অরুন দা,আপনি কেমন আছেন?
বেচেঁ আছেন তো,নাকি গত শীতে হাপানির টান সহ্য করতে না পেরে বোচকা পেটরা বেধেঁ এখন স্বর্গের চিঠি বয়ে বেড়ান?
অরুন দা,আপনাকে বহুদিন দেখি না,
বহুদিন আপনার অপেক্ষায় মোড়ের দোকানে দাড়িয়ে সিগারেট ফুকি না,
বহুদিন আপানাকে দেখে হাসিতে আমার মুখ ভেসে যায় না,
বহুদিন আপনি হেসে বলেন না,‘চা না খাওয়াইলে চিঠি হারায়া ফেলামু’।
এখন আমার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে আপনাকে আর প্রয়োজন পড়ে না আমার,
এখন আমি চাইলেই বেজে উঠি এখানে ওখানে,
এখন মানুষ মানেই আমার কাছে একেকটি নাম্বার।
এখন মানুষের ঠিকানা মানে আর দরজা জানালা আর গলির নাম নয়,
ঠিকানা মানেই ই-মেইল ঠিকানা,কিছু আবোল তাবোল শব্দের পরে একটা ‘ এ্যাট’ চিহ্ন,
এখন মানুষ মানেই নাম্বার,দিনে রাতে প্যাকেজের ফাক গলিয়ে মনের ভাব প্রকাশ;
এখন কী দরকার আর ঝোলা কাধে নিয়ে আপনার এই কাটফাটা গরমে হেটে যাওয়া,
মোড়ের কোনে জীর্ণ ডাকবাক্স,
ডাকটিকিটের পেছনে চুমু খেয়ে খামের মলাট?
এখন আমি কথা বলতে চাইলেই যে কোন সময় যে কারো ঘরে,
ব্যস্ত রাস্তা পেরুনোর ফাকে ,কিংবা বাসের দরজায় ঝুলতে ঝুলতে
প্রেমিকাকে চুমু খাওয়ার সময়,কান্নার সময়,
বিষন্নতার সময়,আনন্দের সময়,
ক্রিং ক্রিং করে মুঠোফোনে বেজে উঠি।
এখন আমি আর বুকে চেপে হলুদ খামের গন্ধ শুকি না,
চকিত চেয়ে,আয়েশ করে ছাদে বসে নির্জনে খুলি না মনোরম খাম,
এখন কথা মানেই কথা,খামের ভেতরে শুকিয়ে যাওয়া গোলাপ কুড়ি নয়,
এখন কথা মানেই কথা,ভুল বানান কাটাকুটির আল্পনা নয়,
এখন কথা মানেই কথা,ভুল ছন্দের কবিতা লেখার অপ্রয়াস নয়।
এখন আমার কথার ভীড়ে কথা হারিয়ে যায়,
এখন চ্যাট আর ই-মেইল বক্সে জমা না রাখলে কথা মুছে যায়;
হায়,এখন আর অরুন দত্তের বয়ে আনা কথার খামের মতো
কোন কথা আর বহুদিন ধরে বুকে জমে থাকে না।