শাহবাগের মোড়ে সকাল দশটায় যখন একাকী একজন যুবক হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে নিঃশ্চুপ শান্তভাবে দাঁড়াল।
ওর দাঁড়াবার ভঙ্গিটা কেউ খেয়ালই করেনি,
ওর চোখের জেদী দৃষ্টি কারো নজরেই পড়েনি।।
যদি নজরে পড়ত,
তাহলে বুঝতে পারত বিকেলের মধ্যেই শাহবাগে এক ঝড় উঠবে।
ওর হাতে প্ল্যাকার্ডের লেখাটা ঠিকমতো কেউ তখনো পড়েও দেখেনি,
পড়লে বুঝতে পারতো কী এক নেশা মাখা শব্দ দিয়ে ভয়ংকর স্লোগান লিখেছে যুবকটি।
দুপুরের মধ্যে যখন মানুষজন হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে পিঁপড়ের মতো নিঃশব্দে
যুবকটির পিছনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াতে শুরু করলো,
ঠিক তখনই প্ল্যাকার্ডের লেখার দিকে সবার নজর পড়ল।
একদল মানুষ সেই স্লোগান পড়ে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে চলে গেলো,
কিছু মানুষ গভীর ভাবনায় পড়ে বিড়বিড় করে সেই স্লোগান আওড়াতে আওড়াতে যার যার কাজে চলে গেল;
আরেকদল মানুষ সাদা কাগজে একই স্লোগান লিখে বুকের সাথে আঁকড়ে সেই যুবকের পিছনে এসে দাঁড়াল।
বিকেলের মধ্যেই অজস্র মানুষ যখন মুষ্টিবদ্ধ হাত উঁচিয়ে বিড়বিড় থেকে উচ্চস্বরে স্লোগান দিল
প্রচণ্ড এক ঝড় শুরু হলো তখনই।
যুবকটির প্ল্যাকার্ডের স্লোগানের দিকে যখন আমার নজর পড়ল
আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়লাম।
এক একটি নেশামাখা শব্দ দিয়ে সাজানো ভয়ংকর এই স্লোগান
না জানি আজকে আমাকে
এই নেশায় ডুবে যাওয়া ‘মানুষের ঝড়ের’ সাথে মিশিয়ে দেয়।
সকালবেলাই যুবকটির প্ল্যাকার্ডের স্লোগান পড়া উচিত ছিলো সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের।
“ বাঁচতে চাই!”
“ বাঁচতে চাই!”
“ বাঁচতে চাই!”
কতো সাধারণ অথচ নেশামাখা ভয়ংকর এই স্লোগান,
অবহেলা করা ঠিক হয়নি কারোরই।
যুবকটির দাঁড়াবার ভঙ্গিটা আর চোখের জেদী দৃষ্টি বলে দেয়,
ওর দাবি মানতেই হবে।
ওকে বাঁচতে দিতেই হবে,
তা না হলে ও একদিন
এই সমাজের সবার সর্বনাশ করে ছাড়বে,
এমন কী সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষেরও।
——————-
র শি দ হা রু ন
২১/০৯/২০২২
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১:১৮