দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করার মত পর্যাপ্ত গ্যাস আমাদের নেই।
যেটুকু গ্যাস আবিষ্কৃত/অনাবিষ্কৃত অবস্থায় আছে এবং পাওয়ার সম্ভাবনা আছে তা যদি বাংলাদেশ শুধু নিজে ব্যবহার করে তবে সর্বোচ্চ ২০-২৫ বছরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।
আর যদি গ্যাসভিত্তিক সারাদেশে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় এবং নতুনগ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান না পাওয়া যায়, তবে আরো আগে শেষ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে ১৫ বছরের মাথায়ই হয়তো গ্যাস আমদানি করতে হতে পারে। তখন গ্যাস আমদানি তেমন কষ্টকর বা ক্ষতিকরও হবেনা। কারণ ততদিনে দেশীয় গ্যাস দেশে সঠিক ব্যবহারের ফলে প্রচুর শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে এবং দেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হওয়ার পথে অনেক এগিয়ে যাবে। দেশে নগদ অর্থের অভাব থাকবেনা।
কিন্তু সরকার যদি অন্ধভাবে অথবা কারো চাপের কাছে মাথা নত করে গ্যাস রপ্তানির আত্নঘাতি সিদ্ধান্ত নেয় তবে-
# আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই দেশের মজুদ শেষ হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
# দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং শিল্প-কারখানা চালু রাখতেও বিদেশ থেকে গ্যাস আমদানি করতে হবে।
# সম্ভবতঃ আরব জাহান থেকেই বাংলাদেশকে তরলীকৃত গ্যাস আমদানি করতে হবে।
# সমূদ্রবন্দরে তরলীকৃত গ্যাসকে আবার ব্যবহার উপযোগী গ্যাসীয় অবস্থায় রূপান্তরের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে।
# এর ফলে আমদানি অত্যন্ত ব্যয়বহুল হবে।
# বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বহুগুণ বেড়ে যাবে। (বর্তমানে ইউনিটমূল্য বর্ধিত হয়েছে)
# দেশের সকল শিল্প-কারখানা যেহেতু বিদ্যুৎ নির্ভর, তাই পণ্যদ্রব্যের উৎপাদন ব্যয় অনেকগুণ বাড়বে। দাম হবে (হয়ে আছে) আকাশচুম্বী। জনগণের ক্রয়সীমার বাইরে থাকায় মুক্তবাজার ও বিশ্বায়নের ফলে সয়লাব ভারতের পণ্যে ঝুকে পড়বে জনগণ। বাংলাদেশের তুলনায় সস্তা ভারতীয় দ্রব্য হবে আপামর জনসাধারণের ব্যবহার্য দ্রব্য। দেশীয় শিল্প-কারখানা হয়ে যাবে ধ্বংস। দেশ চিরদিনের মত পরনির্ভরশীল হয়ে রবে।
আরোও যেসব দূর্গতি রয়েছে সেগুলো যে-কেউই ভেবে বের করে নিতে পারে।..(সরকার ব্যতীত!!!)
ড. মোহাম্মদ আব্দুর রবের "বাংলাদেশঃ ভূগোল ভূ-রাজনীতি ও পরিবেশ" থেকে সংকলিত।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ২:২৮