঘেন্না লাগে আমার। তোমার কি এমন হয়।
-না হয়না। আমি আমার আমার বৌকে খুব ভালো বাসি।
তুমি কি সুখি।
-সুখ বড় আপেক্ষিক জিনিষ কখন কে কোথায় সুখ পাবে বোঝা মুসকিল।
তুমিকি সত্যিই আমাকে কোনদিন ভালো বাসোনি। অতচ দেখো, সেই উজ্জল জ্বল-জ্বলে সময় গুলোতে আমি তোমাকে অবিরাম ভালোবেসে গেছি। স্বপ্নের লাল ফিতায় তোমাকে নিয়ে একটু-একটু স্বপ্ন বুনেছি। তুমি কিভাবে দুম করে হাতছাড়া হয়ে গেলে আমার জীবন থেকে?
-চিরতরে হারিয়ে যাওয় কোনকিছু খুজে বেড়াতে নেই। এতে বর্তমান নষ্ট হয়।
তুমি কি আমার সাথে একটা বার দেখা করবে প্লিজ।
-না।
না কেনো?
-এখন তোর একটা আলাদা সংসার হয়ছে, সংসার হয়েছে আমারো। তোর স্বামী তোকে বিশ্বাস করে বোধ করি ভালোও বাসে, তার বিশ্বাসে আঘাত করা ঠিক হবেনা, তেমনটা হবেনা আমার বৌয়ের ও। আমিওতো তোমাকে বিশ্বাস করেছিলাম, কোনো বোধকরি টরি নেই- তোমাকে ভালোও বেসে ছিলাম, তাহলে কেনো আমাকে ছেড়ে চলে গেলে।
আমি লাচারে পরে যাই চিরো চেনা মানুষ গুলো যখন অচেনা এক আড়ালে হারিয়ে যায় তখন আর তাকে আমার আপন লাগেনা।
আমি বলি -রাখি এখন ফোনটা। অনেক বিল উঠছে।
ঠিক আছে তাহলে আমি ব্যাক করি।
- না এই নাম্বার আমার না, আমি ফোনের দোকান থেকে কল করেছি।
আমাকে এভাবে দুরে রখতে চাও কেনো। নিজের নাম্নার দিয়েও ফোনটা দিলানা। আমি নাম্বার পেয়ে যাবো বলে। ভাগ্যিস তোমার বন্ধুর সাথে আমার দেখা হয়েছিলো। ওর কাছে তোমার নাম্বার চাইলাম ও দিলো না। পরে আমার নাম্বার দিয়ে ওকে বলেছি তুমি যাতে ফোন দাও। এত অবিস্বাস তোমার আমার উপর।
আমি কিছু বলি না- আমি জানি ওর ভালো বাসা আমার প্রতি কত খানি। ও আমার নাম্বার পেলে সারা দিন ফোন করবে আমি চাইনা দুই সংসারে একসাথে আগুন লাগুক।
আমি তোমাকে যতটুকু ভালোবাসা দিয়েছি তার বিনিময়ে আমাকে একটা জিনিষ দেবে।
-কি?
একটা সন্তান, তুমি আমার ফ্লাটে একটা বার আসো, প্লিজ একটা বার আসো। বলে ও কেদে ওঠে। আমি নাউজুবিল্লাহ বলে, ফোনটা কেটে দেই।
আমার মোবাইলটা বেজে ওঠে। বৌ ফোন করেছে, আমি কাপা গলায় বলি হ্যালো। বৌ মিষ্টি গলায় বলে কৈ তুমি, জানো বাবু আমার পেটের ভেতরে আজকে দুইটা লাথি দিছে, আমি বুঝতে পারছি ও আমার ভেতরে আছে, আমাদের সন্তান বড়ে উঠছে আমার পেটের ভেতর। আমি আল্হামদুলিল্লাহ বলে রিকশা নেই। বাসায় যাবো। বৌটা প্রেগনেন্টে, কিছু আয়রন জাতীয় খাবার নিতে হবে, হিমোগ্লবিনও কিছুটা কম- দেখি গরুর কলিজা পাওয়া যায় কিনা।
আমার নিজের ভেতরের ফাকা ফাকা ভাবটা কেটে যেতে থাকে। রুপান্তরিত এই আমি আর আমার অতিত সামনা সামনি দাড়ায়, হয়তো আজ থেকে দুই বছর আগেও মিরার দেওয়া এরকম একটা অফার পেলে আমি দৌড়ে চলে যেতাম- টেষ্টস্টরেনের দাপা-দাপিতে আমি ঝাপিয়ে পরতাম পাপের আগুনে। আজ আমি যাবোনা, পাল্টে যাওয়া এই আমার ভেতরের আত্যা আমার মুখদিয়ে নাউজুবিল্লাহ পড়ায় আমি প্রভাবিত ধর্মে।
শেষ কথাঃ মিরার একটা মেয়ে হয়েছে। সমস্যা মিরারই, ওর পলিসিস্টিক ওভারিই ওর বাচ্চা না হওয়ার কারন। আর আমার হয়েছে একটা ছেলে, ছেলেটা হাটে মুখে অস্ফুটো বাবা বাবা ডাক তোলে ও দেখতে হয়েছে আমার মতন। ওকে দেখলে আমার চোখে জ্বল এসে যায়। অমি অবাক বিস্ময় নিয়ে ভাবি কি সুন্দর একটি মানব শিশু।
মুখ বন্ধঃ গল্পের সব চরিত্র কাল্পনিক কেবল পরকিয়ার চরিত্র ছাড়া, এটা একটা ব্যাধি, নানান সময় পরকিয়ার সুজগ এসে সামনে দাড়ায় আমাদের। আমরা হয়তো সেই সুজগ কে অগ্রহ্য করতে পারিনা। যার জবাবে খবর পাওয়া যায় অকাল খুনের। আমি আমার জীবন থেকে দেখেছি একমাত্র সঠিক ভাবে ধর্ম পালন এবং ফ্যমিলীবন্ডিংই পারে মানুষ কে এই আদিম কু অভ্যাসের হাত থেকে বাচাতে। গল্পের নাম "সেলফী বা জীবনের আদিমতা....." দিয়েছি কারন এখানে আমাকে আমি খুজের বেড়িয়েছি।
ছবিঃView this link
কিছু টাইপো থেকে গেছে সে জন্য দুঃখ প্রকাশ করলাম।
ফেইস বুকে আমার পেইজ দেখতে চাইলে নিচের লিংকে যানঃ
Click This Link
আমার রিসেন্ট একটি লেখাঃ
সুজানা এবং একটি কুত্তার শিশু বা নব জনমের নব প্রেমিকা আমার..।