জাতীর জনক বঙ্গরন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের ৭ই মার্চের রেসকোর্স ময়দানে প্রদত্ত ঐতিহাসিক ভাষণের পর সারাদেশে সংগ্রাম শুরু হয়। আমরা শ্রীমঙ্গল থানার দক্ষিন শ্রীমঙ্গলবাসী সংগ্রামে অংশ গ্রহনের জন্য সংগ্রাম কমিটি গঠন করি।৪নং সিন্দুরখান ইউনিয়ন কাউন্সিলের তৎকালীন আওয়ামীলীগ সভাপতি জনাব মহব্বত উল্যাকে প্রেসিডেন্ট করে সংগ্রাম পরিষদ কমিটি গঠন করা হয়। জনাব আকবর আলী ,ইজরাগাও , জনাব আঃ ওয়াহিদ কামারগাও জনাব গিরিন্দ্র চন্দ্র ধর খেজুরীছড়া বাগানের বড় বাবু, জনাব জননেতা মরহুম ইসমাঈল হোসেন (শ্রীমঙ্গল আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক/পরে সভাপতি) প্রমূখ ব্যাক্তিগণকে সংগ্রাম কমিটির সদস্য মনোনীত করা হয়।
সংগ্রাম কমিটির সিদ্ধান্ত অনযায়ী তৎকালীন ৫৩ কুমিল্লা মোজাহিদ ব্রিগেডের ক্যাপ্টেন আব্দুল মতলিব (৭নং রাজঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান)কে তাহার অধীনস্থ মোজাহিদগণকে আহবানক্রমে পাক সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখার নিমিত্তে অনুরোধ জানান হয়।
প্রতিবেদক মরহুম আব্দুস সোবহান (ঐ সময়ে ৭নং রাজঘাট ইউনিয়নের সচিব পদে কর্মরত থাকায় মোজাহিদ গণকে আহবান করার দায়িত্ব তাহার উপর অর্পন করা হয়। মোজাহিদগণকে যথাসময়ে আহবানক্রমে সিন্দুরখান বাজার স্থানে প্রস্তুত রাখা হয়।উক্ত ৫৩ মোজাহিদ ব্রিগেডের মেজর জনাব এম এ মোছাব্বির (শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান),শ্রীমঙ্গল-কমলগজ্ঞ থানার সাবেক এম, এন, এ জনাব মোঃ ইলিয়াস এম পি আলতাফুর রহমান মোজাহিদ বাহিনীকে প্রস্তুত রাখার জন্য পরবর্তিকালে নির্দেশ প্রদান করেন। এই সময়ের ভিতরে সিন্দুরখান বাজারস্থ ই,পি , আর ক্যাম্পের অস্ত্র শস্ত্র মোজাহিদ বাহিনীর নিয়ন্ত্রনে রাখা হয়।ই, পি আর সদস্যগণকে নিরস্ত্র করা হয়।১৯৭১ইং সনের ২৬শে মার্চ কাল রাতে বঙ্গবন্ধুকে পাক বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারের সংবাদ এলাকায় ছড়াইয়া পড়িলে তাৎক্ষনিক ভাবে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হইয়া যায়। পাক বাহিনীরা সারা দেশের মত সিলেট জেলায়ও (বর্তমান সিলেট বিভাগ)পরবর্তিতে আক্রমন চালায়। আমাদের দক্ষিন শ্রীমঙ্গলের মোজহিদ বাহিনী পাক সেনাদের সংগে শেরপুর স্থানে মুখোমখী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।কয়েকদিন যুদ্ধ চলার পর পাক বাহিনী পিছু হটিয়া সিলেট সদরে অবস্থান নেয়।
আমাদের দক্ষিন শ্রীমঙ্গলের মোজাহিদ বাহিনীর প্লাটুন কমান্ডার মোঃ আব্দুল হালিম সহ কয়েকজন মোজাহিদ পলায়নরত পাক বাহিনীকে তাড়া করিয়া সিলেট জেল খানা পর্যন্ত অগ্রসর হোন। কিন্তু সিলেটের পাক বাহিনীর বুহ্য ভেদ করা সম্ভব না হওয়ায় কিছু মোজাহিদ আটকা পড়িয়া যায় এবং পাক বাহিনীর হাতে বন্দি হয় এবং তাহাদের পরবর্তীকালে মৌলভীবাজার জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। চলবে (পান্ডুলিপিটি বেশ লম্বা হওয়ায় কয়েকটি খন্ডে প্রকাশ করার চেষ্টা করবো।)