বাঁশেরকেল্লার মহানায়ক শহীদ তিতুমীরের সময়কালীন প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত এই উপন্যাসটি। তিতুমীরের কেল্লা ও কেল্লা গড়ার আগে ও পরের পরিস্থিতির গল্পময় বর্ণনা রয়েছে এখানে। ডাউনলোড লিংক অখবা ডাউনলোড লিংক
..ভাই-বোনকে ধরে এনেছে যে লোকটি, সে বলল: এই দুই বিচ্ছুকে আমাদের ঘাটির পাশে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে দেখেছি।
বুড়ো বললেন : এরা কারা?
লোকটি বলল: নিশ্চয়-ই সাহেবদের চর। আমাদের পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে খোঁজ খবর জানার জন্য। নিজেদের মুরোদে কুলোচ্ছে না তো!
বুড়োর ভুরু কুঁচকে গেলো। বললেন : ইংরেজদের ধাড়ি ধাড়ি গোয়েন্দারা আমাদের পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে দুই নাবালককে! আমার মনে হয় তুমি ভুল করছ। বুড়ো তাদের লক্ষ করে বললেন: তোমাদের ভয়ের কারন নেই। মুখ দেখেই বুঝতে পারছি তোমাদের খুব ক্ষিদে পেয়েছে।
**
..আলেকজান্ডার গম্ভীর কণ্ঠে বলল: তোমরা রাজকার্যে বাঁধ সাধছ?
গোলাম মাসুম বললেন: আমরা এদেশের লোক। তিতুর লেঠেল।
আলেকজান্ডার বলল: তোমরা আত্মসমর্পন কর। রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করো না।
গোলাম মাসুম দৃঢ় কণ্ঠে বললেন: তোমরা উড়ে এসে জুড়ে বসেছো এই দেশে। তোমাদের আমরা রাজা মানিনে। আর আমরা এক আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে আত্মসমর্পন করিনা।
আলেকজান্ডার বরলো : তোমরা সরে দাঁড়াও, আমরা তোমাদের কিছু করবো না। শুধু তিতুমীরকে ধরিয়ে দাও।
গোলাম মাসুমের পাশেই ছিলো আব্দুল খালেক। সে গর্জে উঠল: জান থাকতে নয়।
গোলাম মাসুম বললেন: বরং তোমরা এদেশ থেকে পালাও।
আলেকজান্ডার অনেক কষ্টে ধৈর্য ধরে বললো : পথ ছাড়।
তিতুর দল গর্জে উঠল: আল্লাহু আকবর!!
আলেকজান্ডার ভয় দেখাতে গুলি ছুড়লো। সাহেবের দেখাদেখি আরো দুতিনজন সেপাই বন্দুকে আওয়াজ শুরু করল। তিতুর দলে তাৎক্ষণিক হুলস্থুল পড়লো কিন্তু মুহুর্ত পরই পাল্টা আক্রমনে বিমুঢ় হয়ে পড়লো আলেকজান্ডার।
হাতের বন্দুক হাতেই রইলো। ইট পাটকেল, পাকা বেল আর লাঠি বর্শার হামলায় দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করতে লাগলো তার সেপাইরা। ভূলুন্ঠিত হলো কয়েকজন। আলেকজান্ডার পরিস্থিতি বুঝে ঘোড়া ছুটালো পেছনে। মাথার মধ্যে ভোঁ-ভোঁ করছে আল্লাহুআকবার গর্জন! শুকনো এক খালে কাদায় পা আটকে গেলো তার ঘোড়ার।
আব্দুল খালেক সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো, ভয় নেই তোমার। তোমাকে মারবো না। দুর্বল অসহায় পেয়ে প্রবল শত্রুর গায়েও আমরা হাত তুলিনে। তোমার ঘোড়া নিয়ে চলে যাও। মনে রেখো, আমরা তোমাদের কবল থেকে এদেশকে মুক্ত করবো। আমাদের দেশ আমারা আমাদের মত করে পেতে চাই।
**
.. বাঁশের কেল্লার আঙিনায় একটা জলচৌকি পাতা। সেখানে বসে আছেন তিতুমীর..