somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রফিকুল আমীনকে খোলা চিঠি

০৪ ঠা জুন, ২০১২ সকাল ১১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জনাব,
আমার সালাম নেবেন। আমার পরিচয় আমি লেখার শেষে দিচ্ছি। তবে আমার বড় পরিচয় আমি এমন একটি দেশের নাগরিক যে দেশে ছাগল চুরির জন্য জেল-জরিমানা আর মানুষ খুনের জন্য ফুলের মালাও কখনো কখনো দেওয়া হয়। যেখানে মিডিয়া ট্রায়ালে শুধুমাত্র ব্যবসায়িক স্বার্থে বা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে যে কোনো সুপ্রতিষ্ঠিত নামিদামি ও সৎ প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয় মৃত্যুর চূড়ান্ত নোটিশ কোনোরকম আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই। যে দেশে যে কোনো স্বনামধন্য ব্যক্তিকে ব্যক্তি স্বার্থে চরিত্র হনন করা হয় মিডিয়ার মাধ্যমে সুপরিকল্পিতভাবে। এভাবে আমার পরিচয় দীর্ঘ করে আপনার বিরক্তির কারণ হতে চাই না। তবে মাস দুয়েক ধরে দেশের ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া যেভাবে আপনার স্বপ্নে গড়া প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি-২০০০ লিঃ-এর পেছনে লেগেছে তাতে দেশের অনেক শিক্ষিত, বেকার, চাকরিজীবী, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী (আপনার ৪৪-৪৫ লাখ ডিস্ট্রিবিউটরসহ) এবং অন্যান্য পেশার হাজারো মানুষ যারা নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ও আপনার ডেসটিনি-২০০০ লিঃ সম্পর্কে নূ্যনতম ধারণা রাখে তারা হতাশ, বিমূঢ় ও যারপরনাই ক্ষুব্ধ। এটা এখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট তারা কেন এই মিডিয়া ট্রায়ালের এত ব্যাপক আয়োজন করেছে? এতে কার লাভ? এর আসল বেনিফিসিয়ারি মূলত কারা?
দেশের শিক্ষিত সমাজ ও অভিজ্ঞমহল জানে, কোন পত্রিকা বা টিভি চ্যানেলের মালিক কে? তার ব্যবসায়িক দর্শন কী? তারা দেশ বা জাতির জন্য এ গৌরবময় ব্যবসায়িক জীবনের দীর্ঘ সময়ে কী করেছেন? এসব প্রশ্নের উত্তর সাধারণ মানুষ জানে। তবে মিডিয়া উত্তর পাবে আপনার কর্মের মাধ্যমে যদি তারা মূক বা বধির না হয়, অবশ্য যদি আল্লাহ তাদের সেই বোঝার শক্তি দেন। আমার বুকটা গর্বে ভরে যায় যখন দেখি আপনার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বানোয়াট, মিথ্যা, আজগুবি অভিযোগগুলো আপনি কত সহজভাবে, সহাস্যবদনে সত্য দিয়ে, যুক্তি দিয়ে, প্রচ- আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সাধারণ মানুষের কাছে (এমএলএম জিজ্ঞাসার মাধ্যমে বৈশাখী টিভি রাত ১১টা ৩০ মিনিট) ব্যাখ্যা করেন। আপনার সঙ্গে মিল খুঁজে পাই- আজ থেকে পাঁচশ বছর আগে ইতালিতে জন্ম নেওয়া পৃথিবীর গতিবেগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবার জন্য প্রথম অকুতোভয় শহীদ জিওদার্নো ব্রুনোর সঙ্গে, যাকে সারাবিশ্ব দুঃসাহসী ব্রুনো হিসেবেই চেনে। মহাপ-িত কোপারনিকাস একটি বই লিখে যান মৃত্যুর পূর্বে যেখানে লেখা ছিল_ সূর্য নয়, পৃথিবীই সূর্যের চারপাশে ঘোরে। এটা খ্রিস্টান ধর্মমত ও বাইবেলের সম্পূর্ণ বিপরীত বিধায় তিনি এ সত্য প্রচার করতে সাহস পাননি মৃত্যুভয়ে; কিন্তু তিনি তা একটি বইয়ে মুদ্রিত করে রেখে যান। ব্রুনো এতিম বালক হিসেবে প্রতিপালিত হয়েছিলেন খ্রিস্টান গির্জায় ধর্মযাজকদের দয়ায়। অসাধারণ তীক্ষ্নবুদ্ধি ও প্রত্যুৎপন্নমতি এই বালক অনায়াসেই সকলের প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন। তার মন ছিল চির কৌতূহলী, অক্লান্ত প্রশ্নসঙ্কুল। একদিন লাইব্রেরিতে এক বিস্মৃত শেলফে ধূলিধূসর বহুদিনের অব্যবহৃত একটি চামড়া বাঁধানো বই তার নজরে এল। ওটা সেই কোপারনিকাসের মহাগ্রন্থ, সেখানে লেখা পৃথিবী নয়, সূর্যই হল কেন্দ্র। সূর্যকে কেন্দ্র করেই মহাকাশের গ্রহ-তারকারা ঘুরছে। এ সত্য প্রচার করার সঙ্গে সঙ্গেই ব্রুনো হয়ে উঠলেন ধর্মযাজকদের মহাশত্রু। তার মৃত্যুদ- ঘোষণা করা হল। তাকে গ্রেফতার করে বন্দি অবস্থায় রাখা হল আট বছর। এই দীর্ঘকাল বন্দি করে রাখার উদ্দেশ্য ছিল এই যে, তখনই তাকে হত্যা করা হলে শুধু ব্রুনোকেই হত্যা করা হতো; কিন্তু বেঁচে থাকত তার মতবাদ। অসহ্য অত্যাচারে নতি স্বীকার করে যদি তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং জনসমক্ষে তার মতবাদকে ভ্রান্ত বলে স্বীকার করেন তাহলেই ধর্মযাজকদের অনেক লাভ। ব্রুনোকে রাখা হল এমন একটি কুঠুরিতে যার ছাদ সিসা দিয়ে তৈরি। গরমকালে অসহ্য উত্তাপে সে কুঠুরি অগি্নকু- এবং শীতকালে অস্বাভাবিক ঠা-ায় লাশকাটা হিমঘরের মতো। একটু একটু করে ব্রুনো মৃত্যুর দিকে অগ্রসর হলেন। কিন্তু তাতে মনের দৃঢ়তা এতটুকুও কমল না বরং স্পষ্ট কণ্ঠে তিনি তার উক্তিগুলো প্রমাণ দিতে প্রস্তুত রইলেন। এভাবে দীর্ঘ আট বছরেও তাকে টলাতে না পেরে তাকে মৃত্যুদ-াদেশ দেওয়া হল। মৃত্যুর ঠিক আগে তাকে সুযোগ দেওয়া হল যে, এখনো সে তার সমস্ত উক্তি এবং বিশ্বাস প্রত্যাহার করে ক্ষমা ভিক্ষা করতে পারে। অসীম ঘৃণাভরে ব্রুনো সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেন এবং কারো সাহায্য ছাড়াই উঠে গেলেন মঞ্চের ওপরে। দ-ের সঙ্গে তাকে বাধা হল। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হল পায়ের দিক থেকে। দপ করে জ্বলে উঠল আগুন। কিছুক্ষণ পর ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় ঢেকে গেল সব দিক। একটু পর প্রতীক্ষমাণ উৎসব লোভী বিপুল জনতা মহাবিস্ময়ে চেয়ে দেখল ব্রুনোর সর্বাঙ্গ, মাথার চুল পর্যন্ত জ্বলে উঠেছে; কিন্তু সামান্য আর্তির চিহ্ন নেই তার মুখে। কঠিন মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও ব্রুনো যেমন ধারণ করেছিলেন মহান সত্যকে, শারীরিক যন্ত্রণাকে তুচ্ছ করেছিলেন প্রচ- মানসিক শক্তি দ্বারা, তেমনি আপনিও এই মিডিয়া ট্রায়ালে দুঃসাহসিক ব্রুনোর মতো প্রচ- আত্মবিশ্বাসে ধরে আছেন এক পরম সত্যকে। সাধুবাদ জানাই আপনার আত্মবিশ্বাসকে। আপনার এই ধৈর্যকে।
