মাত্র থানা থেকে ছাড়া পেলাম।
মানুষ খাল কেটে কুমির আনে, আমি এনেছি হাঙর।
ঘটনা হলো, ব্লগার গ্রাম্যবালিকার বাসায় গিয়েছিলাম। গ্রাম্যবালিকার একটা ছোটো ভাই আছে, সেও গ্রাম্যবালিকার মতোই সুইট। তার বিড়াল পালার ভীষণ শখ । আমি বুদ্ধি দিলাম, পালবা যখন তখন বিড়াল কেন, সিংহের বাচ্চা পালো। বিড়াল পুষলে হৃদয় হবে বিড়ালের মতো। আমাদের দরকার সিংহ হৃদয়ের মানুষ। কাজেই সিংহ পোষো।
আমি তো বুদ্ধি দিয়েই খালাস। ওদিকে সেই পিচ্চি ঠেসে ধরেছে তাকে একটা সিংহের বাচ্চা জোগাড় করে দিতে হবে। সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে, ব্লগার গ্রাম্যবালিকার উৎসাহও কম না।
মান সন্মান বাঁচাতে আমি গেলাম চিড়িয়াখানায়। বানরের খাঁচার সামনে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ বানরের নাচানাচি দেখলাম। তারপর গেলাম সিংহের খাচায়।
এক ব্যাটাকে দেখলাম, বহুল কসরত করে সে সিংহকে খাওয়াচ্ছে, মাংস দিচ্ছে।
তার সাথে আলাপ জমানোর চেষ্টা করলাম। খুব সহজ প্রশ্ন দিয়েই শুরু করলাম, ভাইজান, এইটা কি সিংহ?
সে আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো, কিছু বললো না। আবারও জিগাইলাম, ভাই এইটা কি সিংহ।
এবার সে চোখ গরম করে তাকালো। আমার কেন জানি মনে হলে, ব্যাটা কেশর ফুলাচ্ছে। দীর্ঘদিন গরুর সাথে থাকলে মানুষ গরু হয়ে যায়। সিংহের সাথে থাকতে থাকতে এই ব্যাটার মধ্যে সিংহ ভাব চলে আসবে- এটাই স্বাভাবিক।
মানুষকে রাগিয়ে দিয়ে আমি দারুন মজা পাই। আমি বললাম, ভাই, সিংহের বাচ্চা কি সেল করেন? দাম কেমন? এর মাংস কি খাওয়া যায়?
ব্যাটা, ফাজিলের ফাজিল। পকেট থেকে মোবাইল বের করে কাকে যেন ফোন দিলো। দুই তিন লোক ভোজবাজির মতো উদয় হলো।
ওরা আমাকে জিজ্ঞাসা করলো, ভাইজান কি করেন?
আমি বিনয়ে গলে বললাম, পশুপাখির দাম দস্তুর।
ব্যাস. ব্যাটারা দড়ি দিয়ে বেঁধে- প্রাণি আইনের ধারায় ফেলে আমাকে পল্লবী থানায় জমা দিয়ে দিল।
সেখান থেকে কোর্ট।
জামিন নিয়ে বের হয়ে ব্লগে উত্তর লিখতে বসছি।
ব্লগার গ্রাম্যবালিকাকে তিরষ্কার।