somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু সাধারণ প্রশ্ন যেগুলো ইসলাম সম্পর্কে অল্প জানা অমুসলিমরা জিজ্ঞাসা করেন

২০ শে মে, ২০০৮ রাত ১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডা. জাকির নায়েকের আলোকে এই প্রশ্নোত্তর এর বঙ্গানুবাদ করা হয়েছে।

প্রশ্ন-২। কুরআন বলে যে, আল্লাহ তোমাদের জন্য পৃথিবী তৈরী করেছেন একটি বিছানার মতো। ইহা একটি বিষয়ে ধারণা দেয় যে, এই পৃথিবী সমতল। এই ধারণা কি প্রতিষ্ঠিত আধুনিক বিজ্ঞানের বিরোধিতা করছে না ?

উত্তর :
ক. আল্লাহপাক ভূমিকে করেছেন বিছানা

এই প্রশ্ন করা হয়েছে পবিত্র কুরআনের সূরা নুহের একটি আয়াত থেকে :

"আল্লাহ তা'আলা তোমাদের জন্য ভূমিকে করেছেন বিছানা।" ( আল কুরআন - ৭১ : ১৯)

কিন্তু উপরোক্ত বাক্যের আয়াতটি অসম্পূর্ণ। ইহা ক্রমানুসারে পরবর্তী আয়াতে প্রবাহমান পূর্বের আয়াতটি ব্যাখ্যাপূর্বক। যেখানে বলা হয়েছে :

"যাতে তোমরা চলাফেরা করো প্রশস্ত পথে।" ( আল কুরআন - ৭১ : ২০)

সূরা ত্বোয়াহাতেও একই বার্তা প্রদান করা হয়েছে -

"তিনি তোমাদের জন্য পৃথিবীকে শয্যা করেছেন এবং তাতে চলার পথ করেছেন, আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন এবং তা দ্বারা আমি বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ উৎপন্ন করেছি।" ( আল কুরআন - ২০ : ৫৩ )

পৃথিবীর বহিঃপৃষ্ঠ যেমন : পৃথিবীর বাইরের সবচেয়ে কঠিন স্তর ঘনত্বে ৩০ মাইলের চেয়ে কম এবং খুব পাতলা যেটাকে পৃথিবীর ব্যাসের সাথে তুলনা করা হয় যেটা প্রায় ৩৭৫০ মাইল। পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনতর লেয়ারগুলো খুবই গরম, তরল এবং জীবনের যে কোন অবস্থার সাথে অবান্ধব। পৃথিবীর বাইরের সবচেয়ে কঠিন স্তর (earth’s crust) হলো একটি শক্ত বর্মের মতো যেখানে আমরা বাস করি। আল কুরআন সঠিকভাবেই একটি প্রশস্ত বিছানার সাথে পৃথিবীকে তুলনা করেছে এ কারণেই কেননা, আমরা পৃথিবীর রাস্তা এবং হাঁটাপথ পাড়ি দিতে পারি।


খ. বিছানাও প্রসারিত হতে পারে অন্য সবকিছু এমনকি একটি সম্পূর্ণ সমতল পৃষ্ঠের চাইতে

পবিত্র কুরআনের শুধুমাত্র একটি আয়াতে উল্লেখ করা হয়নি যে, পৃথিবী সমতল। কুরআন-এ শুধুমাত্র পৃথিবীর বাইরের সবচেয়ে কঠিন স্তরকে একটি বিছানার সাথে তুলনা করা হয়েছে। কিছু মানুষের ধারণা হতে পারে যে, বিছানাটি শুধুমাত্র হতে পারে একটি সম্পূর্ণ সমতল। একটি বিছানাকে পৃথিবীর মতো একটি দীর্ঘ গোলকে প্রসারিত করা সম্ভব। পৃথিবীর একটি বৃহৎ মডেল 'গ্লোব' তৈরী করে সেটাকে একটা বিছানা দ্বারা মুড়ে দিলেই ইহা সুনিশ্চিত হবে।