মহাত্মন,
শুধু এই বাংলাদেশে নয়, সারাবিশ্বেই সতীকে বারবার সতিত্বের পরীক্ষা দিতে হয়, অসতীকে নয়। বর্তমানে আপনার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় যাচ্ছে তাতে সন্দেহ নেই। অথচ আপনার ছিল কানাডার মতো দেশে সিটিজেনশিপ, এমওয়ের মতো বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ এমএলএম কোম্পানির চাকরি, আরাম-আয়েশের জীবন। আজকে যাদের নাম শুনে সারাবিশ্বের প্রতিটি মানুষের হৃৎকম্পন ওঠে, যাদের দানে ধন্য এই বসুধা, তাদের জীবনেও কিন্তু এমন দুঃসময় এসেছে কোনো আগাম নোটিশ না দিয়েই। আপনার প্রতিষ্ঠিত এমএলএম কনসেপ্টকে যেসব ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক ভাইয়েরা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় বড় অধ্যাপক, কলামিস্টরা আক্রমণ করে, নিন্দা করে আপনার প্রতিষ্ঠানকে হায় হায় কোম্পানি বলে দেশের সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে এমপি-মন্ত্রীদের আপনার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উস্কানি দিচ্ছে, তারা কিন্তু হঠাৎ করে উদয় হয়নি। তাদের পূর্বপুরুষরাও যুগের পর যুগ এভাবেই বড় বড় আবিষ্কার বা ধারণাকে তাদের অবিবেচনাপ্রসূত লেখনী দ্বারা স্তব্ধ করে দিতে চেয়েছে ইতিহাস যার নীরব সাক্ষী। পৃথিবীর সকল বিজ্ঞানীর বাবা বলে পরিচিত, আপেক্ষিক মতবাদের জনক মহান বিজ্ঞানী আইনস্টাইন নাৎসি অভ্যুদয়ের পর জার্মানি থেকে স্বেচ্ছানির্বাসনে চলে যাওয়ার পর একশ নাৎসি অধ্যাপক তার আপেক্ষিক তত্ত্বকে আক্রমণ ও তার বিরুদ্ধে নিন্দা করে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। আইনস্টাইন তাতে বিচলিত না হয়ে মন্তব্য করেন, আমি যদি ভুল করে থাকতাম তাহলে একজন প্রফেসরের রচনাই যথেষ্ট হতো।
১৯৩০-এর দশকে ফ্রান্সের সরবোতে বক্তৃতা দেওয়ার সময় আইনস্টাইন দুঃখ করে বলেছিলেন, 'আমার আপেক্ষিকতা তত্ত্ব চূড়ান্তভাবে সত্য প্রমাণিত হলে জার্মানি আমাকে একজন জার্মান বলে ঘোষণা করবে, আর ফ্রান্স বলবে আমি একজন বিশ্ব নাগরিক। আর আমার তত্ত্বটি যদি ভ্রান্ত প্রমাণিত হয় তাহলে ফ্রান্স বলবে আমি একজন জার্মান। আর জার্মান বলবে আমি একটা ইহুদি।'
