খালাত ভাই নেভিতে জব করে। বর্তমান সে রিক্রুড। খুলনায় ট্রেনিং হচ্ছে তার। খালামনি তার পরিবার সহ গেছিলেন খুলনায় ওর সাথে দেখা করতে।
তারা গিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার।
ব্যাস্ততার কারনে তাদের সাথে যাওয়া হয় নি।
পরবর্তিতে সুন্দরবন ভ্রমনের লোভ সামলাতে পারিনি।
শনিবার সিমান্ত এক্সপ্রেস এ চেপে রওয়ানা দিলাম। রবিবার সকালে খুলনায় নামলাম। চাকরির সুবাদে আপু আর দুলাভাই সেখানেই থাকেন।
তাদের বাসায় উঠলাম। সকাল ৭টায় মোংলার বাস ধরলাম।
একে তো সারারাত জার্নি করে ক্লান্ত। তাতে আবার জার্নি।
তবে সুন্দরবন ভ্রমনের লোভ আমার সকল ক্লান্তি কে নিবারন করেছিল।
১ ঘন্টা পর মোংলায় নামলাম।
সুন্দরবনের নৌকা ভাড়া করলাম।
তারপর নৌকায় চেপে ৬ জন চললাম।
দুলে দুলে চলছে নৌকা । আমরা উপভোগ করছি বাংলার রুপ।আর আমি ভাবছি, হয়ত এ কারনেই জীবনানন্দ বার বার ফিরে আসতে চেয়েছিলেন এই বাংলায়।
এলেমেলো ভাবে উকি দিচ্ছে শুশুক। আর আমরা গুনছি। এক , দুই তিন। এইতো আরেকটা। আরে দেখ দেখ। এটা বড়, আরে না না আগেরটা বড় ছিল।
দেশের উত্তর অঞ্চলে আমার জন্ম। আর কিছুটা নন্দলাল প্রকৃতির হওয়াতে আঘে এমনটা দেখার সুযোগ মেলে নি।
বিশেষ করে এত বড় বড় জাহাজ কখনও দেখিনি।
নদীতে তখন জোয়ার হচ্ছিল। বড় বড় জাহাজ চলাচলের কারনে এত বড় বড় ঢেউ হচ্ছিল মনে হচ্ছে আমাদের নৌকাখানা বুঝি ডুবে যাবে । আমি সাতার জানি না। প্রচুর ভয় পেয়েছিলাম।
অবশেষে করমজল এ পৌছলাম।
দুপুরের খাওয়া সেরে বনে প্রবেশ করলাম।
মনে হচ্ছিল সারাজীবন দেখলেও তৃষ্ণা মিটবে না।
তবে বনের সেফ জোন খুবই সামান্য। কারন এখানে প্রতি পদে বিপদের সম্ভাবনা।
বনে ঢুকেই বানরের আক্রমনের শিকার হলাম। আমার শার্ট ছিড়ে দিল তারা।
দোষ টা আমারই। এক জন কে চকলেট দিয়েছিলাম। বাকিদের দেইনি বলে তারা বিদ্রোহ ঘোষনা করে হামলা চালাল।
অল্প কিছু অংশ দেখার সুযোগ হয়েছে।
এখানে কারো দায়িত্ব কেউ নেয় না।
যোগাযোগ মাধ্যম শুধুমাত্র নদী। আর হয়ত সে কারনেই নদীর তীরবর্তি শহর এত উন্নত।
অবশেষে ফেরার সময় হল।
বাঘ দেখার মত দুর্ভাগ্য হয় নি।
তবে বাঘের পায়ের ছাপ দেখেছিলাম।
আর ভাবছিলাম, যে বনের বানর এত হিংস্র, সে বনের বাঘ কতটা হিংস্র হতে পারে।
ফিরে এলাম।
তবে একজন কে খুব মিস করছিলাম।
বার বার তার কথা মনে পড়ছিল।
যদি সে পাশে থাকত , হয়ত বানরের সাথে যুদ্ধ ঘোষনা করত।
বিদায় সুন্দরবন।
“বিদায় খুলনা”
কখনও ভুলব না তোদের। বিশেষ করে পানি টা।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:৫০