এ পর্জন্ত বাংলাদেশ ১৫০০ শ্রমিক মারা গেছে। ২৫০ এর বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। যার ৮০ টি বড়। হত্যা লীলা চলছে ৪২ বছর ধরে। শ্রমিক মরছে আগুনে পুড়ে/ পদদলিত হয়ে/ বিল্ডিং ভেঙ্গে – একটার পর একটা ঘটনা ঘটছে। কেনো? কারন এই সব ঘটনার পেছনে যারা আছে, তাদের কোন বিচার নাই। আইনের শাসন তো থাকতে হবে। তুরস্কে স্থপতি দের শাস্তি হিসেবে লাইসেন্স বাদ করে দেয়া হয়েছে, ইরানে ৪ জন কে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। আমরা কেনো শাস্তি দিতে পারছি না?
আগের দুর্যোগ গুলোর পর সিদ্ধান্ত নেয়া হল। ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার কথা। দেয়া হয়েছে ৬৯ কোটি - কি কেনা হয়েছে? হেভি মেশিন? হেভি লাভ এর জন্য । অথচ আজ সাভারে হেক্সো ব্লেড/ ইলেকট্রিক কাটার নেই। ছোট ছোট মেশিন নেই – কেন নেই? না থাকার পেছনে যারা, তাদের কেন শাস্তি হচ্ছে না? রিমোর্ট সেন্সিং ডিভাইস – যারা দ্বারা প্রান আছে কিনা বোঝা যায়, এই ডিভাইস টি পর্জন্ত নেই, যেখানে বাংলাদেশ হচ্ছে একটি দুর্জোগের দেশ। এই সব যন্ত্র পাতি সবার আগে কেনা উচিত ছিলো, অথচ আজ ২০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে রাশিয়া থেকে অস্ত্র কেনা হচ্ছে। ভাবা যায়?
আর এই ঘটনা ঘটলো। ঘটনার পর পর থাইল্যান্ড থেকে আনতে যন্ত্র পাতি আনতে লাগতো ২ ঘন্টা , কেন আনা হয়নি? দিল্লি বা পাশবর্তি দেশ থেকে আনা যেতে উদ্ধার কাজের জন্য যোগ্য বেক্তি, কমান্ডো ইত্তাদি আনতে কয়েক ঘন্টা লাগতো। কেন আনা হয়নি? কেন – এরা শ্রমজীবী – এদের জীবনের দাম নেই? মাছির মত এদের মরতে হবে কেনো?
প্রাকৃতিক শুধু নয়, পাশাপাশি (অ) মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ। এই সব থামবে না কখনোই , যতক্ষণ না আইন প্রণয়ন করা হবে, কঠিন বিধান এবং ন্যায্য বিচার না থাকবে। না করতে পারলে এই সব হবেই। এভাবে চলছে, এভাবেই চলবে। চলছে নীতি আদর্শ হীন বুজোয়া বুর্জোয়া রাজনীতি। আছে মালিকের সীমাহীন লোভ। একজন গার্মেন্টস মালিকের শুনলাম আছে মার্সিডিজ, বি এম ডাব্লিউ সহ ৭ টা গাড়ী - কানাডার সবচে দামী জায়গায় বাড়ী আর শ্রমিক দের মজুরি দিচ্ছে না।
আজ খোদ BGME এর Approval নেই। একজন প্রধান মন্ত্রী Un-authorized foundation অনুমোদন করছেন, আরেকজন উদ্ভাবন করেছেন। ওনাদের পরামর্শ দাতা রা অবশ্যই দুর্নীতি গ্রস্থ। এমন কি যেই TNO বললেন বিল্ডিং ফাটল ধরেছে, কিন্তু কাজ করা যাবে, যার ফল শ্রুতিতে শ্রমিক গন আবার কাজে গেছে, সেই TNO আছে তদন্ত কমিটি তে । কি বিচিত্র এবিং কত নষ্ট এই দেশের রাজনীতি।
স্থপতি মোবাসশের সাহেব এর কথা অনুযায়ী ৬ মাসে বাংলাদেশে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রথমেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে এই সব দুর্নীতি যারা করবে, তারা যেই, হোক না কেনো, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একমত। আজ পর্জন্ত তাজনিন ফেশন, স্মার্ট ফেশন ইত্তাদি গার্মেন্টস এর মালিক দের বিচার হয়নি।