আমি একজন মার্কেটিংয়ের নগণ্য ছাত্র (১৫ বছর ধরে মার্কেটিং অধ্যয়ন করছি) হয়ে বলছি, আপনার এই নেটওয়ার্ক মার্কেটিং কনসেপ্ট যদি আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে সফলভাবে প্রয়োগ করা যায় তাহলে দেশের প্রতিটি মানুষ স্বাবলম্বী হবে আগামী দশ বছরে। আগামী বিশ বছরে এই বাংলাদেশ হবে সিঙ্গাপুর বা মালয়েশিয়ার মতো উন্নত রাষ্ট্র। আমি দৃঢ়ভাবে বলছি, এই দুঃসময়ে আপনি যে ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে আপনার ৪০-৪৫ লাখ ডিস্ট্রিবিউটরকে আগলে রেখেছেন তাতে সেদিন বেশি দূরে নয়, এই সাংবাদিক বন্ধুরাই আপনার এমএলএম কনসেপ্টের বাস্তব প্রয়োগ বিশ্ববাসীকে জানাতে কলম ধরবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন, 'ভগ্নমনোরথ হইও না, নিরাশ হইও না, যদি মুমিন হও, বিশ্বাসী হও, জয়ী তুমি হবেই।'
হে স্বপ্নজয়ী,
আমার মতো অনেকেই অবাক হয়, কীভাবে একজন লিডার তার নেতৃত্বের গুণাবলির মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে। আমরা শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের বিনয় শিক্ষা দিই। আদব-কায়দা শেখাই। বিড়ি-সিগারেট খেতে বারণ করি। অকাজে সময় নষ্ট না করতে বলি। মানুষের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ হতে বিরত থাকতে বলি, নামাজ পড়তে বলি। যেসব গুণাবলি একজন মানুষকে পরিপূর্ণ মানুষ হতে সাহায্য করে সেসব গুণাবলি আমাদের শিক্ষার্থীদের আত্মস্থ করতে বলি। অথচ যেসব ছেলেমেয়ে ডেসটিনি-২০০০ লিঃ-এর সঙ্গে কাজ করে তাদের মধ্যে ওপরের প্রতিটি গুণাগুণের উপস্থিতি আমাকে মুগ্ধ করে দারুণভাবে। কোনো মা-বাবা যদি জানত ডেসটিনি কীভাবে একজন ছাত্রছাত্রীকে পড়াশোনার পাশাপাশি জীবন সম্পর্কে বাস্তববাদী করে গড়ে তোলে, স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলে তাহলে প্রতিটি অভিভাবক সন্তানদের বিশেষ নির্দেশনা দিতেন পড়াশোনার পাশাপাশি ডেসটিনির সঙ্গে কাজ করতে। আপনি যেভাবে স্বপ্নের বীজ প্রতিটি ডিস্ট্রিবিউটরের মাঝে বপন করে দেন সেটা সত্যই চিত্তাকর্ষক। আমার ছাত্র রাকিব (একজন ডায়মন্ড এক্সিকিউটিভ) এখন স্বপ্ন দেখে ডেসটিনির ব্যাংকের (প্রস্তাবিত) ডিরেক্টর হওয়ার। অথচ এ সময় তার ব্যাংকের একটি চাকরি খোঁজার কথা। আপনার অক্লান্ত শ্রম আর অসামান্য মেধায় গড়া ডেসটিনি-২০০০ লিঃ নিয়ে গত দুই মাসের অধিক সময় ধরে দেশের প্রধান প্রধান দৈনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া যেভাবে নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করছে, এর একশ ভাগের এক ভাগও অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়ে যদি করা হতো তাতে সেটা অনেক আগেই ধ্বংস হয়ে যেত। বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বেশি পুঁজির কোনো ব্যাংক নিয়েও যদি হলুদ সাংবাদিকরা এভাবে লাগামছাড়া মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করত তাহলে হয়তো সেই সুবিশাল পরিসরে গড়ে ওঠা আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির আমানতকারীরাও ভয়ে আতঙ্কে দিশাহারা হয়ে আমানত তুলে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ত। অথচ আপনার প্রতিষ্ঠানের ডিস্ট্রিবিউটরদের কী ইস্পাতকঠিন মন! বর্তমানের এই দুঃসময়ে এতসব নেতিবাচক চক্রান্তও তাদের আস্থাকে টলাতে পারেনি বিন্দুমাত্র।
