আম্মু আমার মা
সাম্মু আমাদের সামু
হাসি আমি
আমার নেট ব্যবহার সীমিত, মায়ের কড়া আদেশ। এই সীমিত সময়ে ফেসবুক, সামু, ইয়াহু, সবটাই কাভার করতে হয়। এই সীমার মধ্যে থেকেও মাঝে মাঝে সীমাহীন হয়ে পড়ি। ফলে আসে মায়ে বকুনি। দ্যান নাক কাঁদুনি, তবে নিরবে বড় আওয়াজ করে কাদঁতে পারিনা আমি।
আমি নেটে কি করি সব চেক করবে ওই আম্মুটি আমি কি ছোট বাচ্ছা নাকি? সেই হিসেবে সামুর সাথে মায়ের পরিচয়টা।
ক'দিন পূর্বে মায়ের কোমড় ব্যথা, নড়া চড়া তেমন করতে পারেনা, এখন আমিই মহারানী বাসার মাকে জালাতন করতেই ইচ্ছেমতন টিভি দেখি, হাই ভলিয়মে গান শুনি, ইচ্ছে মতন ঘর নোংরা করি, আবার সাজাই, ইচ্ছে মতন নেট ব্যাবহার করি, সিনেমা দেখি। আহ কি মজা। মা শুধ বিছনাতে শুয়ে শুয়ে বকে, আসুক তোর বাপ, তোর বিয়ে দিয়েই আমি ক্ষান্ত হবো।
এই মায়েদের একটাই যন্ত্রনা, কিছু হতে পারেনা, বিয়ে বিয়ে বলে আলটিমেটাম দিবে। আমিকি এসবে ভয় পাই?
মায়ের অসুখে রাজত্ব পেলেও একটা মহা সমস্যায় পড়ি সবসময়, রান্না আমাকেই করতে হয় তো সেদিন ভাত চুলায় দিয়ে সামু পড়ছিলাম । ভাতের কথা আমার খেয়াল নেই। পোড়া খোশবুতে আমার মনে হলো চুলায় ভাত। গিয়ে দেখি সব কি সুন্দর করে পুড়ে কালো কালো হয়ে গেছে, পোড়া কালো ভাত খেতে কেমন হবে ভাবছিলাম, পেছনে দেখি মা দাড়িয়ে। দিল একটা থাপ্পড় ঠিক কান বরাবর
ওই পোড়া ভাত সব তুই খাবি , আর বাকি যা থাকবে তোর বাপ আসলে খাবে।
কাঁদতে কাদঁতেই বলি এতদিন কি ভাত গুলো থাকবে?
হুংকার দিয়ে বলে ওই তোর বাপের কাছে ডেকসিটাই কুরিয়ারে পাঠাবো বলেই আরেকটা চড়।
চড় খেয়ে রুমে গিয়ে ল্যাপি খুলে যেইনা সামু খুল্লাম প্রথমেই নজরে এলো ঘুড্ডির পাইলট ভাইয়ের বউয়ের বাজারের ফর্দ নিয়ে পোষ্টটা।
কাদঁতে কাদঁতে পোষ্ট পড়ে হাসতে থাকি। তখনো চোখের পানি গড়াচ্ছে, এ অবস্থাতেই কাদঁতে কাদঁতেই হাসছি । মা আমার দিকে চোখ বড় বড় তাকায় , ভাব খানা এমন থাপ্পড় কি জোরে দিয়ে ফেল্লাম নাকি? মেয়েটারকি মাথাটাই নষ্ট হয়ে গেল?
..........
ল্যাপিটা মায়ের কাছে নিয়ে গিয়ে পোষ্টের বাজারের ফর্দটা দেখাই। মাও পড়ে পড়ে হাসে ।
.............
কিছুক্ষন পর আম্মুকে বলি, পোড়া ভাতের ডেকসি কি বাবার কাছে পাঠাবে?
মা বলে - না,
আমায় কি বিয়ে দিয়ে দেবে?
মা বলে - না
তাহলে এবার চুপ করে শুয়ে থাকো, একদম নড়বেনা, তেল মালিশ করে দেই।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১২ বিকাল ৩:১৭