মাতৃগর্ভের অন্ধকার থেকে এসেছি এই মানব গ্রহে
ভেবেছি নিঃশ্বাস নেব সবুজ আলো-বাতাসে,
গাইব প্রেম সৌন্দর্য ও প্রাণের গান, গুচ্ছ গুচ্ছ
ফুটবে ফুল বুকে, দুধেভাতে কাটবে দিন;
গরু ছাগল কেঁচো নয়, সৃষ্টির সেরা মানুষ আমি;
কিস্তু এ আমি কোথায় এলাম? এখানে দেখছি—
বিজয়ের নিশান ওড়ে দানবের পক্ষে; চারদিকে
ধ্বনিত হতে শুনি কুটিল ও নির্মম চিৎকার;
বারুদের ধোঁয়ায় বিষাক্ত হয়ে ওঠা বাতাসে
নিঃশ্বাস নিতে পারি না, অন্ধ হয়ে আসে চোখ;
মানুষের ছবি আঁকতে গিয়ে এঁকে ফেলি জন্তুর ছবি;
এ আমি কোথায় এলাম? এখানে দেখছি—
সামনের দিকে হাঁটতে গেলে হাঁটতে পারি না
সামনে এক পা ফেললে, শত মাইল পিছিয়ে পড়ি;
গান গাইতে গেলে আমার গলা থেকে
গানের সুর বেরোয় না, বেরোয় শোষণের মন্ত্র;
এ আমি কোথায় এলাম? এখানে দেখছি—
চারদিক থেকে অভ্যর্থনা জানান হয় গর্দভদের
অভ্যর্থনা জানান হয় নিষ্ঠুর জল্লাদদের
অভ্যর্থনা জানান হয় চক্রান্তপরায়ন যাদুকরদের;
এ আমি কোথায় এলাম? এখানে দেখছি—
সর্বত্র জ্বলে নরকের চেয়েও ভয়ানক তীব্র অন্ধকার;
চারদিকে অন্ধকারের উৎসব, যে-দিকেই তাকাই
অদ্ভুত হিংস্র গণ্ডার নেকড়ে হায়েনার মুখ;
নাকি মানুষগুলোই হয়েছে এমন ভয়ানক কুৎসিত?
কবিতাটি ''নিকাশের দায রেখে'' বই থেকে...