হে এমএলএম গুরু,
আসলে যে সময় অন্যায় সংঘটিত হয় বা কারো প্রতি অন্যায় করা হয় সেই সময় সাধারণ মানুষ বা বিচারকরাও অনেক ক্ষেত্রে বুঝতে পারেন না যে তাদেরও ভুল হতে পারে। পরবর্তীকালে অবশ্য তাদের কাছে সেই ভুল স্পষ্ট হয়। আজকে যে মিডিয়া ট্রায়ালে প্রতিদিন ফাঁসি দিচ্ছে আপনার প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি-২০০০ লিঃকে, সাংবাদিক ভাইয়েরা বিচার করছে হিংসা, দ্বেষ আর নিজেদের ব্যবসায়িক লাভের উদ্দেশ্যে কোনোরূপ তথ্যের সত্যতা পরিপূর্ণভাবে যাচাই না করেই অথবা দেশের ৪০-৫০ লাখ সুবিবেচক ও সৎ ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যারা সফলভাবে ব্যবসা করছে তাদের সুচিন্তিত মতামত উপেক্ষা করে ঠিক এমনটিই ঘটেছিল খ্রিস্টের জন্মের চারশ বছর আগে গ্রিস দেশে, বিশ্বের তাবৎ জ্ঞানীর মহাগুরু মহাজ্ঞানী সক্রেটিসের বেলায়ও। সক্রেটিসের বিরুদ্ধে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের একটি ছিল_ 'তিনি যুবকদের নৈতিক চরিত্র কলুষিত করে তাদের বিপথে চালিত করছেন।' সক্রেটিসের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী তিনজনের মধ্যে একজন ছিল অ্যানিটাস (অহুঃঁং) যিনি একজন গণতান্ত্রিক নেতাও। অ্যানিটাসকে সক্রেটিস একসময় বলেছিলেন যে, তিনি যেন তার ছেলেকে তখনই সৈনিকবৃত্তিতে নিয়োগ না করে আরো কিছুদিন লেখাপড়া শেখান। অ্যানিটাস তা শোনেননি। ফলে কিছুদিন পর যখন ছেলেটা মাতাল এবং দুশ্চরিত্র হয়ে যায় তখন তিনি সক্রেটিসের ওপরই আরো চটে যান। সত্তর বছর বয়সে এথেন্সে সক্রেটিসকে মিথ্যা অভিযোগে বিচারকদের সম্মুখীন করা হয়েছিল। সেই সময় ৫০০ জুরি বিচারকার্যে অংশ নিয়ে সক্রেটিসের বিচার করেন। সেই মিথ্যা অভিযোগ ও অন্যায় বিচারের কারণে আজো এথেন্সবাসী দুঃখ প্রকাশ করে সক্রেটিসকে হত্যা করার কারণে। আজকে যারা আপনার প্রতিষ্ঠিত এমএলএম কনসেপ্টকে মিথ্যা, ভুয়া, বাটপাড়ি ব্যবসা বলে অভিযোগ করছে, আমি দৃঢ়ভাবে বলছি তারাও একদিন দুঃখ করবে এথেন্সবাসীর মতো। দক্ষিণ এশিয়ায় আপনার প্রদত্ত এমএলএম কনসেপ্ট বিশ্বের অন্যান্য দেশের মার্কেটিংবোদ্ধাদের গবেষণার বিষয়বস্তুতে পরিণত হবে। ইনশাল্লাহ সেইদিন আর বেশি দূরে নয়, শুধু যদি সরকার এবং দেশবাসী আপনাকে সৎভাবে এ ব্যবসা পরিচালনা সুযোগ দেয় তাহলে আপনি হবেন আধুনিক এমএলএম কনসেপ্টের জনক। আপনার প্রতিষ্ঠান ছাড়িয়ে যাবে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ এমএলএল কোম্পানি এমওয়ে করপোরেশনকে। আপনার প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি-২০০০ লিঃ যদি সরিষা পরিমাণ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকত বা মানুষ ঠকানোর ব্যবসা হতো তাহলে লে. জেনারেল হারুন-অর-রশিদ বীরপ্রতীক (অব.)