হানিমুন শব্দের উদ্ভব কিভাবে কে জানে, মধু’র সাথে চন্দ্র!!! উনিশ শতকে পশ্চিমা বিশ্বে যাত্রা শুরু করে আজ সারা পৃথিবীতে নব বিবাহিত দম্পতিএর জীবনের অতি আকাঙ্ক্ষিত ইভেন্ট। দিন দুয়েক আগে ব্লগার জাফরুল মবীন ভাইয়ের রিকোয়েস্টের সুত্র ধরে এই পোস্টের অবতারণা। সামু ব্লগে নাকি এখন বিয়ের বাতাস বইছে... আর তাই পর্যটন মন্ত্রী হিসেবে আমার দায়িত্ব এই হবু’দের জন্য কিছু “হানিমুন ডেসটিনেশন” সম্পর্কে বলে যাওয়া। দুই পর্বের এই সেমি ফটো ব্লগ পোস্ট (যা পুরোটাই কপিরাইট আইনে দুষ্ট) আজ প্রথম পর্বে বাংলাদেশ এবং এর পূর্বের দেশ সমূহের কিছু ছবি, যা থেকে হবু দম্পতিরা খুঁজে নিতে পারেন তাদের হানিমুন ডেসটিনেশন। (অ.ট. যেখানেই হানিমুনে যাবেন, অবশ্যই পূর্ণিমার হিসেব করে যাবেন আর সাথে ছোট কৌটোয় মধু নিয়ে যেতে ভুলবেন না, কারন মধুচন্দ্রিমায় মধুর ঘাটতি পড়তে পারে। গত বছর সেন্ট মার্টিন ট্যুরে “ভ্রমণ বাংলাদেশ” এর তাহসিন শাহেদ (ব্লগার তাহসিন মামা) সাথে করে মধু নিয়ে গিয়েছিলেন।
দুজন নর-নারী বিয়ের স্বর্গীয় বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর পরস্পরকে জানতে ও বুঝতে পারার জন্য কিছু সময় লোকচক্ষুর অন্তরালে নিজেদের একান্ত সান্নিধ্যে কাটাতে চায়। এ থেকেই হানিমুনের ধারণার উদ্ভব। পাহাড়ের উষ্ণতায় কিংবা সমুদ্রের গর্জনে স্নাত সৈকতে কিংবা অরণ্যের বিচিত্রতায় রহস্যময় মনের অতলে ডুব দিয়ে মণি-মুক্তা তুলে আনার প্রয়াসে নিজেদের হারিয়ে ফেলার উদ্দেশ্যেই বর কনের হানিমুন যাত্রা। আজ প্রথম পর্বে থাকছে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড নিয়ে ছবি ব্লগ।
=================== বাংলাদেশ ==================
তো আসুন শুরু করা যাক, শুরু করি বাংলাদেশ দিয়ে। আমাদের দেশের হানিমুন ডেসটিনেশন হিসেবে সর্বাগ্রে রয়েছে কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিন আর কুয়াকাটার নাম। এরপর রয়েছে বৃহত্তর সিলেট এবং বৃহত্তর চট্টগ্রাম উইথ পার্বত্য চট্টগ্রাম। আর ঢাকার একেবারে কাছেও ঘুরে আসা যায় পদ্মা রিসোর্ট অথবা যমুনা রিসোর্ট থেকে।
=================== নেপাল ==================
হিমালয়ের কন্যা খ্যাত এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশে নেপাল যেখানে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় সব স্থান যা দেখার জন্য প্রতিদিন দেশী বিদেশী হাজারো পর্যটক নেপালে ভিড় জমায়্। নেপালের সবচেয়ে নজরকাড়া দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে এভারে্স্ট চূড়া। মাউন্ট এভারেস্ট ছাড়াও নেপালে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান রয়েছে—
পাটান দরবার স্কয়ার, ভীমসেন মন্দির, মাঙ্গা
হিতি, বিশ্বনাথ মন্দির, কৃষ্ণ মন্দির, জগন্নারায়ণ মন্দির, রাজা
যোগেনারেন্দ্র মাল্লার মূর্তি, হরি শঙ্কর মন্দির, তেলেজু ঘণ্টা, কৃষ্ণা
মন্দির, রাজপ্রাসাদ (রয়েল প্যালেস), পাটান জাদুঘর, মাল চৌক, সুন্দরী চৌক,
সোনালি মন্দির (কুয়া বহাল), কুম্বেশ্বর মন্দির, উমা মহেশ্বর মন্দির,
বিশ্বকর্মা মন্দির, বাহা বাহি, মীননাথ মন্দির, রাতো মাচেন্দ্রনাথ মন্দির,
মহাবুদ্ধ মন্দির, উকু বহাল (রুদ্র বর্ণ মহাবিহার), লগন স্তম্ভ, চিড়িয়াখানা,
পশ্চিমা মন্দির ইত্যাদি।
তথ্যসুত্র এবং লেখাঃ http://www.beshto.com/contentid/433509
=================== ভুটান ==================
দক্ষিণ এশিয়ার প্রাকৃতিক নৈসর্গিক পূণ্যভূমি ভুটান। হিমালয়ের কল্যাণে উঁচু পর্বতমালা, সবুজ বন আর স্বাস্থ্যকর আবহাওয়ার দেশ ভুটান যেন প্রকৃতির মমতায় সাজানো। তিব্বতের ঠিক দক্ষিণে অবস্থিত ভুটানকে বলা হয় “ল্যান্ড অব দ্য পিসফুল থান্ডার ড্রাগনস”। ভূটানের মোহময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটনপিপাসুরা কখনোই উপেক্ষা করতে পারে না। ভুটানের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে ১। তাকশাং বৌদ্ধবিহার, ২। ড্রুকগিয়াল জং, ৩। রিনপুং জং, ৪। টা জং, ৫। পুনাখা জং, ৬। সিমতোখা জং, ৭। দোচুলা পাস।
তথ্যসুত্র এবং লেখাঃ http://www.priyo.com/2014/06/25/79017.html
=================== থাইল্যান্ড ==================
বলিউড, টালিউড রঙিন সিনেমার পাশাপাশি থাই পাতায়ায় পর্যটকদের জন্য থাইল্যান্ড এ মুহূর্তে অন্যতম পছন্দের স্থান। থাইল্যান্ডের ব্যাংকক, পাতায়া, ফুকেতে ছুটছেন ভ্রমণপিপাসু অনেক বাঙালি। মাকড়শার জালের মতো ছড়িয়ে অসংখ্য উড়ালপুল। প্রতিটি রাস্তার একটি লেন, রোডের প্রায় দুটি লেনেই সমানভাবে চওড়া আর এটাই হচ্ছে ব্যাংকক। নাইস সিটির বুকচিরে বয়ে গেছে চাও-ফ্রায়া নদী। রাতের মায়াবি আলোয় জলপথে শহরটাকে ঘুরে দেখতে অসাধারণ লাগে। রিভার ক্রুজ, বিদেশিদের কাছে অন্যতম নিশিজীবন। রাত যত বাড়তে থাকে ততই রঙিন হয় ব্যাংকক সিটি। শহরজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অসংখ্য ডান্স বার, ডিস্কো বার। সর্বত্রই পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়, পাঁচিলঘেরা চওড়া মাঠ, জলাশয়। মাটি থেকে তিন ফুট উপরে প্লাটফর্মের রেস্তোরাঁ। গোটা রেস্তোরাঁটি ঘেরা বুলেটপ্রুফ কাচে, যেকোনো সময় কৌতূহলি বাঘের থাবা এসে পড়তে পারে আপনার লাঞ্চ টেবিলের কাচের দেয়ালে। পাহাড়, সমুদ্রেঘেরা ছোট্ট শহর পাতায়া। শহরটি ঘুরে দেখতে পারেন ট্যাক্সি করে।
তথ্যসুত্র এবং লেখাঃ Click This Link
=================== সিঙ্গাপুর ==================
অতি ছোট্ট কাঁচে ঘেরা শহর সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুরের পর্যটক আকর্ষন করার মত জায়গার বিস্তারিত দেওয়া হল...
নাইট সাফারী: সিঙ্গাপুর চিড়িয়াখানা, পৃথিবীর প্রথম ও একমাত্র নাইট সাফারী। নাইট সাফারীতে গভীর রাতে জঙ্গলের ভিতরের নানান পশুপাখিদের মাঝ দিয়ে ট্রামে করে পর্যটকরা বিচড়ন করেন। বাঘ, হরিণ, ভালুক, হাতি, উট, কুমির এ সাফারীর প্রাণিদের মধ্যে অন্যতম। এ সাফারীতে পশুপাখিরা উন্মুক্তভাবে ঘুরে বেড়ায়।
মারলাওন পার্ক: মারলিন বা সিংহ-মৎস্য হচ্ছে সিঙ্গাপুরীদের গর্বের প্রতীক, বীরত্বের প্রতীক। কথিত আছে বহু পূর্বে সিঙ্গাপুর যখন তেমাসেক বা সমূদ্রনগরী নামে পরিচিত ছিলো তখন প্রচণ্ড এক সামুদ্রিক ঝড় ওঠে দ্বীপে। অধিবাসীরা যখন নিজেদের স্বপে দেয় ঈশ্বরের হাতে ঠিক তখনই সমুদ্র থেকে সিংহ-মৎস্য আকৃতির এক জন্তু এসে ঝড়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে বাচিয়ে দেয় অধিবাসীদের। আর সে থেকে মারলিন নামের সিংহ-মৎস্য সিঙ্গাপুরীদের গর্ব আর বীরত্বের প্রতীক। মারলিনের মূর্তি ম্যারিনা বে-এর মারলাওন পার্কে অবস্থিত।
সেন্টোসা আইল্যান্ড: সমুদ্রের মাঝে ছোট এক দ্বীপে গড়ে তোলা বিনোদন কেন্দ্র।
তথ্যসুত্র এবং লেখাঃ Click This Link
=================== মালয়েশিয়া ==================
মালয়েশিয়ায় আছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে একটি হল কুয়ালামপুরের কাছেই পাহাঙ্গে অবস্থিত গেনটিন হিল রিসোর্ট। ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য পরিচিত তিতিওয়াঙ্গসা পাহাড়ি অঞ্চলের এই রিসোর্টে পাবেন থিম পার্ক, কেবল কার, ক্যাসিনো ইত্যাদি। কুয়ালালামপুরের মধ্যেই আছে টুইন টাওয়ার নামে খ্যাত প্যাট্রোনাস টাওয়ার। ১৯৯৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু টুইন টাওয়ার। দুই টাওয়ারের মাঝের ব্রিজকে বলা হয় স্কাই ব্রিজ। ৫০ রিঙ্গিত বা ১২শ' টাকার বিনিময়ে দর্শনার্থীরা উঠতে পারবেন এই স্কাইব্রিজে। মালয়েশিয়া গিয়ে লাঙ্কাউই না গেলে হয়ত সমস্ত খরচই বৃথা। কুয়ালালামপুর থেকে ৪১৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকত অঞ্চল আন্দামান সমুদ্রের ১০৪টি দ্বীপের সমষ্টি। কি নেই এখানে, কেবল কার, ঝরনা, সমুদ্রের নিচ দিয়ে রাস্তা, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট আরও কত কি। একটু ভিন্ন স্বাদের জন্য একটি নৌকা ভাড়া করে চলে যেতে পারেন ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের ভেতর। সেখানেও আছে বাদুরের গুহা, ঈগলের গুহা ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান। কুয়ালালামপুর থেকে ৩৫৫ কিলোমিটার দূরেই আছে আরেকটি পর্যটন এলাকা পেনাঙ্গ। এখানকার মূল আকর্ষণ কেবল ট্রেন। প্রাপ্তবয়ষ্কদের জন্য আট রিঙ্গিত আর ছোট ও বৃদ্ধদের জন্য চার রিঙ্গিতের বিনিময়ে এই ট্রেনে চড়ে যেতে পারবেন পেনাঙ্গ পর্বতে। আর মালয়েশিয়ার ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে চলে যেতে পারেন মালাক্কা সিটি। কেনাকাটার জন্য যেতে পারেন প্যাভিলিয়ন, টাইমস স্কয়ার, বিবি প্লাজা, সানওয়ে পিরামিড মার্কেট ইত্যাদি শপিং মলগুলোতে। পৃথিবীর সবগুলো ব্র্যান্ডের পণ্যই পাবেন এই মার্কেটগুলোয়। এছাড়া মালয়েশিয়ার স্থানীয় পণ্যগুলোও গুণগত মান সম্পন্ন, দামও ক্রয়সীমার মধ্যেই। আর ইলেক্ট্রনিকস পণ্য কিনতে চাইলে অবশ্যই যেতে হবে ল-ইয়েট প্লাজা।