বিছানা (কার্পেট) সাধারণত একটি তলের ওপর রাখা হয় - যেটা হাঁটার জন্য খুবই আরামদায়ক। আল কুরআনপৃথবীর বাইরের সবচেয়ে কঠিন স্তরকে বিছানার মতো বর্ণনা করেছে, যেটা ব্যতীত মানুষ জাতির টিকে থাকা অসম্ভব ছিলো তীব্র উত্তাপ, গরম তরল এবং পরিবেশ-অবান্ধবতার কারণে যা ইহার নিচে অবস্থিত। আল-কুরআন শুধুমাত্র যুক্তিসম্পন্ন-ই নয়, ইহা একটি বৈজ্ঞানিক ধারণা প্রদান করছে যেটা কয়েক শতাব্দী পরে ভূগোলবিদরা আবিষ্কার করেছিলেন।

গ. পৃথিবী বর্ধিত হচ্ছে

অনুরূপভাবে, কুরআনে অনেক আয়াতে বলা হয়েছে যে- পৃথিবী বর্ধিত হচ্ছে।
"And We have spread out the (spacious) earth: how excellently We do spread out!"
[Al-Qur’an 51:48]

"আমি ভূমিকে বিছিয়েছি ( বর্ধিত করেছি)। আমি কত সুন্দরভাবেই না বিছাতে (বর্ধিত করাতে) সক্ষম। ( আল কুরআন - ৫১:৪৮)

অনুরূপভাবে কুরআনের আরো কিছু আয়াতে পৃথিবীর প্রসারিত হওয়া সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে-

"Have We not made the earth as a wide expanse"
"And the mountains as pegs?"
[Al-Qur’an 78:6-7]

"আমি কি করিনি পৃথিবীকে একটি প্রশস্ত বিছানা
এবং পর্বতমালাকে পেরেক।"
(আল কুরআন - ৭৮ ; ৬-৭)

উপরোক্ত আয়াতগুলোর কোনোটাই বিন্দুমাত্র ধারণায় বলছে না যে পৃথিবী পুরোটাই সমতল ( বিছানার মতো)। আয়াতগুলোতে শুধুমাত্র বলা হয়েছে যে, পৃথিবী বৃহৎ ( spacious) এবং এর বৃহদাকার হবার কারণ উল্লেখিত হয়েছে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে -

" হে আমার ঈমানদারগণ ! আমার পৃথিবী প্রশস্ত। অতএব, তোমরা আমারই এবাদাত করো।" ( আল কুরআন - ২৯ : ৫৬)

অবশেষে, কেউই কারণ দর্শাতে পারবেনা যে, সে ভালো কাজ করতে পারেনি এবং খারাপ কাজে বাধ্য হয়েছিলো পরিবেশ এবং অন্যান্য অবস্থার প্রেক্ষিতে।

ঘ. পৃথিবীর আকার geospherical (The term Geosphere is often used to refer to the densest parts of Earth, which consist mostly of rock and regolith.) সম্বন্ধে

আল কুরআনে নিম্নোক্ত আয়াতে পৃথিবীর প্রকৃত আকার সম্পর্কে বলা হয়েছে -

وَالْأَرْضَ بَعْدَ ذَلِكَ دَحَاهَا
"And we have made the earth egg shaped".
[Al-Qur’an 79:30]

"এবং আমি পৃথিবীকে তৈরী করেছি ডিম্বাকৃতিতে।"
(আল কুরআন - ৭৯ : ৩০)

এখানে লক্ষ্য করার মতো বিষয় : প্রদত্ত আয়াতে আরবী শব্দ دَحَاهَا ( দাহাহা) মানে ডিম্বাকৃতি। ইহা বর্ধিত হওয়াকেও বুঝায়। دَحَاهَا ( দাহাহা) শব্দটা এসেছে "দুহিয়া" থেকে যার অর্থ বিশেষভাবে অস্ট্রিচ পাখির ডিম যেটা geospherical সাইজের, ঠিক পৃথিবীর আকৃতির মতো।

তাই পবিত্র কুরআন এবং আধুনিক বিজ্ঞান একই সুরে বাঁধা।



বিস্তারিত জানতে এই লিংকে যান :
http://www.irf.net/irf/faqonislam/index.htm

সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০০৮ রাত ১:৫৪
১৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×