রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধাপক রেজাউল করিম খুন হয়েছেন। তাঁর এক ছাত্রকে ফোন করলাম। বিষণ্ণ গলায় সে কিছু স্মৃতিচারণ করল।
ক্লাসরুমে ফ্যান চললে পেছনের বেঞ্চে বসা ছাত্রছাত্রীরা কথা শুনতে পায় না। অথচ গরমকেও তো অস্বীকার করা চলে না। এজন্য রেজাউল করিম স্যার খুব সকালবেলায় ক্লাস নিতেন। সকালের ঠাণ্ডা বাতাসে নিবেদিতপ্রাণ এই শিক্ষক নিজেকে উজাড় করে দিতেন, স্যারের এই আন্তরিকতার বিষয়টা ছাত্রছাত্রীরাও জানতো।সকালের ক্লাসে উপস্থিতি কখনো কম হত না।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিজের ডিপার্টমেন্টে সময় কম দেন, বাইরে ক্লাস নেন প্রবল উদ্দীপনায়- সবাই না হলেও অধিকাংশ শিক্ষকই এই অর্থনৈতিক তত্ত্বের অনুসারী। রেজাউল করিম স্যার ব্যতিক্রম ছিলেন। নিজের সন্তানদের দায়িত্ব পালনের বাইরে কিছু ভাবতে পারতেন না।
শিক্ষকরা আরেকটা কাজ করতেন, বাইরে পরীক্ষা নিতে গেলে বেশি নম্বর দিতেন, অথচ নিজের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নম্বর দিতে কার্পণ্য করতেন। এই বৈষম্য নিয়ে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেছিলেন রেজাউল করিম স্যার। নির্বিবাদী এই মানুষ অন্যায় সহ্য করতেন না।
টিভিতে দেখলাম, পুলিশ মৃত্যুর মোটিভ খুঁজছে। হায়রে পুলিশ! সিনেমার শেষ দৃশ্যে পান চিবুতে চিবুতে আশা বিরাট ভুঁড়িওয়ালা আবহমান বাংলার শাশ্বত পুলিশ বলে কথা! সুড়সুড়ি-দেনেওয়ালা জোকার শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করার সময় তাদের ক্ষিপ্রতা ও দক্ষতার নিদর্শন দেখা গেছে। অথচ এখনো তারা রেজাউল স্যারকে হত্যার মোটিভ খুঁজে পাচ্ছে না, এর কোন মানে হয়?
রাজবংশে জন্ম না নেয়া এবং একজন সৎ কর্তব্যপরায়ণ মানুষ হওয়া-
বাংলাদেশে এ দুটো কি যথেষ্ট বড় অপরাধ নয়?