কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে থেমে থাকা কালো রঙের প্রাইভেট কারটি লক্ষ্য করে তীব্র গতিতে মেয়েটি তার পায়ের একপাটি জুতা ছুড়ে মারলো। এর পর পরই কালো রঙের গাড়িটি সামনে এগুতে লাগলো।
কিছুটা পেছনেই ছিল আমার গাড়ি। আমি গাড়ির গতি বাড়িয়ে দিয়ে কালো রঙের গাড়িটির গতিরোধ করে সামনে এসে পথ আগলে দাঁড়ালাম। গাড়িটি সাইট করতে বাধ্য করলাম।
গাড়িটিকে থামতে দেখে মেয়েটি দ্রুত পায়ে হেঁটে এলো আমাদের দিকে।
ড্রাইভিং সিটে থাকা ছেলেটি বের হয়ে এলো। চুলের রঙ ও চেহারা দেখে প্রাথমিক দৃষ্টিতে বড় লোকের কুলাঙ্গার বলেই মনে হলো।
"হেই ম্যান হোয়াটস রঙ?" উচ্চস্বরে বলল আমাকে।
কী জবাব দিবো ভেবে পেলাম না। সত্যিই তো কেন পথ আগলে দাঁড়ালাম আমি! মাথা কাজ করছিল না কিছু সময়ের জন্য।
এমন সময় মেয়েটি হন হন করে কাছে এসে দাঁড়ালো আমাদের। চিৎকার করে বলল, "ভাই, আমি হেঁটে আসছিলাম। এই বদমাশ বাজে মন্তব্য করে আমাকে ওর গাড়িতে উঠতে বলছিলো। এ জন্য ওকে আমি পায়ের জুতা ছুড়ে মারছি।"
জিজ্ঞেস করলাম, " কি রে ব্যাটা ঘটনা সত্য? চড় মেরে তোর সব দাঁত ফেলে দিবো। বল ঘটনা সত্য?"
"আপনে জানেন আমি কে?" নিজের দিকে আঙুল দেখিয়ে বলল কুলাঙ্গার।
"তুই নিজেই তো জানস না তুই কে। আমি কী করে জানবো রে?" বললাম আমি। অপরাধীর চিত্ত সদা দুর্বল হয়- এ কথা আমার জানা রয়েছে। তাই নিজের চে' গা-গতরে ডাবল হওয়া সত্ত্বেও ভয় পেলাম না মোটেও।
কথার ফাঁকেই মেয়েটি 'ঠাস' করে কুলাঙ্গারের গালে কষে আড়াই মণ ওজনের এক চড় বসিয়ে দিলো। লম্ফ দিয়ে বাম হাতে মারলাম আমিও একটা।
অবস্থা বেগতিক দেখে অবশেষে কুলাঙ্গার মেয়েটির কাছে মাফ চাইলো দুহাত জোর করে। তরুণিটির সাহস দেখে আমি মুগ্ধ এবং অভিভূত।
কুলাঙ্গারকে পুলিশে দিতে চাইলাম। তরুণি বলল, "থাক ভাইয়া বদমাশটার শিক্ষা হয়েছে। ছেড়ে দেন।"
আমি আরো অভিভূত হলাম, যখন জানতে পারলাম, তরুণিটি একজন গার্মেন্ট শ্রমিক। কারখানায় কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলো সে।
আজকাল পথ চলতে প্রায়ই মেয়েদের এরকম বদমাশদের কবলে পড়তে হয়। তবে সেই বদমাশদের কিভাবে শায়েস্তা করতে হয় এই তরুণিটির কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারেন অনেকেই। আগ পিছ না ভেবে পায়ের একপাটি জুতা খুলে সজোরে ছুড়ে মারুন এদের দিকে। গালে বসিয়ে দিন আড়াই মণ ওজনের চড়...।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:২৩