রাব্বি এমন একটা জায়গায় নিহত হয়েছে যেখানে লাইভ টেলিকাষ্টের কেউ ছিলনা বলে মৃত্যুর ভিডিওটা মিডিয়াতে আসেনি। ছবি সহ হত্যাকারীর পরিচয় জানা যায়নি, তাই জনগনের সেন্টিম্যান্টকে তেমন সারা দিতে পারেনি..............
সে কোন এসিডদগ্ধ নারী নয় বলে কোন মন্ত্রী বা নেতা তাকে দেখতে যায়নি বা নগদ অর্থের কোন আশ্বাস দেয়নি.................
সে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কেউ নয় বলে তার ব্যাপারে মিডিয়া বা কারো তেমন উৎসাহ দেখা যায়নি...................
রাব্বি ছিল একটা সাধারন ছেলে, অতি সাধারন একটা খেটে খাওয়া পরিবারের ছেলে। অটোচালক বাবার হয়ত সামর্থ্য ছিল না ছেলেটাকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে লেখাপড়া শিখানোর। সে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল বা ছাত্রশিবির বুঝতনা, আসলে এগুলো বুঝার মত বয়স তার হয়নি। বাংলাদেশ অর্থণীতিতে সমৃদ্ধি অর্জন করছে যার বিন্দুমাত্র স্পর্শও রাব্বির গয়ে লাগেনি। গ্রামের আরো দশটা দরিদ্র পরিবারের শিশুর মতই তার দিন কাটত দাদীর সাথে ক্যাম্পাসের আঙ্গিনায় পাতা কুড়িয়ে। অথচ তাকেই প্রাণ দিতে হলো ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের ক্ষমতার লড়ায়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় হলো উচ্চ শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীট, যেখানে সভ্যতার চর্চা হয়। দেশ এখন কোন যুদ্ধাবস্থায় নেই, চলছে প্রগতিশীল চেতনায় গণতন্ত্রের সুবাতাস। সেই ক্যাম্পাসের মত সভ্য জায়গায় সভ্য গনতান্ত্রিক পরিবেশে রাব্বিকে প্রান দিতে হলো ফিলিস্থানের শিশুদের মত। অথচ কি অবাক করা ব্যাপার যারা তাকে খুন করল তাদের বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই, অনুশোচনা নেই তাদের ইন্দনদাতাদের। তারাই মুখে ফেনা তুলে ফেলছে দেশে আইনের শাসন চালু আছে বলে। এই ছাত্রনেতারাই দেশে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণ করবে, তারাই একসময় এম্পি-মন্ত্রী হবে। এই ছাত্রনেতারা দেশকে, দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জিম্মিকরে ধ্বংসের দারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে আর তার বলি হচ্ছে রাব্বি বিশ্বজিতের মত তাজা প্রাণ। একবার ভেবে দেখুন তো কি এক ভয়ানক ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য।
রাব্বি হত্যাকাণ্ড কি আমাদের মনে সামান্যতম দাগ কাটে না, আমরা সভ্য সমাজে বাস করি, আমরা কি জবাব দিব রাব্বি বা তার পরিবারের কাছে? কার কাছে শান্তনা খুঁজবে রাব্বির পরিবার? শিক্ষা আমাদেরকে মানুষ করছে নাকি দিন দিন আমরা অমানুষে পরিনত হচ্ছি। কেন আমরা চিৎকার করে বলতে পারছিনা আমরা ছাত্ররাজনীতি চাই না, আমরা রাজনীতি মুক্ত শিক্ষাঙ্গন চাই।
মাত্র ৩ দিন আগের ঘটনা অথচ আজকের প্রথম সারির কোন সংবাদপত্রে রাব্বির কোন নিউজ নাই। কোন অপরাধী গ্রেফতারের খবর নাই, এই হত্যাকাণ্ডে প্রধানমন্ত্রী, বু্দ্ধিজীবী বা মানবাধিকার কমিশনের কোন বিবৃতি নাই। অথচ বিশ্বজিৎ বা ইডেন কলেজের মেয়েটাকে নিয়া কত হৈচৈ হলো।
এভাবেই সবকিছু আড়ালে চলে যায় আর ছাত্রলীগের পশুরা নতুন কোন ঘটনার জন্ম দেয়। সরকার ঘটনা চাপা দেওয়ার জন্য নতুন কোন ইস্যু তৈরী করে।