somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাবনা ও সিরাজগঞ্জে প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে ২৫ হাজার লিটার নকল দুধ :-& :-& :-&

২৭ শে জুলাই, ২০১১ সকাল ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কপি পেস্ট পোস্ট দেইনা, তবে মনে হলো আমরা আসলে কি খাচ্ছি তা সবার জানার জন্য এই পোস্টটা শেয়ার করি। অনেকের কাছে এটা অনেক পুরানো বিষয় তবু আরেকবার সবাইকে রিমাইন্ডার দিচ্ছি। ... সাবধান, আপনার বাচ্চার মুখে কি তুলে দিচ্ছেন খেয়াল রাখুন
-------------------------------------

দুগ্ধভাণ্ডার খ্যাত পাবনা ও সিরাজগঞ্জ অঞ্চলে ৫৮টি ছানা তৈরির কারখানায় প্রতিদিন প্রায় পৌণে এক কোটি টাকার ২৫ থেকে ২৭ হাজার লিটার নকল দুধ তৈরি হচ্ছে। ছানার পানি, ক্ষতিকর স্কিম মিল্ক পাউডার, ফরমালিন, কাটার অয়েল, সোডা, দুধের ননীসহ নানা উপকরণ মিশিয়ে নকল দুধ তৈরি করা হচ্ছে। বেসর-কারি দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠা-নের এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারি একটি প্রভাবশালী মহলের যোগসাজসে নকল তরল দুধ সংগ্রহ করছে। পরে আসল দুধের সাথে নকল দুধ মিশিয়ে বিভিন্ন নামি-দামি দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান চটকদার লেবেলে ওই দুধ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী বড়াল নদী পাড়ে গড়ে ওঠা মিল্কভিটাকে কেন্দ্র করে পাবনা ও সিরাজগঞ্জ অঞ্চলে প্রায় চার সহাস্রাধিক গো-খামার গড়ে উঠেছে। এই দুগ্ধ অঞ্চলকে টার্গেট করে মিল্কভিটার পাশাপাশি প্রাণ ডেইরি, আকিজ ডেইরি, আফতাব ডেইরি, ব্র্যাক ডেইরি ফুড (আড়ং), আমো ফ্রেস মিল্কসহ বেশ কিছু বেসরকারি দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান দুধ সংগ্রহ করতে এ অঞ্চলে তাদের আঞ্চলিক দুগ্ধ সংগ্রহশালা স্থাপন করেন। এর ফলে তরল দুধের চাহিদা দিন দিন বাড়তে থাকে। সম্ভাবনাময় এই শিল্পকে কেন্দ্র করে পাবনা ও সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের হাজার হাজার পরিবার তাদের জীবিকার পথ হিসেবে দুধের ব্যবসা বেছে নেয়। গড়ে ওঠে শত শত গো-খামার। দুধের ব্যবসা করে খামারিরা লাভবান হতে থাকেন। দুধ চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় ছানা উৎপাদক এবং এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী গোপনে নকল দুধ তৈরি করে আসল দুধের সাথে মিশিয়ে বেসরকারি দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করছে। এতে সহযোগিতা করছে দুগ্ধ সংগ্রহশালার এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারি। জনস্বাস্থ্য ধংসের মুখে ঠেলে দিয়ে চক্রটি নকল দুধের বেআইনি কারবার করে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে এ অঞ্চলের দুগ্ধ খামারিরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
পাবনা প্রাণী সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় ছোট-বড় প্রায় চার সহস্রাধিক দুগ্ধ খামার রয়েছে। এছাড়া গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই গরু পালন করে দুধ উৎপাদন করা হয়। এ অঞ্চলে প্রতিদিন ৩ লাখ ৩৭ হাজার লিটার দুধের চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিন উৎপাদন হচ্ছে তিন লাখ ১২ হাজার লিটার। এরমধ্যে দেড় লাখ লিটার বাঘাবাড়ী মিল্কভিটা, এক লাখ ৩০ থেকে এক লাখ ৪০ হাজার লিটার দুধ আফতাব, আকিজ, প্রাণ, ব্রাকসহ বিভিন্ন বেসরকারি দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান, ঘোষরা ২৮ থেকে ২৯ হাজার লিটার, দুই শতাধিক মিষ্টির দোকান ১০ হাজার লিটার, হাট-বাজারে স্থানীয় ক্রেতারা ৮ হাজার লিটার দুধ ক্রয় করে থাকে। এ হিসেবে প্রতিদিন দুধের ঘাটতি পড়ে প্রায় ২৫ হাজার লিটার। এক শ্রেণীর অসাধু ঘোষ ও ব্যবসায়ী নকল দুধ তৈরি করে দুধের এই ঘাটতি পূরণ করে থাকে বলে জানা গেছে।
সংশ্ল্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পাবনা জেলার বেড়া, সাঁথিয়া, ফরিদপুর, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, সুজানগর এবং সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, তারাশ, বেলকুচি ও কাজীপুর উপজেলার সরোজিদ কুমার ঘোষ, দুলালচন্দ্র ঘোষ, বিশ্বনাথ ঘোষ, পরিমল ঘোষ, পরিতোষ ঘোষ, দুলাল ঘোষ, রবি ঘোষ, মানিক লাল ঘোষ, নবরত্ন ঘোষ, মেজর ঘোষ, নব কুমার ঘোষ, রঞ্জিত কুমার ঘোষ, অধির কুমার ঘোষ, রঘু ঘোষ, পরিতোষ ঘোষসহ আরো কয়েকজ ঘোষ ও ব্যবসায়ী প্রতিদিন ১২৫ মণ ছানা তৈরি করে। ওই পরিমাণ ছানা তৈরিতে প্রায় সাতশ’ মণ দুধের প্রযোজন হয়। ঘোষেরা ছানা তৈরির পর ছানার পানি ফেলে না দিয়ে তা মজুদ করে রাখে। পরে ওই ছানার পানি দিয়ে তৈরি করা হয় নকল দুধ।