১৯৫১ সালের কথা । আমেরিকায় দাস প্রধা বিলুপ্ত হয়েছে অনেক আগে কিন্তু বর্ণবাদ আর শ্রেণীবৈষম্যের অভিশাপ থেকে বের হতে পারেনি দেশটি । অনেকে এই অভিশাপ থেকে বের হওয়ার রাস্তা খুঁজতে চেষ্টা করেন কমিউনিজমের মধ্যে । এরকম একজন ছিলেন ইন্ডিয়ানার জিম থারমেন জোন্স ।তার মা আইরিশ বংশদ্ভুত লিনেট্টা জোন্স এর বিশ্বাস ছিল তিনি একজন নবীকে জন্ম দিয়েছেন । তার বিশ্বাস এর পেছনে কারন ছিল , জিম শৈশবে অন্য বাচ্চাদের মতো ছিল না । তার অবসেশন ছিল ধর্মীয় কর্মকান্ডের প্রতি । ছোট বেলায় জিম আশেপাশের প্রাণীদের মৃত্যুর পর এগুলোর শেষকৃত্য সম্পাদন করতেন নিজে । বড় হওয়ার সাথে ধর্মের প্রতি তার অবসেশনও বারতে থাকে ।সে স্বপ্ন দেখতে থাকে মানুষের মধ্যে বিভেদ কমিয়ে এনে একটি সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার । ক্রমেই সে কার্ল মার্ক্স , লেলিন , গান্ধি , হিটলার এর জীবনী পাঠ করে তাদের আদর্শ থেকে একটু একটু নিজের মধ্যে ধারন করে । কিন্তু তা ছিল বিভিন্ন আদর্শের জগাখিচুড়ি । যাই হোক শেষ পর্যন্ত কমিউনিজমকেই জিম তার একক আদর্শ হিসাবে ধারন করতে পেরেছিলেন । কিন্তু আমেরিকায় তখন কমিউনিস্টদের সন্দেহের চোখে দেখা হত । জিম জোন্স এর কমিউনিজমপ্রীতি তাকে এফ.বি.আই. এর সন্দেহের তালিকায় নিয়ে আসে । কয়েকবার সে এফ.বি.আই. এর জিজ্ঞাসাবাদের শিকার হলেও নিজের আদর্শিক অবস্থান থেকে বিচ্যুত হয়না । কিন্তু এফ শেষ পর্যন্ত এফ.বি.আই. তার পরিবারকে টার্গেট করে ও তার মাকে হয়রানি শুরু করে । অন্যদিকে সামাজিক ক্ষেত্রে কমিউনিস্টদের ব্যাপক হয়রানির মাধ্যমে কমিউনিস্ট আন্দোলনকে অনেক দুর্বল করে ফেলা হয় । এই অবস্থায় হতাশ জিম চার্চ এর যাজক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । কিন্তু সেখানে তিনি বর্ণবাদের ব্যাপক বৈষম্য দেখে বিচলিত হন এবং একটি আলাদা চার্চ গঠনে সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন । তিনি চার্চ এর নামকরন করেন “পিপল টেম্পল ক্রিশ্চিয়ান চার্চ ফুল গসপেল” । পৃথক চার্চ গঠনের কারন হিসাবে তিনি উল্লেখ করেন প্রচলিত চার্চে কালোদের প্রতি সাদা যাজকদের বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি । কালোদের সামাজিক ক্ষেত্রে সমান অধিকার আদায়ের লক্ষে তিনি ছিলেন সোচ্চার ।বর্ণবাদ সংক্রান্ত একটি ঘটনা পুরো সমাজকে আলোড়িত করে । তখন আমেরিকার হাসপাতালগুলোতে কালোদের জন্য ছিল পৃথক ওয়ার্ড । শেতাঙ্গদের চিকিতসা ছিল কৃষ্ণাঙ্গদের চেয়ে আলাদা ও উন্নত । অসুস্থতার কারনে জিম জোন্সকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় কিন্তু তিনি শ্বেতাঙ্গ ওয়ার্ডে অবস্থানের করেন এবং কৃষ্ণাঙ্গদের চিকিতসার মান শেতাঙ্গদের সমান করার জন্য হাসপাতাল