রাজধানীর মতিঝিলে দুপুর বেলায় বাসাচায় আহত হয়ে কাতরাচ্ছে বুয়েটের একজন ছাত্র। আশপাশে হাজার হাজার হোমো সেপিয়ানস (আপানাদের ভাষায় মানুষ)গোত্রের প্রানী কিন্তু কেউ ছেলেটিকে তুলে হাসপাতালে নিচ্ছে না। কিন্তু ওই এলাকার অর্ধ-উলঙ্গ পাগল একটি লোক যে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় সে দ্রুত একটি রিকশা ডেকে ছেলেটিকে হাসপাতালে ভর্তি করলো। ১৬ কোটি বাংলাদেশির কাছে আমার প্রশ্ন-আপনার বলেন কে আসলে সুস্থ মানুষ? অর্ধ-উলঙ্গ সেই পাগল না আপনারা যারা দেখেও না দেখার ভান করে চলে গিয়েছিলেন।
এটি কোন গল্প নয়, সত্যি ঘটনা। তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীর মারা যাবার পর সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধের দাবিতে আমরা একটা আন্দোলন শুরু করেছিলাম। সেই আন্দোলনে আমাকে কথাগুলো বলেছিলো বুয়েটের সেই ছাত্রের বাবা শামসুল ইসলাম। তিনি আমাকে বলেছিলেন, এই সমাজে যাদের আমরা সুস্থ দেখি তারা আসলে পাগল। আর যাদের আমরা পাগল বলি তাদের অনেকেই সত্যিকারের মানুষ।
বাংলাদেশের ৯৯ ভাগ মানুষ এখন অসুস্থ। আমরা চোখের সামনে বিশ্বজিততেদর মরে যাওয়া দেখেও কেউ প্রতিবাদ করি না। আহত হয়ে পড়ে থাকলেও রিকশাওয়ালা বাদে কেউ তাকে হাসপাতালে নেই না। চোখের সামনে কোন মেয়েকে কেউ টিজ করলেও আমরা প্রতিবাদ করি না। অস্ত্র হাতে ছিনতাই হতে দেখেও আমরা কেউ প্রতিবাদ করি না। কারণ, আমার তো কিছু হয়নি। বছরের পর বছর ধরে রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় যাবার জন্য আমাদের জিম্মি করে রাখলেও আমরা কোন প্রতিবাদ না করে হাসিনা-খালেদায় ভাগ হয়ে ঝগড়া করি। চাকুরি দেবার জন্য আমরা ঘুষ নেই বা দেই। এতো সব কিছুর পরেও কি আপনার মনে হয় আপনি মানুষ? সব অন্যায় দেখে ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিয়েই আমরা আর কতোদিন দায়িত্ব এড়িয়ে যাবো। আপনাদের পায়ে পড়ি-চলুন আমরা সবাই জেগে উঠি। আমরা প্রতিবাদ করি। বিশ্বাস করেন-আপনাদের এই দেশে-এই সমাজে আমার নিজেকে পাগল মনে হয়। আমি কিছুতেই এসব মেনে নিতে পারি না। আমাকে যদি কেউ বলতো-তোমার সবটুকু রক্ত আর জীবন দিয়ে দিলে এই দেশে সব ঠিক হবে আমি তাহলে দিয়ে দিতে প্রস্তুত। প্লিজ-চলুন আমরা একটু জাগি। নইলে একদিন বিশ্বজিত-লিমন-তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীরের মতো একই দশা হবে আপনার-আমার।চলুন তার আগেই দেশটা বাঁচাই।চলুন আমরা সবাই মানুষ হয়ে উঠি। চলুন অন্যায় দেখলে রুখে দাড়াই। মানুষের পাশে দাঁড়াই।