-এর মতো সৎ মানুষ ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে এক সেকেন্ডও থাকতেন না কোটি টাকা সম্মানী পেলেও_ এ কথা হলফ করে বলতে পারি। তার মতো একজন মানুষ সারাদেশের মানুষ যাকে চরম এবং পরম শ্রদ্ধাভরে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মান করে, সেই শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি শুধু অর্থের জন্য বাংলাদেশের সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন সংগঠন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম থেকে পদত্যাগ করতেন না। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে যদি সৎ এবং স্পষ্টবাদী সাংবাদিকদের কোনো তালিকা করা হয় সেই তালিকায় প্রথমদিকেই স্থান পাবেন দেশের প্রথিতযশা সাংবাদিক শ্রদ্ধেয় মনজুরুল আহসান বুলবুল সাহেবের নাম। আপনার প্রতিষ্ঠান যদি সততার পরাকাষ্ঠে পরিচালিত না হতো, আপনার দর্শন যদি মিথ্যা আর লোক ঠকানোর ঠগবাজি হতো তাহলে তার মতো একজন আপাদমস্তক সৎ সাংবাদিক ডেসটিনি গ্রুপ পরিচালিত বৈশাখী টেলিভিশনের এডিটর ইন চিফ এবং সিইও (ঈযরবভ ঊীবপঁঃরাব ঙভভরপবৎ) হিসেবে কোনোভাবেই থাকতেন না। আপনি তো অনেক ভাগ্যবান একজন মানুষ। আপনার রয়েছে অত্যন্ত পরিশ্রমী, সৎ এবং সুশিক্ষিত চারজন ক্রাউন এক্সিকিউটিভ, একশ তিনজন ডায়মন্ড এক্সিকিউটিভ, তিন হাজার দুইশ ছেচলি্লশ জন পিএসডি (প্রফিট শেয়ারিং ডিস্ট্রিবিউটর), নয়শ তেহাত্তর জন প্লাটিনাম ডিস্ট্রিবিউটর, চার হাজার একুশ জন গোল্ড ডিস্ট্রিবিউটর এবং আট হাজার আটশ ছেচলি্লশ জন সিলভার ডিস্ট্রিবিউটর_ যারা নিজের জীবনের চেয়ে আপনার স্বপ্নে গড়া প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি-২০০০ লিঃকে অধিক ভালোবাসেন (সূত্র : ৫৫৫ এস্টেটমেন্ট)। আপনার সততার কাছে, আপনার আত্মবিশ্বাসের কাছে গুটিকয়েক পত্রিকার এই মিথ্যা প্রচার সমুদ্রের বুদবুদের মতোই মিলিয়ে যাবে অতি অল্প সময়ে। কিন্তু আপনার প্রতিষ্ঠান বেঁচে থাকবে যুগ যুগ ধরে, কাজ করে যাবে এই অভাগা দেশের কোটি মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে এই প্রত্যাশায় এবং আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনায়_ একজন অপরিচিত শুভাকাঙ্ক্ষী।
জে. আলী এমএলএম গবেষক
সহকারী অধ্যাপক, মার্কেটিং বিভাগ
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।
সু্ত্র: দৈনিক ডেসটিনি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×