কতৃপক্ষের কাছে দাবি করেন । তার এরূপ দাবি হাসপাতাল তথা পুরো ইন্ডিয়ানা রাজ্য সরকারকে বিব্রত করে । এভাবে তার কর্মকান্ড ও তার প্রবর্তিত নতুন চার্চ এর প্রতি সঙ্গত কারনে আমেরিকার কালো ও প্রগতিশীলদের সমর্থন বাড়তে থাকে এবং এক সময় তিনি পুরো আমেরিকায় ব্যাপক জনসমর্থন লাভ করেন । ইন্ডিয়ানাপোলিসের মেয়র চার্লস বসওয়েল তাকে মানবাধিকার বিষয়ক পরিচালকের দায়িত্ব প্রদান করেন । কিন্তু তার বিপক্ষ শক্তি ছিল রিপাবলিকান রাজনীতিক ও মিডিয়া । মিডিয়া তাকে কমিউনিস্ট হিসাবে আখ্যায়িত করে প্রোপাগান্ডা চালাতে থাকে । কিন্তু অবিচল জিম জোন্স একটি কান্ড ঘটিয়ে ফেলেন । তিনি আমেরিকানদের মধ্যে প্রথম হিসাবে একজন কালো আফ্রিকান আমেরিকান শিশুকে দত্তক নেন । তার দত্তক নেওয়া অন্য শিশুদের মধ্যে ছিল কোরিয়ান , ভারতীয় , ন্যাটিভ আমেরিকান এবং ককেশীয় সাদা শিশু । তার এই অদ্ভুত মানবিক পরিবারটি পুরো আমেরিকায় রংধনু পরিবার হিসাবে বিখ্যাত ছিল ।
জিম জোন্সের বিশ্বাস ছিল কমিউনিস্ট ও পুঁজিবাদীদের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা পারমানবিক যুদ্ধে রূপ নিবে এবং পুরো পৃথিবী এক সময় পারমানবিক বোমায় ধ্বংস হবে । তাই তিনি আমেরিকার বাইরে তার চার্চের জন্য একটি জায়গা খুঁজতে গিয়ে ব্রাজিলকে পছন্দ করেন । কিন্তু ব্রাজিলও বর্ণবাদের অভিশাপ থেকে মুক্ত ছিলনা । তিনি ব্রাজিলের বস্তিগুলোতে ঘুরে দরিদ্র ও হতাশাগ্রস্ত মানুষকে একত্রিত করা শুরু করেন । কিন্তু ১৯৬১ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত স্থায়ী এই প্রচেষ্টাকে অর্ধসমাপ্ত রেখেই তাকে আমেরিকায় ফিরে আসতে হয় । কারন তার শুরু করা মানবাধিকার আন্দোলন তাকে ছাড়া ইন্ডিয়ানায় মুখ থুবড়ে পড়ে । ইন্ডিয়ানায় ফিরে এসে তিনি লক্ষ করেন তার প্রতিস্ঠিত চার্চ এখন আর ইন্ডিয়ানায় নিরাপদ নয় । তিনি চার্চকে ক্যালিফোর্নিয়ায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন । ক্যালিফোর্নিয়ায় তিনি ধর্মীয় মতবাদ যেগুলো প্রবলভাবে বর্ণবাদী ও সাম্প্রদায়িক ছিল সেগুলো সংস্কারের জন্য আন্দোলন শুরু করেন , একটি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষকে সামনে রেখে । তার স্লোগানটি ছিল এরকম
“আপনি যদি পুঁজিবাদী আমেরিকা ,বর্ণবাদী আমেরিকা , ফ্যাসিস্ট আমেরিকায় জন্মগ্রহন করে থাকেন আপনি পাপ করেছেন । আপনাকে সমাজতান্ত্রিক আমেরিকায় পুনরায় জন্ম নিতে হবে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য ”।
