প্রথমেই বলে রাখি হুমায়ুন আহমেদ আমার অতি প্রিয় লেখকদের একজন। তার ব্যক্তিজীবন এবং সেই সংক্রান্ত সমালোচনা আমার পোস্টের বিবেচ্য বিষয় নয়।
হুমায়ুন আহমেদকে আমি চিনি বেশ অনেকদিন। লজিক-এন্টিলজিক নিয়ে খেলা করা এই মানুষটিকে আমার ভালোলাগে তার কঠিন বিষয়কে সহজ করে উপস্থাপনার গুনটির কারণে। মৃত্যু বিষয়ক তার ভাবনা, দর্শন ও মৃত্যু বিলাশ আমাকে মুগ্ধ করে। চলচিত্র নির্মানে তার দক্ষতা তিনি দেখিয়েছেন অনেকগুলো ছবিতে। চরিত্র নির্মান, মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা তার কলমের খোঁচায় পেয়েছে অন্য উচ্চতা।
প্রতি বইমেলায় হুমায়ুন আহমেদের অসংখ্য বই বেরোয় আর সেই সব বইয়ের কাটতি ঈর্ষনীয়। যে স্টলটিতে হুমায়ুন আহমেদের বই আছে তার আশাপাশে ঘেষতে রিতিমত যুদ্ধ করতে হয়!
তার নুহাশ পল্লীতে নিজের একটি বাগানবাড়ি রয়েছে, ধানমন্ডিতে রয়েছে ফ্লাট বাড়ি। উনি আজ একটি কলামে আমেরিকার চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং সেই সাথে ওনার চিকিৎসায় অর্থসংকট বিষয়ে একটি কলাম লিখেছেন, যথারিতি নিজের স্টাইলে। সেই লেখা পড়ে আমাদের ধারণা হয়েছে উনি সাহায্য চেয়েছেন, ভক্তরা ভাবছেন ওনাকে সাহায্য করা উচিত।
কিন্তু ওনার কলাম থেকে মুল মেসেজটা আমরা কি নিতে পারছি? একজন হুমায়ুন আহমেদের চিকিৎসা অর্থের অভাবে আটকে থাকবেনা, রাষ্ট্র, প্রকাশক, মিডিয়া তার পাশে আছে। কিন্তু আজ কোন একজন জনৈক হেমায়েতপুরী ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে কোটি টাকার চিকিৎসা করানো কি তার পক্ষে সম্ভব? কে তার পাশে দাঁড়াবে?
হ্যা, উপযুক্ত চিকিৎসা একজন সাধারণ মানুষের পক্ষেও পাওয়া সম্ভব যদি দেশেই সুচিকিৎসার ব্যবস্থা থাকে। সেই চিকিৎসার অবকাঠামো গড়ে তোলার, একটি মানম্পন্ন হাসপাতাল গড়ে তোলার আকুতি আমরা কেন তার কলাম থেকে নিচ্ছিনা?
উনি ফিরে এসে লোকের সামনে হাত পাতবেন। হ্যা, আমিও তার পাশে দাঁড়াবো। বাড়িয়ে দেব আমার হাত। একটা-দুটো টাকার জন্য। আমরা গড়ে তুলবো একটি মানসম্পন্ন ক্যান্সার হাসপাতাল যেন একজন হুমায়ুন আহমেদকে বা একজন রহিম, করিম, শহরবানুকে অথবা একজন হেমায়েতপুরীকে কোটি টাকার কেমোথেরাপী নিয়ে চিন্তিত হতে না হয়!