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, ছানা কারখানার ছানার পানিই নকল দুধ তৈরির প্রধান উপকরণ। কতিপয় আসাধু ব্যবসায়ী ও ঘোষ প্রতি মণ ছানার পানিতে ২ কেজি ননী, সামান্য পরিমাণ লবণ, খাবার সোডা, ১ কেজি চিনি ও দুধের কৃত্রিম সুগন্ধি মিশিয়ে অবিকল দুধ তৈরি করছে যা রাসায়নিক পরীক্ষা ছাড়া আসল না নকল বোঝার উপায় থাকে না। ঘোষ ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে এই নকল দুধ সংগ্রহ করে সংশ্ল্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অসাধু কর্মকর্তারা পাঠিয়ে দেন দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে। পরে প্রক্রিয়াজাত করার সময় নকল দুধের সাথে আসল দুধ মিশে সব দুধই ভেজালে পরিণত হয়। ব্যবসা-য়ীরা দুধ তাজা রাখতে ফরমালিন ব্যবহার করছে। প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় আসল দুধের শতকরা ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ফ্যাট (ননী) বের করে নেয়া হয়। এতে দুধের পুষ্টিমান কমে যায়। এ দুধ কিনে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন। এই নকল দুধ তৈরি ও বিক্রি অনেকটাই খোলামেলা ভাবে চলছে। ছানার পানি ছাড়াও অন্য এক পদ্ধতিতে অসাধু ঘোষ ও ব্যবসায়ীরা নকল দুধ তৈরি করছে।
সংশ্ল্লিষ্ট সূত্র জানায়, এক মণ ফুটন্ত পানিতে ১ কেজি দুধের ননী, আধা কেজি স্কিম মিল্ক পাউডার, কাটার অয়েল, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, এক ফোঁটা ফরমালিনসহ অন্যান্য উপকরন মিশিয়ে নকল দুধ তৈরি করা হয়। ক্ষতিকর স্কিম মিল্ক পাউডার ভারত থেকে সীমান্ত পথে দেশে প্রবেশ করছে। সূত্র জানায়, দুধের ঘনত্ব নির্ণয়ে ল্যাকটোমিটার ব্যবহার করে ভেজাল শনাক্ত করা যায় বলে দুধে ফরমালিনসহ স্কিম মিল্ক পাউডার ব্যবহার করে। এতে দুধের ঘনত্ব বেড়ে যায় এবং দুধ তাজা থাকে। ফলে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনাকালে ল্যাকটো-মিটার দিয়ে এই সুক্ষ্মপ্রতারণা ধরা সম্ভব হয় না। তবে সংশ্ল্লিষ্টরা নকল দুধ তৈরি, ক্রয়-বিক্রয় ও প্রক্রিয়া-জাতকরণের কথা অস্বীকার করেছেন।
সংশ্ল্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পাবনা জেলার বেড়া, সাঁথিয়া, ফরিদপুর, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, সুজানগর উপজেলা এবং সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, তারাশ, বেলকুচি ও কাজীপুর উপজেলার অসাধু ব্যবসায়ী ও ঘোষেরা নকল দুধ তৈরি করছে। প্রশাসনের নজরদারি না থাকার সুযোগে নকল দুধ ব্যবসায়ী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বেড়ার আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের স্থানীয় ব্যবস্থাপক মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, তারা সরাসরি গো-খামারিদের কাছ থেকে কোম্পানির নিজস্ব কর্মচারি দ্বারা আধুনিক যন্ত্রপাতি ও রাসায়নিক পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়ে ভেজালমুক্ত দুধ সংগ্রহ করা হয়। প্রাণ ডেইরির আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক শরিফ উদ্দিন তরফদার, ব্রাক ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস দুগ্ধ ক্রয় কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক বাসার আলীসহ স্থানীয় ক্রয় কেন্দ্রের ব্যবস্থাপকরা নিজেদের দুধ সংগ্রহ পদ্ধতি শতভাগ ভেজালমুক্ত বলে দাবি করেছেন।
পাবনা জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা জানান, নকল দুধ তৈরি ও বিক্রয় সম্পর্কে তিনি শুনেছেন এবং বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করেছে। বিএসটিআইয়ের পাবনা-সিরাজগঞ্জ অঞ্চলের পরিদর্শক আলাউদ্দিন বলেন, ভেজাল বিরোধী অভিযানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের ডাকা হলে আমরা তাদের সহযোগিতা করে থাকি। আলহাজ্ব ডা. আব্দুল বাছেদ খান জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিষাক্ত দুধ পান করলে মানব দেহে ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। ফরমালিন মেশানোর ফলে হেপাটোটক্সিকিটি বা লিভার রোগ, কিডনি রোগ, স্কিম মিল্ক পাউডারের ফলে মানবদেহে হাড়ের মধ্যকার দুরত্ব সৃষ্টি হতে পারে। এরফলে শরীরের পেছনের অংশে ব্যাথা অনুভব, চর্মরোগ, হজমে সমস্যা, পেটের পীড়াসহ নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
--------------
নিউজের লিঙ্ক

এই আমাদের সোনার দেশ !!!
১৭টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×