বরাবরের মত এবারও রমযানে মূল্যবৃদ্ধি ঠেকানোর জন্য কিছু পণ্যের শুল্ক শূন্যে নামিয়ে আনা হয়েছে। বাণিজ্য ও অর্থমন্ত্রণালয়ের টানাপড়েনে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় রোযা শুরূর দুই সপ্তাহ আগে। অথচ এলসি খোলার পর কানাডা, অসট্রেলিয়া বা রাশিয়া-তুরস্ক থেকে 4 থেকে 5 সপ্তাহ সময় লেগে যায় দেশে পণ্য আসতে। শূন্য শুল্কের পণ্য আসতে আসতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোযার অর্ধেক পার হয়ে যেতে পারে। এ সময়ে এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম কমতে শুরূ করে (বিশষ করে পাইকারি বাজারে)। সিদ্ধান্তহীনতায় না ভোগে 1 মাস আগে শুল্ক পদক্ষেপ নিতে পারলে এর সুফল বেশি পাওয়া যেত।
রমযানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার বিডিআর দ্্বারা গুরূত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রয়োজনীয় পন্য ন্যায্য মূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা করেছে। ভাল কথা। কিন্তু আমি মহাজন এখানে ভিন্নমত দিব। এই ব্যবস্থা যদি এক মাসের জন্য হয় তাহলে আমার কয়েকটা কথা আছে। এতে সাধারণ ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়ে নিরূৎসাহী করবে। যার প্রভাবে দ্রব্য মূল্য বরং বেড়ে যাবার সম্ভাবনাই বেশী। বিডিআরের কমদামে দ্রব্যাদি বিক্রির ভয়ে আমদানিকারকরা বাজার চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানী করতে ভয় পাবে। ফলে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাবে।
বিডিআর যে মূল্যে পণ্য বিক্রি করছে তাতে গুটি কয়েক লোকের উপকার হচেছ দেখা গেলেও আসলে তেমন উপকার হচ্ছে না দেশবাসীর। বিডিআর পণ্য সংগ্রহে কোন চাঁদা দেয়না কিন্তু একজন খুচরা ব্যবসায়ী বা সাধারণ ব্যবসায়ীকে যে ভাবে পথে ঘাটে ব্যবসাস্থলে চাঁদা দিতে হচ্ছে তাতো সবসময়ের জন্য ওপেন সিক্রেট। এই চাঁদার টাকা যোগ করেই সাধারণ ব্যবসায়ীকে পণ্যমূল্য নিধর্ারণ করতে হয়। তাছাড়া ব্যবসায়ীদের ট্যাক্স , ভ্যাট দিতে হয় সরকারি কোষাগারে। আর ব্যবসা পরিচালনার খরচতো বহন করতে হয় তাদেরকেই। একজন ব্যবসায়ীকে ঘিরে বউ বাচ্চা ও পরিবারসহ অনেকই নির্ভর করে থাকে। কিন্তু সরকারি মাইনে দিয়ে পরিচালিত বিডিআর বাহিনীর পন্য বিক্রিতে এসবের কিছুরই বালাই নাই। [গাঢ়]সরকার বেহুদাই জনগনের দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির পুঞ্জীভূতক্ষোভ নিরসনে এবং সরকারের সমর্থনপুষ্ট সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজদের দমননীতি গ্রহন না করে ব্যবসায়ীদের সাথে প্রতিদ্্বন্দিতায় নামিয়েছে বিডিআরকে।[/গাঢ়]
ব্যবসায়ীরা একেবার ধোয়া তুলসীপাতা তা কিন্তু বলব না। অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী করছেটা কি? যেমন গরূর গোস্ত সরকার 140 টাকা নিধর্ারণ করলেও আমাদের কিনতে হচ্ছে 160-170টাকা কেজি দরে (হাড়সহ)। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু কিছু সদস্য সাধারণ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের অভিযোগ তুলে হয়রানি ও চাঁদাবাজি করছে। এর বিরূপ প্রভাব ইতোমধ্যেই বাজারে পড়তে শুরূ করেছে।
[গাঢ়]বাজারনীতির সূত্রানুযায়ী বাজারের দ্রব্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেলে তার মূল্য বৃদ্ধি পাবে, এটাই স্বাভাবিক। এব্যাপারে বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনের পাশাপাশি জনসাধারণকে সিয়াম সাধনার নিমিত্তে অস্বাভাবিক ঘি-গু খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তা না হলে সরকারের একার পক্ষে কখনো দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব নয়।[/গাঢ়]