আজ এইখানে,
কবিতার ব্যবচ্ছেদ করা হবে।
আমরা পোস্টমর্টেমও বলতে পারি।
প্রকাশিত অপ্রকাশিত সব মৃত কবিতা নিজ তাগিদে এসেছে ব্যবচ্ছেদ করাতে,
জীবিত কবিতারাও আন্দোলন করছে জীবন্ত ব্যবচ্ছেদ করার জন্য।
কিন্তু কবিতার তো
হাড় ভাঙ্গা হাত নেই,
পা নেই,
বুকের ভিতর স্পন্দনহীন হৃদপিন্ড নেই,
বাতাসের অভাবে চুপসে যাওয়া ফুসফুস নেই,
পেটের ভিতর অতিমাএায় ঝলসে যাওয়া যকৃত নেই,
অগ্নিপিণ্ডের মতো অ্যগনাশয় নেই,
মাএাতিরিক্ত বিষপানে নীল হয়ে যাওয়া খাদ্যস্থলী নেই,
ইলেকট্রিক তাড়ের মতো ফায়ারিং হয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া শিরা উপশিরা নেই,
অক্সিজেনের অভাবে লাল কালো হয়ে যাওয়া রক্ত নেই,
এবইউজ হওয়া যৌনাঙ্গ নেই,
মাথার ভিতর মারাত্মক রকম ক্ষত বিক্ষত হওয়া মস্তিষ্ক নেই।
তাহলে কিভাবে হবে কবিতার ব্যবচ্ছেদ?
কেউ আসছে না ব্যবচ্ছেদের দায়িত্ব নিতে।
তারা নিজেরাই শুরু করেছে নিজেদের ব্যবচ্ছেদ, আই মিন পোস্টমর্টেম।
কবিতার অঙ্গ প্রতঙ্গ ব্যবচ্ছেদ চলছে, চলছে নিরন্তর গবেষণা, কবিতার ময়নাতদন্তের ঘরে।
হাজার হাজার রির্পোট বুকে নিয়ে দাড়িয়ে আছে প্রত্যেকটা প্রকাশিত অপ্রকাশিত মৃত ও জীবিত কবিতা।
রিপোর্টের কাগজে মারাত্মক রকম কালো রক্ত দিয়ে লিখা:
আমাকে মেরে ফেলা হয়েছিল, নীরবে ধর্ষিত হওয়া একটা মেয়ের আর্তনাদ শুনে ছিলাম বলে।
আমাকে মেরে ফেলা হয়েছিল,
কয়েকটা হত্যা মামলার সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে ছিলাম বলে।
আমাকে মেরে ফেলা হয়েছিল,
রাস্তায় চাপা পড়া অর্ধমৃত কুকুরটার পাশে শুয়ে ছিলাম বলে।
আমাকে মেরে ফেলা হয়েছিল,
বাজারের ছোট গলিতে পাগল মেয়েটিকে গর্ভবতী করার সময় আমি দেখেছিলাম বলে।
আমাকে মেরে ফেলা হয়েছিল,
এসিডে ঝলসে যাওয়া একটি মেয়ের মুখ দেখেছিলাম বলে।
আমাকে মেরে ফেলা হয়েছিল,
পতিতালয়ের মেয়েদের সুস্থ জীবন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলাম বলে।
অামাদের কে মেরে ফেলা হয়েছিল, অামরা সবাই তাদের অপরাধের সাক্ষী হয়েছিলাম বলে।
আমাদের কে মেরে ফেলা হয়েছিল, আমরা সবাই তাদের অপরাধের প্রতিকূলে পরিস্ফুটিত হয়ে দাড়িয়ে ছিলাম বলে।
আজ এইখানে,
আমাদের ব্যবচ্ছেদ আমরা নিজেরাই করলাম।
আমাদের ব্যবচ্ছেদের রিপোর্ট আমাদের অপেক্ষায় আরো বেশি পরিস্ফুটিত তাদের অপরাধের প্রতিকূলে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৪