এক দেশে এক ছিল বেড়াল! একদিন চুরি করে ঘি-র বয়ামে মুখ দিতে গিয়ে বেচারার গলাটা গেল আটকে। বেড়াল হাস ফাস করে, আছাড়-বিছাড় করে, আর কত কি যে করে! শেষ কালে যদি-বা বয়ামটা ভাঙলো, বয়ামের কানা রইলো তার গলায় আটকে।
বেড়াল-গলায় তার বয়ামের কানা, মনের দু:খে বনে চলে গেল।
বনে গিয়ে দেখে কি! এক বাঘিনী মনের সুখে তার কাচ্চাবাচ্চা নিয়ে খেলছে।
বেড়াল-গলায় তার বয়ামের কানা, গিয়েই বাঘিনীকে লাগালো এক ধমক।
আর বাঘিনীতে গেলো চমকে, সে সাত জনমেও এমন অদ্ভুত বেড়াল দেখেছি!
বেড়াল বলে, জানিস? আমি এই বনের রাজা। আমার খাজনা দিয়েছিল?
বাঘিনী তার কিম্ভুত চেহারা দেখে, কথা শুনে ভীষন ভড়কে গেলো। কোনরকমে ঢোক গিলে বলে, 'বাঘ তো বাসায় নেই। আগে তিনি আসুন, তখন কথাবার্তা হবে।'
বেড়াল-গলায় তার বয়ামের কানা, বলল, ঠিক আছে। বলিস বনের রাজামশাই এসছিলেন! তাঁর খাজনা দিতে হবে।' এই কথা বলে চলে গেলো!
বাঘ ঘরে আসতে না আসতেই বাঘিনী হুমড়ি খেয়ে পড়লো, বললো 'কী, তুমি নাকি বনের রাজা! তুমি নাকি সবাই কে শাসন করে! এখন কি, হ্যাঁ? রাজা এসেছিলেন, তার খাজনা দিতে বলে গেছেন! তিনি আবার আসবেন।'
বাঘ তো সব শুনেটুনে রেগে আগুন! বাঘিনীকে বলে, "কে না কে এলো, আর তুমি বনের রানী তাই দেখে ভয়ে কাপছো! ছি ছি ছি। রাজা-ফাজা যেই আসুক, হাড় গুড়ো করে দেবো না!?"
এমন সময়ে সেই বেড়াল-গলায় যার বয়ামের কানা, এসে হাজির!
দেখেই বাঘ দেয় এক ধমক।
বেড়াল দেয় আরেক ধমক।
বাঘ দেয় এক হাঁক।
বেড়াল দেয় আর এক হাঁক।
শেষে রেগে-মেগে গরর-গরর করতে করতে বাঘ দিল এক লাফ।
বেড়াল-গলায় যার বয়ামের কানা, আগেভাগেই গাছের আড়ালে চলে গিয়েছিল। বাঘ দুই ডালের ফাঁকে পড়লো, গলা গেলো আটকে! এরপর গোঁ গোঁ করতে করতে মরেই গেলো!
তখন বেড়াল-গলায় যার বয়ামের কানা, এসে বাঘিনীকে বলে, "কিরে দেখেছিস? কে এই বনের রাজা এইবার বুঝলি? দে, এবার আমার খাজনাটা দে"।
বাঘিনী কোথায় খাজনা পাবে? মনের দু:খে সে কেঁদেই ফেললো!
বেড়াল-গলায় যার বয়ামের কানা, ধমক দিল একটা "কান্নাকাটি রেখে খাজনাটা দিয়ে বলছি। আর না হয় আমায় বিয়ে কর!"
কি আর করে বাঘিনী!
যার গলায় বয়ামের কানা, সেই বেড়ালের কথায় বাঘিনী রাজি হয়ে গেলো।
সংকলিত