৭১ এর বিজয়ের আনন্দ এখন আর নেই তা অনুমেয়। আছে 'বিজয় দিবস' পালন। মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি মুক্তিযুদ্ধা দেখেছি। মুক্তির কথা অনেক শুনেছি, যুদ্ধ নিয়ে অনেক কিছু এখনও আমাদের আন্দাজের বা কল্পনার বাইরে, তার পরেও এখনো আমরা মুক্তি পায়নি তা কম হলেও নিশ্চিত করে বলা যায়। মুক্তিযুদ্ধের ডকুমেন্টারী, বই, উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ, কবিতা ইত্যাদি দেখলে/পড়লে বুকে কান্নার রুল ভাসে, রক্ত হয় বাস্প, মুখ বুঝি মলিন হয়, তার পরেও আগামীর আশায় বুকের হতাশা ঝরাই। স্বাধীনতার অনেক বছর পরের ইতিহাসও লুটেরাজ, জারজ পাকিস্তানী আমল অপেক্ষা খুব ভাল যাচ্ছেনা বোধয়। তারা(পাকি) নাকি চাইলেই যে কোন কাজ করতে পারত যদিও তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদেরর আগুন ধিকিধিকি জ্বলত।পাকিদের নারীর প্রয়োজন হলে ঘরে ডুকেই স্বামী, পিতা/ভাই কে হত্যা করেই বা না করেই নারীর নরমাংশের স্বাদ অনায়াসে নিতে পারত,যে কারো গবাদি পুশু জবে করে খেতে পারত, এভাবে আরো অনেক কিছু সংশয়হীনভাবে করতে পারত, কাউকে তার জবাবও দিতে হতো না।যার রুপ কিছুটা বোধগম্য হচ্ছে, আজকের বাংলাদেশে।
স্বাধীনতা কি কল্পনাতেও ভাসত না, ভাসার কথাও না। অবরুদ্ধ থেকে যখন ৭১ এ অল্প স্বাধীন হই, তাতেও আমরা খুশিতে আত্মহারা ছিলাম। আর যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে বাঙ্গালী জাতির পিতাকে বলতে হলো- যারা ঠিকানায় পিতার নাম লিখতে পারোনা, তাতে আমার নাম লিখ; এ হলো মুক্তিযুদ্ধের একাংশ, পাকিরা কি করছিল তা এ বাক্যে সহজে অনুমেয়। এক কথায় স্বাধীনহীনতার কষ্ট যে দেখেনি বা পায়নি তাকে বুঝা ত দুরের কথা, তা অনুমান করাও দুঃখসাধ্য। তবে অভিনয়ে এ কষ্টের মর্মাহত হওয়া যায় মূলে নয়।
১৬ ডিসেম্বর'১৬ইং, রোজ শুক্রবার। সকাল আটটায় চবি ক্যাম্পাসে উপস্থিত হলাম, উদ্দেশ্য, পুস্পমাল্য দিয়ে দেশের জন্য আত্মত্যাগীকে ক্ষুদ্র শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন। সে বিজয় দিবসে পরাজয় বোধ করলাম।পুস্পমাল্য নিয়ে যেন আমরা কিছু অপরাধী চবি স্বাধীনতা মুরালে উপস্থিত হলাম,যাওয়ার সময় তিন বন্ধুকে নিয়েগেলেও পুস্প দেওয়ার সময় তারা যেন অপরাধী! তাই ছাত্রলীগের ভয়ে পালিয়ে গেছে, আরো দুই বন্ধু, শীত ও অধীনতার ভয়ে দিবস এডিয়ে গেছে। এ হলো স্বাধীনতার পয়তাল্লিশ বছরের পরের কথা। আমরা শিবির বা দেশদ্রোহী দল নই।
কেন স্বাধীনহীনতায় ভোগী? এ কথা লিখার আগে কিছু কথা বলা প্রয়োজন। একটি দেশের জনগনকে তিন কিসিমে ভাগ করা যায়।(কাল্পনিক)
১। নিম্নমান
২।মধ্যমান
৩।উচ্চমান
এখানে উচ্চ ও নিম্নমান জনগন অধিকাংশ সময় নিজের নিয়ে চিন্তায়, কিভাবে নিজে খায়, অন্যের সম্পদ খাওয়া যায় এ নিয়ে বেশী ব্যস্ত। মধ্যমান জনগনই সব সময় ব্যতীক্রম, এদের ইতিহাস উজ্জ্বল, এরাই পারে সব কিছু করতে, এরাই পারে জাতির পরিবর্তন করতে। মধ্যমানে- তরুণ, শিক্ষিত, পরিশ্রমী ইত্যাদি জনগণ। এদের যদি আমরা বলিয়ান করতে পারি দেশ নয়, পুরো পৃথীবিটা আমাদের হাতেই চলে আসবে। তার জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম ও বাস্তবিক জ্ঞান(বিজ্ঞান মনস্ক)। আর ধর্ম ব্যক্তিকে শান্তি দিতে পারে, দেশকে নয়, জাতিকেও নয়। যে ভাই রক্ত চুষে তাকে কিভাবে ধর্মের ভাই বলতে পারি? আমাদেরকে ভারতের সাহায্য নিতে হয়েছে একমাত্র পাকিস্তানের কারণে, দ্বিজাতি তত্ত্ব হচ্ছে গাঞ্জাখুরী তত্ত্ব, শোষণের তত্ত্ব, ধর্মের তত্ত্ব নয়!
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩০