somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘের বাড়ি যাবো।

২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার একটা মানুষ ছিলো।

সে প্রতিবছর একবার উপহার পাঠাতো। প্রথমবার উপহার পেয়ে ভাবলাম, দিনটা হয়তো বিশেষ। কি কারণে বিশেষ খুঁজতে খুঁজতে বুঝলাম, তার কোনো বিশেষ দিনের কথাই মনে থাকে না। সে আমার জন্মদিন অব্দি কখনো মনে রাখে নাই। আমাদের প্রথম পরিচয়ের দিনও ভুলে গেছে। ভালবাসা দিবস কিংবা ঈদ তার কাছে কোনোটাই তেমন আহামরি কিছু না। অথবা সবদিনই তার কাছে বিশেষ ছিলো। জানিনা আসলে। সেইজন্যই বছরজুড়ে অপেক্ষা করতে হতো। সত্য বলতে, এই অপেক্ষারা ছিলো সুখের। যেনো অপেক্ষা করতে পারলেই বাঁচবো।

ত, প্রথমবার তার কাছ থে পেলাম বাক্স ভর্তি শুকনো পাতা। সেই পাতার মাঝে একটি চিরকুট, 'তোমাকে না দেখতে পেয়েই ওরা এমন শুকায়ে গেলো।একবার পেলাম, এক দিস্তা কাগজ। সমস্তটাতেই আমার নাম লেখা। চিরকুটে লেখা ছিলো, 'এত যে তোমারে ডাকি, তবুত তো ফুরায় না।'

যেবার আয়না পাঠালো সেবার লেখা ছিলো 'এইখানে তাকায়ে দেখোতো, সবচেয়ে সুন্দর মানুষটারে দেখতে পাও?' চিরকুট হাতে নিয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকি। আমার ভালো লাগে। একবার আসলো, একটা ক্যানভাস। হাবিজাবি দাগ টানা। চিরকুটে ছিলো, 'তোমারে আঁকতে গিয়েই শিখলাম, তোমারে যে আঁকা যায় না।

এক প্যাকেট সিগারেট আর একটা দিয়াশলাইয়ের সাথে ছিলো, 'আমাকে ওমন পুড়াইয়া দিতে তুমি জ্বলে উঠবা কবে?'এক শীতে পাঠিয়েছিলো একটা ছাতা। চিরকুট পড়ে জানলাম বৃষ্টি আমাকে একা একা ভিজিয়ে দিতে পারলে তার হিংসা হয়। শীতের দিনে তার মাথায় বৃষ্টি এসে কেনো ভর করেছিলো সেসব কিছুই লিখেনি। তাই অই পুরো শীত কেটেছে গায়ে শীত, মনে বৃষ্টি, আর মাথায় ছাতা নিয়ে।

আরো কি কি যে থাকতো সেইসব উপহারে। একবার ত এক বোতল পানি পাঠালো। চিরকুটে ছিলো 'তোমার নাকি কর্ণফুলী পছন্দ?'
আমরা একসাথে বসে সংবাদ দেখতে গিয়ে মন্ত্রী-আমলা-কামলা নিয়ে হাসি তামাশা করিনি। মায়ের যতটা লুকানো দুঃখ আমার কাছে ছিলো, সেসব আমার কাছেই আজও তেমনি লুকানো। তবু আমি এই মানুষটাকে ভালবাসতাম শৈশবের প্রথম চক-স্লেটের মত বিস্ময় নিয়ে। এই মানুষটা আমাকে ভালোবাসতো কিনা আমি জানিনা। কারণ এইরকম কোনো মানুষ আমার কখনো ছিলো না।

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১২:১২
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×