সেদিন আছরের নামাজ পড়ার জন্য তাড়াহুড়া করে বাথরুমে ঢুকলাম। অজু করার জন্য পানির টেপ ছাড়তেই জানালার ওপাশ থেকে কিছির মিছির শব্দ হল। মনে পড়ল, কবুতরটির ডিমগুলো ফুটে বাচ্চা বের হয়েছে। জানালার পর্দা সরিয়ে একপাশে দেখলাম, কবুতরের বাচ্চাদের জন্য প্লেটে করে খাবার দিয়েছে। বুঝতে বাকি রইল না, এ নিশ্চয়ই জালালের কাজ। অফিসের পিয়ন জালাল অনেকে দিন ধরে বলছিল, "স্যার, এইবার বাচ্চাগুলো একটু বড় হলে বাসায় নিয়ে গিয়ে লালন পালন করব!" আমাদের অফিসের রিপন সাহেব আবার বেশ আল্লাহওয়ালা লোক। উনি বলল, " আমি সিউর! এগুলা জালালি কবুতর! জালালি কবুতর আশ্রয় নিলে সেই জায়গায় নাকি সৌভাগ্যের আগমন ঘটে!" পিয়ন জালালকে ডেকে বলল, জালাল, তুমি এই জালালি কবুতর গুলো দেইখ্যা রাইখো।"
জানালার আরেক পাশে চোখ পড়তেই আমার চক্ষু ঠেলে বেরিয়ে আসার উপক্রম হল। এই দিনে দুপুরে ঢাকা শহরে আস্ত একটা প্যাঁচা! বেটা কবুতরের বাচ্চাগুলো সাবাড় করার জন্য শিকার ধরে বসে আছে। মুহূর্তেই তাকে সেলুলয়েডের ফিতায় ধরে রাখতে ভুললাম না। অনেক কাছে গিয়ে ও ভয় দেখালাম, কিছুতেই সরে না। ওই দিকে বেচারি মা কবুতর কিছুক্ষন পর পর উড়ে কাছে আসতে চায়, কিন্তু এই শহুরে প্যাঁচা এমন গোঁ ধরে আছে যে সে খালি হাতে নেহি ফিরেগা!
অতঃপর জালাল ও মাহবুব দুই ভাই একসাথে বাথরুমে ঢুকে জোরে তাব্রানি দিতেই ভোঁ উড়াল--- সাধে কি আর মানুষ বলে- "অমন প্যাঁচার মতো গোঁ ধরে আছো ক্যান?"