সারাদিনের ক্লান্তিময় কাজ সেরে গামছার মাথায় দু কেজি চাল আর একটা লাউ নিয়ে ঘরে ফিরছে কলিম শেখ ।
রাজমিস্ত্রির যোগালি সে। কাজ তেমন একটা পারে না সে। শুধু সিমেন্ট গুলাতে পারে আর আর ইট বহন করতে পারে।
হেড মিস্ত্রী তাকে প্রতদিনের কাজের বিনিময়ে ১৫০ টাকা দেন । এতেই সে খুশি।
তিন সদস্যের পরিবার তার সুন্দর ভাবে না চললেও দিন কেটে যায়।
এই টাকার জন্য প্রতিদিন তাকে ঘুম থেকে উঠে কাজে যেতে হয় খুব ভোরে।
তার সন্তানের সাথে কখনও দেখা হয়না তার। সকালে তাকে ঘুমে রেখেই কাজে যেতে হয়, আর ফিরতে হয় ঘুমানোর পর।
প্রতিদিনের মত আজও সে বাজার থেকে ফিরছে। মাথায় নানান চিন্তা। সামনে বৈশাখ মাস। ঘরে খুটি লাগাতে হবে, বাচ্চাটার জ্বর কয়েকদিন থেকে । পথ্য নিতে হবে। বৌয়ের পরনে ছেড়া শাড়ি। অথচ একদিন বাজার না করলে না খেয়ে থাকতে হয়। এসব করবে কি দিয়ে?
১৫০ টাকা মজুরি দিয়ে একসাথে এত অভাব পুরন করা সম্ভব না। বাজারে পন্যরে যা মুল্য।
সরকারি চাকুরেদের বেতন বাড়র বলে পর পর দু বার পন্যের দাম বাড়ল। একবার বাজেটের সময়, আরেকবার বেতনের সময়।
কিন্তু কলিমের মজুরি তো বাড়ল না। ওস্তাদ কইল , বাড়ামু নে চিন্তা করিস না। কলিম তো আর নিজের জন্য চিন্তা করে না্ শুধু বউটা আর বাচ্চাটা,,,,,,,,,,,
ভাবতে ভাবতে বাড়িতে পৌছে যায় সে। বউ জানায় বাচ্চাটার ভিষন জ্বর। কিছুই খায় নি সে। না খেয়েই ঘুমিয়েছে।
কাল ডাক্তার দেখাতে হবে।
কিন্তু ডাক্তার দেখাতে গেলে কাজে যাবে কিভাবে??
কাজে না গেলে টাকা পাবে কই?
গন্জের ডাক্তার রা ৩০০ টাকা করে ভিজিট নেয়। কিন্তু তার বেতন মাত্র ১৫০ টাকা দিনে,যা প্রতিদিন বাজার করতেই শেষ। সাত পাচ ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরল সে।
কাজে গেল না আজ, হেডমিস্ত্রীর কাছ থেকে ৫০০ টাকা ধার নেয়ে ডাক্তার দেখিয়ে এল । এই ধার শোধ করতে দু জনের কাজ তাকে একাই করতে হব।
পরদিন কাজ থেকে ফিরে সে জানতে পারে জ্বর কমেনি বাচ্চটার।
কি করবে? টাকা তো শেষ।
কি করবে কলিম??
বাচ্চার জন্য কি করার আছে তার?
১৫০ টাকা বেতন দিনে, চালের কেজি ২২ টাকা তেল মরিচ পিয়াাজের মুল্য গগন চুিম্ব । ডাক্তারদের ফিস ও কম না, যদিও তারা বর্ধিত হারে বেতন পান। তবে তারাই কি মানুষ?? শুধু কি তাদের বাচার অধিকার আছে?? সরকারি চাকুরেরাই মানুষ?
নাকি শুধু তারাই ভোটার , আর আপামর বাংলার কৃষক,শ্রমিক,জেলে এরা কেউ নয়?
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৫১