somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উন্নত বিশ্বের সাথে আমাদের রাষ্ট্রপ্রধানদের আচরনগত পার্থক্য:|

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভাইয়ের দুর্ণীতির জন্য প্রেসিডেন্টের জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা
ছবিটা ভাল ভাবে খেয়াল করুন, উনি লি মিয়ুং পার্ক, দক্ষিন কোরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট। উনার বড় ভাই লি সাং ডিউকের বিরুদ্ধে গত বছরের জুলাইয়ে সঙ্কটাপন্ন দুটি সঞ্চয়ী ব্যাংকের হিসাব নিরীক্ষণ ও শাস্তি এড়াতে সহায়তা করার বিনিময়ে ৬০ কোটি উওন এবং একটি টেক্সটাইল প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেয়ার বিনিময়ে ১৫ কোটি সত্তর লাখ উওন উৎকোচ গ্রহনের অভিযোগে মামলা করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংবাদিক,মিডিয়াকর্মী ও দলীয় অন্যান্য নেত্রীবৃন্দের সামনে ভাইয়ের অপরাধে নিজের দুষ শিকার করে মাথা নীচু করে দীর্ঘ সময় দাড়িয়ে থেকে জাতির কাছে আন্তরিক ভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এই ছবিটা সে সময়কার দৈনিকে ফলাউ করে ছাপা হয়েছিল।

লেটেষ্ট নিউজ হলো গত ২৪ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার দেশটির একটি আদালত তাকে দুই বছরের কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেছে। পাশাপাশি তাঁকে ঘুষ হিসেবে গৃহীত অর্থও (৭৫ কোটি উওন) ফেরত দিতে বলা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে কোন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের পরিবারের কারও অপরাধের দায়ে সাজা পাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।

প্রেসিডেন্টের ভাই

দক্ষিন কোরিয়ার প্রসিডেন্ট বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের মত রোবটিক নয়। প্রতি ৫ বছর পর পর জনগনের সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়। প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট যুগপথ ভাবে রাষ্ট্রীয় সকল দায়িত্ব পালন করে থাকে, এমনকি দু`জন দুই দলের হলেও পারস্পরিক আলোচনায় রাষ্ট্রীয় কাজ চালিয়ে নিতে তাদের কোন সমস্যা হয়না। গত ১৯ ডিসেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার দল পরাজিত হয়েছে এবং নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছে পার্ক গিউন হিউ। নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব নেবেন আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারী।
বাংলাদেশের মত দ:কোরিয়ায়ও কোন অপরাধীকে ক্ষমা করে দেওয়ার সাংবিধানিক অধিকার প্রেসিডেন্টের রয়েছে। ডিউকের আইনজীবী জানান তাঁরা খুব শীঘ্রই উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হবেন। তবে রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমার জন্য নিজেকে অধিকতর গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সিনিয়র লি রায়ের বিরুদ্ধে কোন আপীল নাও করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। উল্লেখ্য, মি. ডিউক গত জুলাই থেকে কারাবন্দী রয়েছেন।
তবে এখন পর্যন্ত এই রায়ের বিরুদ্ধে কোন আপীল হয়নি এবং ছোট ভাই এই রায়কে মেনে নিয়ে কোন প্রকার ক্ষমার ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। তিনি ইচ্ছা করলে আমাদের রোবটিক প্রেসিডেন্টের মত ভাইকে মুক্ত করতে পারতেন এবং রাষ্ট্র তাকে এই ক্ষমতা দিয়েছে কিন্তু উনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেননি।

আইনের প্রতি শ্রদ্ধা, অপরাধের জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং মানুষের মন জয় করার মত ব্যক্তিত্ব এইসব দেশের রাজনৈতিক নেতাদের রয়েছে যা আমাদের নেতাদের, রাষ্ট্রপ্রধানদের একেবারেই অনুপস্থিত।

আমরা দেখেছি একজন আবুলের দুর্ণীতির জন্য বিশ্বব্যাংকের ঋণ পাওয়া গেল না, এই রকম একটা বড় লোকশানের জন্য জাতির কাছে সামন্য ক্ষমা চাওয়াতো দূরের কথা তাকে উল্টা দেশপ্রেমিক খেতাব দেওয়া হলো। যাকে আদর করে দেশপ্রেমিক ডাকা হয় তা বিরুদ্ধে দুর্ণীতির অভিযোগ আনা কি সম্ভব? এখানে অপরাধীকে বড় ধরনের একটা শেল্টার দেওয়ার চিত্র ফুটে উঠেছে। সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেন্কারীর হোতাদের আইডেন্টিফাই করতে পারলেও সরকারের কোন ইচ্ছা নাই অপরাধীরা শাস্তি পাক। যেখানে বড় বড় দুর্ণীতির সমর্থনে সরকারের গ্রীন সিগন্যাল রয়েছে সেখানে দেশপ্রেম, চেতনা, আইনের শাসন কথাগুলো একেবারেই বেমানান।
আজ একটা পোষ্টে দেখলাম আমাদের সরকার প্রধানকে নিয়ে একটা বড় আর্টক্যাল। কন্টেন্ট হলো উনার দক্ষ সরকার পরিচালনা, উন্নয়নের জোয়ার, সঠিক সিদ্ধান্ত......... ইত্যাদি ইত্যাদি.....।
আমরাকি আসলেই দিন দিন নি:লজ্জ জাতিতে পরিনত হচ্ছি। আজ আমরা ভাল মন্দের পার্থক্য করতে পারছি না। একজন শিক্ষিত ব্যক্তির কথা হবে মার্জিত, সুন্দর ও অনুকরনীয়। তার ভিতরে যে শিক্ষা আছে তা তার কথা, কাজ ও আকর্ষনীয় ব্যক্তিত্বে ফুটে উঠবে। কিন্তু তার উল্টাটা হলে তা হবে জাতির জন্য মারাত্নক ক্ষতির কারন। নিজের ভুলের জন্য বা মন্ত্রীদের বা আপনজনের ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়া দুষের বা লজ্জার কিছু নয় বরং তা পুরোপরি অস্বীকার করা পাপের সামিল।


সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৫২
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×