আজ গ্রামে যদি কেউ ইন্ডাস্ট্রি করে, তাকে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালি কত্রিক মনোনীত supplier থেকে মাল নিতে হবে। ৮০% ক্ষেত্রে। আমি যদি চাই, ভালো জায়গা থেকে রড সিমেন্ট কিনবো, কিন্তু আমি যদি প্রভাবশালীর সাথে সমন্বয় করে কাজ না করি, তবে দেখা যাবে নানা গন্ডগোল শুরু হবে, রড চুরি হবে, মামলা হবে, নানা ঝামেলা হবে। নষ্ট রাজনীতি রন্ধে রন্ধে ঢুকে গেছে। আর আমি নিজেই যদি "নেতা" হই, তবে তো বালাই নেই।
সাভার, গাজিপুর, টঙ্গি, নারায়ঙ্গঞ্জ ইত্তাদি এলাকা রাজউক এর under এ। রাজউক - এর আইন অনুযায়ী ঢাকার সব ভবন নির্মান এর অনুমতি দিতে হবে রাজউক কে। কিন্তু সেক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশন এর কাছ থেকে অনুমোদন নেয়া হচ্ছে। আজ সরকার সব ফিনান্সিয়াল ইন্সটি্টিউট কে জানিয়ে দিক, রাজউক এর অনুমোদন ছাড়া এরা যেন একটি পয়সা ইনভেস্ট না করে। তাহলে অন্তত ৫০% অপরাধ বন্ধ করা যাবে। রাজউক কে তইরি করা হয়েছিলো Regulatory Body হিসেবে। অর্থাৎ, ওনারা প্লান পাশ করবে, বিল্ডিং কন্সট্রাকশন এর সময় ভায়োলেশন হচ্ছে কিনা, এই কাজ গুলি দেখার জন্য। এই কাজ গুলি এরা ঠিক মতো করছে না।
রাজউক এর চেয়ারম্যান গত চার বছর ধরে বলছেন - আমাদের লোকবল এর অভাব। আমরা লোকবল বাড়ানোর জন্য চেস্টা করছি। ৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে এসেছি। কিন্তু ----- লোকবল এর অভাব শুধু একটি কাজের বেলায়। জমির ব্যাবসা করার সময় কোন দিন সরকার কে বলে নাই আমার লোক বল নাই, আমি জমির বেবসা করবো না। ফ্লাই ওভার আমি করবো না, আমার লোকবল নাই, কখনো বলে নাই, রাস্তা আমি করবো না, আমার লোকবল নাই, এই কাজ গুলির জন্য কিন্তু হাইলি কোয়ালিফাইড, এক্সপার্ট আছে, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে আছে, সিটি কর্পোরেশন আছে, - এই কাজ গুলিতে রাজউক এর আগ্রহ অস্বাভাবিক রকম বেশি।
তাহলে এক্ষেত্রে করনীয় কি? রাজউক যদি এই কাজ গুলি ই শুধু করতে চায়, সরকার যদি তাদের এই কাজে সহযোগিতা করতে চায়, Regulatory Body কে বের করে নিয়ে আসতে হবে। বের করে আনলেই হবে না।
একসময় রাজউক এর Regulatory Body এর চেয়ারম্যান ছিলেন হাইলি কোয়ালিফাইড , বাহির থেকে নেয়া জ্ঞেনি গুনি বেক্তি। আজ সিদ্ধান্ত নিতে হবে, রাজউক এর চেয়ারম্যান হবেন প্রেসিডেন্ট কর্তিক নিয়োগ কৃত, যাকে কেউ হাত দিতে পারবে না। এখন যাকে চেয়ারম্যান করা হয়, তিনি সেক্রেটারি বা মিনিস্ট্রির under এ একজন কর্মচারি। তাকে তার উর্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশ মানা ছাড়া আর গতি নেই। একজন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সৎ বেক্তি কেও যদি রাজউক এর চেয়ারম্যান বানানো হয়, ৭ দিনের বেশি থাকতে পারবে না। এবার চিন্তা করে দেখুন আমাদের করনীয় কি।
অনেক হয়েছে আর নয়। আমরা আওয়ামি লিগ, বিএনপি বুঝিনা। ৫২ তে মরেছে আমাদের ভাইরা, ৭১ এর অকাতরে গেছে জীবন – একটা স্বাধীন বাংলাদেশ এর জন্য। এই কি সেই দেশ?
আজ কালো বিড়ালে দেশ ছেয়ে গেছে। এই কালো বিড়াল দের জতই বোঝান বুঝবে না। যাবে না, চেটে চেটে খাবে আমাদের রক্ত।
ব্লেক কেট, গো এওয়ে। যেদিন বীর বাঙ্গালি আরেকবার জাগবে ৭১ এর মত, পালাবার দিশা পাবি না তোরা।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৯