রোহিংগাদের অরিজিন...
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
রোহিঙ্গারা নানান জাতির সংমিশ্রিত সুন্নি মুসলামান। এরা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক বাঙলা ভাষায় কথা বলে। নবম শতকে আরব, মোগল, তুর্ক ও পরে পুর্তগিজরা মায়ানমারে বসতি গড়ে। বার্মিজরা তখনও এই ভিনদেশীদের মেনে নিতে প্রস্তুত ছিল না। ১৪ শতকে তাদের বংশধরেরা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে। মোগল আমলে আরাকান ছিলো মোগল সাম্রাজ্যের অধীন স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল। মুঘলদের পতন হলেও, আরাকান তার স্বাধীনতা বজায় রাখে। ১৭৭৫ সালে মগরা আরাকানে আক্রমন করে। ৩০ হাজার মগ সেনা আরাকানের প্রায় তিন হাজার মসজিদের সবকটিই ধ্বংস করে দেয়। দুই লাখ রোহিঙ্গাকে রেঙ্গুন শাসকদের কাছে দাস হিসেবে বিক্রি করে। নিহত হয় প্রায় দেড় লাখ। ৩০৭ টি রোহিঙ্গা । অধ্যুষিত গ্রামকে জন্য শূণ্য করে দেওয়া হয়।
রোহিঙ্গারা ১৮২৫ সালে ইংরেজদের বার্মা (বর্তমান মায়ানমার) আক্রমণে অনুপ্রাণিত করে। রোহিঙ্গাদের ধারনা ছিল বার্মা ইংরেজদের অধীনে গেলে তারা ইয়াঙ্গুনের নির্যাতন থেকে রক্ষা পাবে। ইংরেজরা ১৮২৫ সালে প্রায় বিনা বাঁধায় বার্মা দখল করে।
বার্মিজ বৌদ্ধ ও রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিরব শত্রুতা বাড়তেই থাকে। এর প্রকাশ পায় ১৯৪২ সালে। জাপান ওই সময় বার্মা দখল করলে বার্মিজরা রোহিঙ্গাদের কচুকাটা করে। বেসরকারি হিসেবে ১৯৪২ থেকে ১৯৪৪ সাল এই দুই বছরে তিন লাখ রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়। ১৯৪৪ সালে ইংরেজরা আবার বার্মা দখল করে। রোহিঙ্গাদের আবার স্বায়ত্বশাসন ফিরে পায়। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা পায় বার্মা। ওই সময় আরাকান পাকিস্তানের সঙ্গে যোগ দিতে জিন্নাহর কাছে আবেদন করে। কিন্তু জিন্নাহ তাতে রাজী না হলে আরাকান বার্মার হয়ে যায়। ৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পরই বার্মা রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে অস্বীকার করে। শুরু হয় সরকারি মদদে রোহিঙ্গা নিধন। তবে ভয়াবহতা লাভ করে ১৯৬২ বার্মায় সামরিক শাসন জারির পর।
সেনাবাহিনী, পুলিশসহ সকল সরকারি চাকরিতে রোহিঙ্গাদের নিয়োগ লাভ নিষিদ্ধ করা হয়। ভূমিতে তাদের অধিকারকে অস্বীকার হয়। ৭১ সালে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়। তাদের বলা হয়, বার্মায় বসবাসকারী কিন্তু নাগরিক নয়। ৭৪ সালে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। ৭৮ সালে সামরিকজান্তা যে নাগরিক আইন করে তাতে রোহিঙ্গাদের নাগরিক হওয়া সুযোগ চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হয়। আবার শুরু হয় রোহিঙ্গা নিধন। অবস্থা এতটাই অমানবিক ছিল যে আড়াই লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ও সমপরিমান থাইল্যান্ডে পালিয়ে যায়। ওই সময় ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা হত্যা করা হয় বলে ধারনা করা হয়।
৮৮ সালে রোহিঙ্গাদের ভ্রমনে বিধিনিষেধ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবায় বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। এতে করে রোহিঙ্গারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ হারায়। ভ্রমনে বিধিনিষেধ থাকায় বার্মা থেকে পালানোর উপায়ও ছিল না। এমনকি চরম অসুস্থ হলেও তারা হাসপাতালে যাওয়ার সুযোগ পায় না ভ্রমনে বিধিনিষেধ থাকায়। ৯০ সালে আবার রাখা্ইন-রোহিঙ্গা দাঙ্গা শুরু হয়। এই সময়েও প্রচুর রোহিঙ্গা দেশ ছাড়ে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে দুই লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয় বার্মা।
(সংগ্রহ: Click This Link)
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
আগে বুঝতে হবে রিসেট বাটন কি......
আগে বুঝতে হবে রিসেট বাটন কি......
বেশ কিছুদিন যাবত ডক্টর ইউনুস সাহেব এক সাক্ষাৎকারে "রিসেট বাটন" শব্দদ্বয় বলেছিলেন- যা নিয়ে নেটিজেনদের ম্যাতকার করতে করতে মস্তিষ্ক এবং গলায় রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন
বঙ্গবন্ধু ভগবান না হয় ইশ্বর!
মানুষ বঙ্গবন্ধুর ওপর এতোই ত্যক্তবিরক্ত যে আজকাল অনেকেই অনেক কথা বলছে বা বলার সাহস পাচ্ছে। এর জন্য আম্লিগ ও হাসিনাই দায়ী। যেমন- বঙ্গবন্ধু কলেজ, বঙ্গবন্ধু স্কুল (হাজারের কাছাকাছি),... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ্ সাহেবের ডায়রি ।। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত জুলাই-আগস্টের গণহত্যার মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ... ...বাকিটুকু পড়ুন
মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যু সংবাদ শুনে কোন গালিটা আপনার মুখে এসেছিলো?
"খবিশ মহিলা", গালিটি বা তার কাছাকাছি কিছু?
মতিয়া চৌধুরী (১৯৪২-২০২৪) ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা ও সৎ রাজনীতিবিদ। গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশে তিনিই ছিলেন একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ও সবচেয়ে নিবেদিত-প্রাণ... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিশ্বে চরম দারিদ্র্যে বাস করা প্রায় অর্ধেক মানুষই ভারতের
বিশ্বের ১১০ কোটি মানুষ দারিদ্রে দিন কাটাচ্ছে। তাদের প্রায় অর্ধেকই যুদ্ধ-সংঘাত লেগে থাকা দেশের বাসিন্দা। জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপির এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
ইউএনডিপির বরাতে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা... ...বাকিটুকু পড়ুন