একটা ইঁদুর আর একটা বেড়াল।
দু'জনে খুব ভাব, অনেকদিন থেকেই একসাথে থাকে তারা। বেশ সুখেই ছিল, বন্ধু তো তাই কোন ঝগড়াঝাটি নাই, মারামারি নাই একেবারে গলায় গলায় ভাব যাকে বলে।
একদিন ইঁদুর এক গেরস্তের বাড়ি থেকে এক বয়াম ঘি চুরি করে নিয়ে এলো, বেড়ালকে দেখেই একগাল হেসে বললো "ভায়া সবচে ছোট মেয়েটার বিয়ের জন্য এক বয়াম ঘি আনলাম। তুমিই রেখে দাও, তবে সাবধান মুখটুখ দিও না।"
বেড়াল খুশি হয়ে বলে, 'কি যে বলো, আমানতে যখন রাখলে-আমি জেনে শুনে কি আর খেয়ানত করতে পারি?'
দিন যায়, একদিন বেড়াল বলে 'যাইরে ইঁদুর আমার বড় মেয়ের নাতি হবে, একটু দেখে আসি।'
ইদুর বললো, "একেবারে খালি হাতে যেযো না, জামাই বাড়ি বলে কথা"।
এ কথা শুনে বেড়াল করলো কি যাবার আগে চুপিচুপি বয়ামে মুখ ঢুকিয়ে একটু চেটে নিল।
বেড়াল ফিরলে ইদুর বললো "কি নাম রাখলে নাতির"?
বেড়াল বলে 'একচাটা'!
ইঁদুর ভাবে এ আবার কি নামরে বাবা!
কিছুদিন পরে
আরেকদিন বেড়াল বলে 'যাইরে ইঁদুর আমার মেঝ মেয়ের নাতি হবে, একটু দেখে আসি।'
ইদুর বললো, "আচ্ছা"
এবার যাবার আগে বেড়াল ঘিয়ের বয়ামের অর্ধেটা সাবার করে গেলো।
বেড়াল ফিরলে ইদুর বললো "কি গো বেড়াল বড় সে খুশি খুশি, তা কি নাম রাখলে নাতির"?
বেড়াল একগাল হেসে বলে 'আধাআধি'!
ইঁদুর অবাক হয়ে ভাবে এ আবার কি নাম, কি জানি হয়তো বেড়ালদের ঘরে এমনই নাম রাখার চল!
বেড়াল কিছু বলে না, শুধু মুচকি হাসে।
আরও কিছুদিন পরে
আবার বেড়াল একদিন হন্তদন্ত হয়ে এসে বলে 'যাইরে ইঁদুর আমার ছোট মেয়ের নাতি হবে, একটু দেখে আসি।'
ইদুর বললো, "যাও, ভালয় ভালয় ফিরে এসো"
এবার যাবার আগে বেড়াল বেড়াল পুরো ঘি এর বয়াম চেটেপুটে শেষ করে গেলো।
ফিরে আসার পরে ইঁদুর জানতে চাইলো, 'এবার কি হলো, নাতি?'
বেড়াল বলে 'হ্যাঁ'
ইঁদুর বললো 'মা-ছেলে ভাল আছে?'
বেড়াল বলে 'আছে'
ইঁদুর বলে 'ড়া কি নাম রাখলে গো নাতির?'
বেড়াল একগাল হেসে বলে চাঁছাপোঁছা'!
এইবার ইঁদুরের টনক নড়লো, সে একদৌড়ে গিয়ে দেখে, তাকের উপর ঘি-এর বয়াম ঠিক আছে, তবে-----
এক্কেবারেই খালি।
ইঁদুর রেগে বললো, 'লালচে বেড়াল, ছোঁচা বেড়াল, আমার ছোট মেয়ে ঘি কোথায় বল?
এই কথা বলে বেড়াল কে দিল এক লাথি।
লাথি খেয়ে বেড়ালও লাফিয়ে গেলো ইঁদুর কে ধরতে।
আর ইঁদুর দিল এক ছুট।
সেই থেকে দু'জনার ছুটোছুটি, ধাওয়া ধাওয়ি, দৌড়াদৌড়ি চলছেই তো চলছেই
সংকলিত