~~“ কেন নামায আদায় করা ফরয ”~~
[ লেখাটি একটু বড় বিধায় ধৈর্য সহকারে পড়ুন ;
আপনার মূল্যবান সময় অপচয় হবেনা কথা দিলাম ]
মহান আল্লাহপাক মানুষ ও জ্বীন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র তার ইবাদাত করার জন্য।
একাবিংশ শতাব্দীর এই যুগে যখন বিজ্ঞান তার উৎকর্ষতার সর্বশ্রেষ্ঠ সময় অতিবাহিত করছে মানুষের মনে আজ এই প্রশ্ন আসতেই পারে কেন মাহান রাব্বুল আলামিন মানুষের জন্য নামায ফরজ করে দিল এবং কেন নামায আদায়ের ব্যাপারে এত বেশি তাগিদ দিলেন?
গভীর ভাবে বিশ্লেষন করলে এই প্রশ্নের উত্তরে ৪টি বিভাগ আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়।
তা হলঃ
১. আধ্যাত্মিক বিভাগ,
২. রাজনৈতিক বিভাগ,
৩. সামাজিক বিভাগ এবং
৪. বৈজ্ঞানিক বিভাগ।
১. আধ্যাত্মিক বিভাগঃ
পৃথিবীর সব কর্মকান্ড থেকে নিজেকে আড়াল করে মানুষ যখন নামাযে দন্ডয়মান হয়ে যায় তখন আল্লাহর সাথে মানুষের আত্মিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। যা আধ্যাত্মিক বিভাগ হিসাবে উল্লেখ করা হয়।
২. রাজনৈতিক বিভাগঃ
রাজনৈতিক বিভাগে বলা হয় যখন মুয়াজ্জিনের আহ্বানে মানব সকল নামাযের জন্য একত্রিত হয় তখন তাদের মধ্যে থেকে
একজনকে ইমাম নির্বাচিত করা হয়। কিছু সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে নামায কায়েমের মধ্যে নিহিত রয়েছে প্রকৃত আধুনিক গণতন্ত্র।
৩. সামাজিক বিভাগঃ
নামায আদায়ের জন্য যখন সবাই ইমামের পিছনে সারিবদ্ধ হয় তখন কে ধনী, কে গরীব, কে কাল, কে ফর্সা ইত্যাদির বিচার করা হয়না বরং সমগ্র মানব জাতীকে একটি প্লাটফর্মে দাড় করিয়ে সুন্দর শান্তিপূর্ণ এক নতুন সমাজ নির্মানে নামায সহায়তা করে।
৪. বৈজ্ঞানিক বিভাগ
বৈজ্ঞানিক বিভাগ নিয়ে সংক্ষিপ্ত পরিসরে আলোচনা করা সম্ভাব নয়।
শুধু মাত্র একটি বিষয় নিয়ে বলার চেষ্টা করব।
মহান রাব্বুল আলামীন বলেন সুন্দর আকৃতি প্রদান করতে মানব দেহ কে এমন ভাবে গড়েছেন যে এর গঠন যেমন বিচিত্র তেমনই এর বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কাজ করার ধরন বিচিত্র।
মানব দেহে ২০৬খান হাড় আছে আর ৩৬০ জোড়া সন্ধি আছে যেগুলো নিয়মিত নড়াচড়া করা অপরিহার্য।
মানব দেহ এমনভাবে তৈরী যেখানে আমাদের মুখম্ডল ও মস্তিস্ক হৃদপিন্ডের উপর অবস্থান করে।
যদি না ইচ্ছাকৃত কেহ মাথানত না করে।
হৃদপিন্ড মানুষের দেহের বাম পাশে অবস্থান করে।
যার কাজ হলো সিস্টোলিক ও ডায়াস্টোলিক প্রেসার তৈরী করে সমগ্র দেহে রক্ত সঞ্চালন করে।
হৃদপিন্ড যখন রক্ত ছেড়ে দেয় তখন নিউটনের মহাকর্ষন সুত্রানুসারে অভিকর্ষ বলের প্রভাবে অর্থাৎ পৃথিবীর আকর্ষনে হৃদপিন্ডের অবস্থান থেকে মানব দেহের নিচের দিনে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়।
আর হৃদপিন্ডের অবস্থান হতে উপরের দিকে অর্থাৎ মুখমন্ডলে ও মস্তিস্কে রক্ত সঞ্চলন করতে হৃদপিন্ডটিকে অভিকর্ষ বলে বিরুদ্ধে কাজ করতে হয়।
ফলে উদ্ধাঙ্গ পর্যাপ্ত পরিমান রক্ত পায়না।
মানবদেহের সবচাইতে গুরুপ্তপূর্ণ স্নায়ুতন্ত্র যা মানবদেহের সমস্ত কর্মকান্ডের সমন্বয় সাধন করে।
স্নায়ুতন্ত্র গঠনের একক হলো নিউরণ।
খুলি গহ্বরস্থিত কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান অংশকে মস্তিস্ক বলে।
মহান আল্লাহ্ মানব জাতিকে উন্নত মস্তিস্ক প্রদান করেছেন যার সাহায্যে নিজস্ব বুদ্ধি বিবেচনার মাধ্যমে দৈনন্দিন কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারে।
বিধান মস্তিস্কে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখা অপরিহার্য।
নামাযই মস্তিস্কে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখার উৎকৃষ্ট পন্থা।
নামাযরত অবস্থায় মানুষ যখন রুকুতে যায় তখন মেরুদন্ডের ৩৩ টি কশেরুকা সক্রিয় হয় এবং হাতে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে ফলে মানব দেহ অটুট থাকে।
মানুষ যখন জমিনে তার কপাল স্পর্শ করে একমাত্র মহান আল্লাহর প্রতি আত্নসমর্পণ করে তখন তাকে সিজদা বলে।
আর ঠিক তখনই হৃদপিন্ডটি মুখমম্ডল এবং মস্তিস্কের উপরে চলে যায় ফলে অভিকর্ষ বলে প্রভাবে অতি সহযেই মস্তিস্ক প্রয়োজনীয় রক্ত পায় এবং মস্তিস্কের অতি সুক্ষ কৌশিক জালিকায় রক্ত প্রবাহিত হয় তখন নিউরনগুলে সঠিকভাবে কাজ করে।
মস্তিস্ক সক্রিয় থাকায় উন্নত চিন্তা করার মত অবস্থা তৈরি হয়।
সুতরাং নামাযের মধ্যে শারীরিক কল্যাণ যেমন নিহিত ঠিক তেমনি পরকালীন মুক্তি অবশ্যম্ভাবী।