তিনি বাইবেলের সেসব অংশকে অস্বীকার করেন যেখানে নারী ও কালো মানুষকে মানুষের স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে । বাইবেলের অমানবিক দৃষ্টিভঙ্গিকে তিনি ধ্বংস করার শপথ গ্রহন করেন । তার এই অবস্থানের কারনে আমেরিকার মিডিয়া তাকে নাস্তিক বলা শুরু করে ও চার্চ তার বিরুদ্ধে ধর্মদ্রোহিতার অভিযোগ আনে । কিন্তু সাধারন আমেরিকানদের কাছে তিনি ছিলেন অসাম্প্রাদায়িক নেতা হিসাবে ব্যাপক জনপ্রিয় । ১৯৭৫ সালে জিম জোন্স সানফ্রান্সিসকোতে তার প্রধান কার্যালয় স্থানান্তর করেন । এসময় তার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে জর্জ মসকোন সানফ্রান্সিসকোর মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয় । মেয়র তাকে সানফ্রান্সিসকোর গৃহায়ন বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেন । এসময় তিনি তদকালীন ডেমোক্রেট ও উদার রাজনীতিবিদদের কাছে আদর্শ ছিলেন । ইচ্ছা করলে তিনি উদার আমেরিকানদের আধ্যাত্নিক নেতা হিসাবে মহাত্না গান্ধীর মতো তার জীবন অতিবাহিত করতে পারতে ন । কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল একটি বৈষম্যহীন মডেল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এবং এই লক্ষ নিয়ে তিনি গায়ানা চলে আসেন । গায়ানার একটি দুর্গম অঞ্চলে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন একটি কৃষি সমবায় যার নাম ছিল “People Temple agricultural Project”. এই স্থানটি জনস্টাউন নামে অধিক বিখ্যাত ।দুঃখজনকভাবে সেখানে শুরু হয় পিপল টেম্পল আন্দোলনের পতন ।যারা আবেগের বশে আমেরিকা থেকে একটি ইউটোপিয়া প্রতিষ্ঠার জন্য জিম জোন্সের সাথে এসেছিলেন তাদের অধিকাংশই ছিল শহরবাসী মানুষ । শহরের যাবতীয় সুযোগ সুবিধা ছেড়ে দুর্গম অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক সমাজে বাস করা তাদের পক্ষে সম্ভব ছিলনা । তাদের মধ্যে অনেকেই আমেরিকায় ফিরে যায় । আমেরিকার মিডিয়া তখন প্রচার করে জিম জোন্স তার প্রতিষ্ঠিত জোন্সটাউনে কতিপয় আমেরিকান নাগরিকদের আদিম চাষীতে পরিণত করেছেন এবং তাদের সেখানে থাকতে বাধ্য করছেন অস্ত্রের মুখে । পিপল টেম্পলে তখন বব নামে এক টেম্পল সদস্য ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মারা যান । বব এর বাবা একে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে অভিহিত করেন ।তিনি বলেন বব জনস্টোন থেকে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে । আমেরিকার মিডিয়া এই ঘটনাকে লুফে নেয় ও ব্যাপক মিডিয়া কভারেজ দেয় । একসময় আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার এর উপর চাপ সৃষ্টি করা হয় পিপল টেম্পল বন্ধ করে দিয়ে আমেরিকানদের জনস্টোন থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য । কিন্তু ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্টে জিমি কার্টারের কাছে জিম জোন্সের বিরুদ্ধে আনিত এমন অভিযোগ ছিল অবিশ্বাস্য । কিন্তু কংগ্রেস সদস্য লিও জে রায়ান জনস্টোনে গিয়ে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন । কংগ্রেস ম্যান লিও জে রায়ান জনস্টোন যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে জিম জোন্স কে টেলিগ্রাফ করেন । জিম জোন্স এই শর্তে রাজি হয় যে, কংগ্রেসম্যান তার সাথে মিডিয়া ডেলিগেশন আনবেনা এবং পিপল টেম্পলের প্রধান কৌশুলী মার্ক লেনকে সাথে আনতে হবে এবং তার ভিজিট হবে নিরপেক্ষ । কিন্তু কংগ্রেসম্যান শর্ত ভঙ্গ করে একটি মিডিয়া ডেলিগেশনকে সফরসঙ্গী করেন । জিম জোন্স আবারও মিডিয়া কে সাথে আনার বিরোধীতা করেন ।কিন্তু তা অগ্রাহ্য করে , ১৯৭৮সালের ১৫ ই নভেম্বর কংগ্রেসম্যান লিও . জে . রায়ান গায়ানার রাজধানী জর্জটাউন ল্যান্ড করেন । কিন্তু গায়ানিজ কতৃপক্ষ সানফ্রান্সিসকো ক্রনিক্যাল এর সাংবাদিক রন জেভার্স কে এয়ারপোর্টে আটকে রাখে ভিসা ছাড়া গায়ানায় আসার অভিযোগে । রন জেভার্স ছিলেন পিপল টেম্পলের সবচেয়ে বড় সমালোচক যিনি বর্ণবাদের পক্ষে অসংখ্য কলাম লিখেছিলেন । ১৫ই নভেম্বর বিকেল পাঁচটায় ডেলিগেশনটি জনস্টাউনের কাছে কাইতুমা নামক বিমানবন্দরে এসে উপস্থিত হয় । ডেলিগেশনকে অভ্যর্থনা জানাতে আসেন স্বয়ং পিপল টেম্পলের প্রধান জিম জোন্স । তাদের সম্মানে জনস্টাউনে নৈশভোজ এবং নাচ গানের আয়োজন করা হয় । দিনের বেলা কংগ্রেসম্যান এবং তার সফরসঙ্গীরা স্থানীয় পিপল টেম্পল সদস্যদের সাক্ষাতকার নেয়া শুরু করেন যার মধ্যে ৬৮ শতাংশ ছিল কালো বর্ণের মানুষ । প্রায় ১৫ জন তাদের সাথে আমেরিকা ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন । সেদিনই তাদের ট্রাকে করে কাইতুমা বিমান বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় । কংগ্রেস সদস্য লিও রায়ান জোনস্টাউনে আর ও কিছু দিন থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন । কিন্তু স্থানীয় এক পিপল টেম্পলার ডন স্লাই কোন এক অজ্ঞাত কারনে ছুড়ি হাতে তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে । কিন্তু সামান্য আঘাত পেলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান এবং তার ডেলিগেশন নিয়ে পিপল টেম্পল ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন । আনুমানিক সাড়ে চারটায় তিনি তার ডেলিগেশন নিয়ে কাইতুমা বিমানবন্দরে চলে আসেন । কিন্তু ডেলিগেশনে আরও ১৫ জন যোগ হওয়ায় তাদের প্লেন এ সবার স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় তারা আর একটি বিমান চেয়ে মূল টাউয়ারে ম্যাসেজ পাঠায় । কিন্তু আর একটি প্লেন পৌছানোর আগেই আকস্মিকভাবে একদল লোক একটি ট্রাকে করে আসে । কোন রকম বাক্য বিনিময়ের আগেই তারা ডেলিগেশন সদস্যদের লক্ষ করে গুলি করা শুরু করে । প্রায় ৪ মিনিটের ব্রাশ ফায়ারে নিহত হয় কংগ্রেসম্যান লিও রায়ান সহ আরও চারজন সাংবাদিক। ডেলিগেশনের সহকারী প্রধান স্পেসিয়ারসহ আরও পাঁচজন মারাত্নকভাবে আহত হয় ।