তথ্যসুত্র এবং লেখাঃ Click This Link
=================== ইন্দোনেশিয়া ==================
ইন্দোনেশিয়ার প্রায় ৫৭% ভূমি এলাকা ক্রান্তীয় অরণ্যে ঢাকা। এইসব অরণ্যতে অনেক পর্যটক ঘুরতে ভালবাসেন। এছাড়া রয়েছে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত। সবচেয়ে জনপ্রিয় সৈকতগুলির মধ্যে রয়েছে বালি, লোম্বক, বিনতান, ও নিয়াস দ্বীপের সৈকতগুলি। তবে এগুলিতে পর্যটকদের সংখ্যাধিক্যের কারণে ঠিকমত সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না। অপেক্ষাকৃত বিচ্ছিন্ন কিন্তু ভালভাবে সংরক্ষিত সৈকতগুলির মধ্যে আছে কারিমুনজাওয়া, টোগীয় দ্বীপপুঞ্জ, বান্দা দ্বীপপুঞ্জের সৈকতগুলি। সমুদ্রের তীরে সার্ফিং এবং অনেক জায়গায় ডাইভিঙের ব্যবস্থাও আছে। আরও আছে বিস্তীর্ণ প্রবাল দ্বীপ। আর হরেক প্রজাতির প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরীয় উদ্ভিদ ও প্রাণী। ইন্দোনেশিয়ায় আরও রয়েছে অনেক পর্বত, এবং এদের মধ্যে কিছু কিছু আবার আগ্নেয়গিরিও। এগুলিতে অনেক পর্যটক পর্বতারোহণ করতে ভালবাসেন।
তথ্যসুত্র এবং লেখাঃ Click This Link
=================== চীন ==================
প্রাচীন মানব সভ্যতার বিচারে চীন একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে রয়েছে। সাধারণভাবে চীনের দর্শনীয় বিষবস্তুর কথা উঠলেই প্রথমে মনে পড়ে চীনের মহাপ্রাচীরের কথা। কিন্তু এ ছাড়াও বিস্ময়কর আরও অনেক বিষয় রয়েছে, যা অতটা ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় নি। এর ভিতরে উল্লেখযোগ্য বিষয়বলির তালিকা বাংলা বর্ণানুক্রমে সাজানো হলোঃ ইয়েনগান গুহা , কনফুসিয়াসের মন্দির, কনফুসিয়াসের ভবন, কনফুসিয়াসের সমাধিস্থান, জি-আন বৃহৎ মসজিদ, তিয়েন থাইন, তুনহুয়াং মোকাও গুহা মন্দির, পুতালা প্রাসাদ, পেইচিং রাজ প্রাসাদ, প্রাচীন নগর লিচিয়াং
মহাপ্রাচীর, লৌহ প্যাগোডা, শানসি প্রদেশের পিনয়াও প্রাচীন নগর
শিহুয়াং সমাধিস্থান আর সৈনিক ও ঘোড়ার মূর্তির যাদুঘর
তথ্যসুত্র এবং লেখাঃ Click This Link
=================== জাপান ==================
=================== দক্ষিণ কোরিয়া ==================
=================== অস্ট্রেলিয়া ==================
=================== নিউজিল্যান্ড ==================
দৃষ্টি আকর্ষণঃ প্রথমত এতোগুলো ছবির পুরোটাই অন্তঃজালের বিভিন্ন সাইট থেকে নেয়া, তাই ছবিগুলোর তথ্যসুত্র দিতে পারলাম না। লেখাগুলোর লিঙ্ক প্রতি লেখার নীচে দেয়া আছে। আর "কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, কি কি দেখবেন" এই জাতীয় কোন তথ্য দিতে পারলাম না বলে দুঃখিত। নবদম্পতিরা ছবি দেখে সিলেক্ট করুন কোথায় হানিমুনে যাবেন, তারপর নেটে বসে গুগল মামার সাহায্য নিয়ে খুঁজে দেখুন, দেশী-বিদেশী অনেক ট্র্যাভেল এন্ড ট্যুর এজেন্সির অসংখ্য প্যাকেজ খুঁজে পাবেন।
হ্যাভ অ্যা সুইট হানিমুন
(২য় পর্বে সমাপ্য)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৩