অক্ষত জীবিতরা তাদের প্লেন এর যোগাযোগ মডিউল এর মাধ্যমে হামলার খবর পৌছে দেয় জর্জটাউনে এবং সাহায্যের জন্য সৈন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করতে বলে । এদিকে বিকেল পাঁচটায় জিম জোন্স পিপল টেম্পলের সকল অধিবাসীদের একত্রিত হওয়ার জন্য বলেন । সবাই পিপল টেম্পল প্রাঙ্গনে একত্রিত হওয়ার পর জিম জোন্স সবার উদ্দেশ্য ভাষন দেন । তার ভাষনটি টেপ করা হয় । সেখানে তিনি সমম্ত টেম্পল বাসীকে যা বলেন তার সার সংক্ষেপ অনেকটা এমন ,
আমরা একটি ষড়যন্ত্রের শিকার । এখন প্যারাসুট দিয়ে আমেরিকান কমান্ডোরা নেমে আমাদেরকে হত্যা করবে, আমাদের শিশুদের হত্যা করবে এবং আমাদের স্বপ্নকে হত্যা করবে । তার আগে আমরা সম্মানের সাথে আত্নহত্যা করব এবং আমাদের এই জীবনদান হবে বিপ্লবী আত্নহত্যা ।
তার ভাষনের পর জনস্টাউনে ইতিহাসের অন্যতম এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয় । টেম্পলবাসীরা প্রত্যেকে তার শিশুকে সায়ানাইড পান করিয়ে হত্যা করে এবং তারপর নিজেরা সায়ানাইড পান করে আত্নহত্যা করে । পরের দিন গায়ানার সৈন্যরা জনস্টোনের পিপল টেম্পল এসে দেখতে পায় প্রায় ৯০৩ জন মানুষের লাশ । জিম জোন্সকে পাওয়া যায় একটি চেয়ারে বসা অবস্থায় । চেয়ারে বসে তিনি তার রিভলভার দিয়ে মাথায় গুলি করে আত্নহত্যা করেন । এভাবে পিপল টেম্পল অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে ।
জনস্টোনের বেঁচে যাওয়া তিনজন এর স্বাক্ষ এবং উদ্ধারকৃত টেপ থেকে জানা যায় জনস্টোনের গনআত্নহত্যার উদ্দেশ্য ছিল তাদের মৃত্যুর মাধ্যমে নিজেদের নির্দোষ প্রমান করা ও পিপল টেম্পলের আদর্শকে বাচিয়ে রাখা । কিন্তু আমেরিকার মিডিয়া পিপল টেম্পলকে একটি নাতসী ইহুদী ক্যাম্পের সাথে তুলনা করে । পিপল টেম্পলের গন আত্নহত্যাকে হত্যা হিসাবে চিত্রায়িত করা হয় । বলা হয় জনস্টোন অস্ত্রের মুখে সবাইকে আত্নহত্যা করতে বাধ্য করে এবং শেষে নিজের রিভলভার দিয়ে আত্নহত্যা করে । কিন্তু তারা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন এড়িয়ে যান । পিপল টেম্পলে যেখানে সামরিক কোন স্থাপনা ছিলনা সেখানে এতো অস্ত্র হঠাত কোন উতস থেকে আসতে পারে ? বা হত্যাকান্ডের পর ডেলিগেশন এর নিরপেক্ষ কোন ব্যাক্তি বাঁচতে না পারলেও পিপল টেম্পলের কট্টর বিরোধী দুই সদস্য সম্পূর্ন অক্ষত অবস্থায় কিভাবে বেঁচে রইলেন ?
তথ্যসূত্র :
১.উইকিপিডিয়া
২.ক্রাইম লাইব্রেরী
৩.transcript of recovered tape Q.799
৪.Another day of death –Time Magazine
৪.The johnstone institute